সিফাত মেহেদী মুন্না, কক্সবাজারঃ ক’দিন ধরে জাঁকিয়ে বসেছে শীত। জানুয়ারি মাসে শীতের প্রকোপ বেশিই থাকে। দেশে আরও কিছুদিন শীত থাকবে। শীতের ঠান্ডা হাওয়া আমাদের দুয়ারে ভালোই আঘাত করছে।
রাতে কম্বল আর নকশিকাঁথা ব্যবহার করে অনেকে আরাম-আয়েশে ঘুমাচ্ছে। একটু খেয়াল করলে আমরা দেখব চারপাশে অনেক প্রতিবেশী আছে, যারা শীতে কষ্ট পাচ্ছে।
ফুটপাতে অসংখ্য মানুষ শীতের থাবায় জর্জরিত। রাস্তার উপর শুয়ে থাকা শিশুটি শীতে কাতরাচ্ছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ছোট ছোট শিশু ঘুমাতে পারছে না। এসব এলাকায় দেখা যায় বয়োবৃদ্ধ মানুষ আর ছোট শিশুরা প্রচণ্ডভাবে কাঁপছে। অনেক পাহাড়ি শিশু ও বৃদ্ধ খুব কষ্টের মধ্যে আছে। এই তীব্র শীতে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যখন খালি গায়ে দেখি তখন খুব কষ্ট হয়।
অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোর মধ্যে আত্মতৃপ্তি আছে। আশার কথা, “স্বপ্নতরী সেচ্ছাসেবী সংগঠন কক্সবাজার”এখন শীতার্ত মানুষের জন্য কাজ করছে। তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আসুন, আমরা এখন থেকে পরিকল্পনা করি কীভাবে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়। আসুন, আমরা মানুষকে ভালোবাসি। মানুষকে ভালোবাসার ভেতরে আনন্দ আছে।
যেসব অসহায় মানুষ শীতে কষ্ট পাচ্ছে, তাদের পাশে থাকাটাই মানবতা। দরিদ্র মানুষের শীতের সময় খুব কষ্ট। অল্প আয়ের মানুষের দুর্ভোগও বাড়তে শুরু করেছে।
পর্যাপ্ত বস্ত্রের অভাবে অসহায় মানুষ রাতে ঘুমাতে পারছে না। আমরা যারা মোটামুটি চলতে পারছি, তারা এসব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। উঁচু স্তরের মানুষজন একটু মমতার দৃষ্টি দিলে অনেক মানুষ আরামে ঘুমাতে পারবেন।
রেলস্টেশন আর ফুটপাতে গেলে বোঝা যায় শীতার্ত মানুষ কতটা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। মানবতার সেবা করা আমাদের সবারই একান্তই কাম্য। প্রত্যেক ধর্মবর্ণ মানবতার সেবায় এগিয়ে আসুন। শীতার্ত মানুষের অসহায় জীবনের কথা ভেবে তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। আমাদের মনে রাখতে হবে, শুধু নিজে ভালো থাকলেই হবে না, আমার পাশের জনকেও ভালো থাকতে হবে।
একটি কথা সকলের স্মরণ রাখা উচিত আমরা আছি বলেই ‘আমি এর অস্তিত্ব টিকে আছে।
কোনো শিশু, কোনো বৃদ্ধ যাতে শীতে কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের সবারই উচিত সেবামূলক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া। আরেকজনের কষ্ট নিজের অন্তর দিয়ে অনুভব করতে হবে। আসুন, আমরা মানবতার জন্য কাজ করি।
আমি নই আমরা
মানবতার সেবা!
