সস্ত্রীক সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন ও মো. আবদুল ওদুদ এবং আরেক সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজমসহ ১০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
আরও যারা নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন তারা হলেন- নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রী তারিন হোসেন, ওদুদের স্ত্রী মর্জিনা ওদুদ, প্রিমিয়ার প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির চেয়ারম্যান মঈন ইকবাল, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউসুফ আলীসহ চারজন।
বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া এ আদেশ দেন।
দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম ও মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। শুনানি শেষে বিচারক তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন।
স্ত্রীসহ সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরী ও মির্জা আজমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদনটি করেন দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন।
আবেদনে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধানকালে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে এবং সস্ত্রীক নিক্সন চৌধুরী গোপনে দেশ ছাড়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা পালিয়ে গেলে অনুসন্ধানে বাধা তৈরি হতে পার। যে কারণে তাদের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন।
মির্জা আজমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদনে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে দেশে-বিদেশে শত শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এজন্য তিন সদস্যের অনুসন্ধান দল অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে।
মির্জা আজম ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন বলে তথ্য থাকায় অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন বলে আবেদনে তুলে ধরা হয়।
সাবেক সংসদ সদস্য ওদুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক উপপরিচালক রেজাউল করিম। তার বিরুদ্ধেও অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে অনুসন্ধান কাজ চলছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞার কথা আবেদনে তুলে ধরা হয়।
মঈন ইকবালের বিষয়ে আবেদনটি করেন দুদকের উপপরিচালক সৈয়দ আতাউল কবির।
এতে বলা হয়, প্রিমিয়ার প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মঈন ইকবালের বিরুদ্ধে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে ২৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন বলে তথ্য থাকায় নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন।
ডিআইজি শাহজাহানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদনটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মমিন মিয়া।
এ আবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি, নিরপরাধ ব্যবসায়ীদের মামলা দেওয়ার হুমকি দিয়ে হয়রানি ও অবৈধভাবে শতকোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। তার দেশ ছাড়ার আশঙ্কা কায় অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন।