শেয়ার বাজারে বিভিন্ন সময়ে কীভাবে কারসাজি হয়েছে, কারসাজির সঙ্গে জড়িত চক্রের তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। এতে নাম এসেছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নাম।
সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক তদন্ত প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে কারসাজির অভিযোগ ওঠে মোনার্ক হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সাদিয়া হাসানের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের দামে বড় ধরনের উত্থানের সময় ব্যাংকটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার কেনাবেচার সঙ্গে ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জড়িত ছিল বলে ডিএসইর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। জড়িতদের মধ্যে রয়েছে আবুল খায়ের হিরো, তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, বাবা আবুল কালাম মাতবর, বোন কনিকা আফরোজ; তার সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠান ক্যান্ডেলস্টোন ইনভেস্টমেন্টস পার্টনার্স; বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান; শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানি জেনেক্স ইনফোসিস, ফরচুন শুজ ও সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস; আবু নাসের দুলাল, খোরশেদ আলম এবং সানোয়ার খান। এর মধ্যে আবুল খায়ের হিরো, আবুল কালাম মাতবর, খোরশেদ আলমের একাধিক বিও হিসাব ব্যবহার করা হয়।
জানা গেছে, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, জেনেক্স ইনফোসিস, ফরচুন শুজ ও সোনালী পেপারের নামে শেয়ার কেনাবেচার কাজটি তদারকি করেছিলেন হিরো।
ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের ১৫ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের দাম ১২ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে ২০ টাকা ১০ পয়সা হয়েছে, শতাংশের হিসাবে বেড়েছে ৫৯ দশমিক ৬২ শতাংশ।
তদন্তে ডিএসই দেখা যায়, আবুল খায়ের হিরোর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান (ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের ক্লায়েন্ট কোড # ৩৮৯৮) এ সময়ের মধ্যে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের শীর্ষ ক্রেতা ছিলেন। তিনি হিরোর স্ত্রী এবং মোনার্ক হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
এ ছাড়াও মো. আবুল খায়ের হিরো সেই সময় (অগ্রণী ইক্যুয়িটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ক্লায়েন্ট কোড # এবিএম ৬৪৫) থেকে ব্যাংকটির দ্বিতীয় শীর্ষ ক্রেতা ছিলেন। এ ছাড়াও হিরোর বাবা আবুল কালাম মাতবর (ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজের ক্লায়েন্ট কোড ৯১৬৬) এবং হিরোর বোন কনিকা আফরোজ ওয়ান ব্যাংকের প্রধান ক্রেতা ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বাজারের শৃঙ্খলা ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারও বিরুদ্ধে কারসাজির তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে আইন মেনে তা নিষ্পত্তি করা হয়। এ ধরনের ব্যবস্থা ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।