স্বপ্নতরী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন,
শীতার্ত মানুষের মাঝে
শীতবস্ত্র বিতরণ।
এই শীতে অনেক মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার শিশু ও বৃদ্ধ। শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, আবার অনেকে পারিবারিকভাবে চিকিৎসা নিচ্ছে। তা ছাড়া খোলা আকাশের নিচে বসবাসকারী এবং নারী, শিশু ও বৃদ্ধের কষ্টের শেষ নেই। তারা শীতের কষ্টে সারারাত আগুন জ্বালিয়ে কাটায়। শীতের কারণে তাদের চোখের ঘুম যেন হারাম হয়ে গেছে।
খোলা আকাশের নিচে হাজার হাজার মানুষের বসবাস। এদের বাড়িঘর নেই; যেখানে রাত সেখানেই কাত হয়ে শুয়ে থাকেন। এরা ঠিকানাহীন মানুষ।
আজ আমাদের সকলের কাছে এক নতুন বছরের উচ্ছ্বাস নিয়ে সকলে যখন আনন্দে আত্নহারা হয়ে আছি। মানুষজন আকাশে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকার বাজি ফাটিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছে। সেখানে কিছু শীতার্ত মানুষ শীতবস্ত্রহীন কষ্টের জীবন অতিবাহিত করছে।মুক্তাগাছার মতো আমরা সকলেই তাদেরকে মুক্ত করে ভুলে গেছি। মনে হয় যেন আমাদের দায়িত্ব ও সেবার দিক থেকে যখন অনেকেই ভুলে গেছে এই শীতার্ত মানুষদের। কক্সবাজারের অন্যতম সামাজিক সংগঠন স্বপ্নতরী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
২০২২ কে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে, সমাজে অবহেলিত গরীব, অসহায়, তাদের প্রতি আমাদের সাহায্যের হাত বাড়ানো একান্তই কতর্ব্য।অর্থ দিয়ে সম্ভব না হয়, বুদ্ধি শ্রম দিয়ে তাদের পাশে দাড়ায় তাদের মুখে ও হাসি ফুঁটুক। অবশেষে একটাই বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দিতে চাই আমি আপনি সবাই এক হয়ে তাদের পাশে দাড়ায়, আসুন আমরা এক হই সমাজের জন্য দেশের জন্য কাজ করি।
প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরও ২০২২ কে বিদায় জানিয়ে মানবিক কাজের মাধ্যমে নতুন বছর ২০২৩কে স্বাগত জানাতে স্বপ্নতরীর এই ভিন্ন ধর্মী আয়োজন। শহরের ঘোনা পাড়া, গোলদিগীর পাড়, বার্মিজ মার্কেট, বাজার ঘাটা, জেলা প্রশাসনের কার্যালয় সংলগ্ন গলি, নতুন বাহারছড়া, হলিডে মোড়, লাবনী বীচ,সুগন্ধা বীচ, কলাতলীর মোড়, বাসটার্মিল, লিংকরোড়, বিজিবি ক্যাম্প, আলির জাহাল, পিটিস্কুল, কালুর দোকান সহ শহরের প্রতিটা জায়গায় সুবিধাবঞ্চিত শীতার্ত মানুষ, পথশিশুদের মাঝে উক্ত শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। আমরা “স্বপ্নতরী সেচ্ছাসেবী সংগঠন কক্সবাজার ” এর কিছু নীরব ও দায়িত্বশীল সেবক / যুদ্ধা শীতার্তদের মাঝে শীত নিবারনের জন্য কম্বল ও পথশিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের লক্ষ নিয়ে এই কন কনে শীতের মাঝে রাস্তায় হেটে হেটে প্রয়োজনীয় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণে এক মহৎ কাজের সূচনা দিয়ে আমাদের নতুন বছরের যাত্রা শুরু করি।
আমরা” স্বপ্নতরী সেচ্ছাসেবী সংগঠন” এর সেবকগন এই মহৎ কাজে যুক্ত হতে পেরে ও নতুন বছরে শীতার্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে আমরা সকলে সত্যি খুবই আনন্দিত।
স্বপ্নতরী সংগঠনের কো-এডমিন সোহানুর রহমান আসিফ জানান, স্বপ্নতরী সেচ্ছাসেবী সংগঠন এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে পথ শিশু, অসহায়,দারিদ্র্য মানুষদের নিয়ে কাজ করা এবং এর পাশাপাশি বিভিন্ন মানবিক এবং সামাজিক কার্যক পরিচালনা করা হয়।আমাদের শীতবস্ত্র অনুষ্ঠানে ২০২২ কে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে শিশু, অসহায়, এবং ভারসাম্যহীন মানুষ এই কনকনে শীতের মাধ্যমে দিন-রাত্রি করেছেন। আমাদের স্বপ্নতরী সেচ্ছাসেবী সংগঠন এর সকল ত্যাগী সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই, তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমাদের এই অনুষ্ঠানটি সফল হয়েছে।