শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন- রুমি হলেন মহান মানবতাবাদী ও জগতশ্রেষ্ঠ একজন আধ্যাত্মিক কবি ও দার্শনিক। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক রুমি সম্মেলন ‘ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, রুমি হলেন মহান মানবতাবাদী ও জগতশ্রেষ্ঠ একজন আধ্যাত্মিক কবি ও দার্শনিকৃ; তাঁকে বলা হয় ‘দ্য মেসেঞ্জার অফ লাভ অ্যান্ড উইজডম’ অর্থাৎ প্রেম ও প্রজ্ঞার বার্তাবাহক। খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকে চরম অস্থির ও অশান্ত সমাজে মানুষের প্রতি মানুষের দরদ ও দায়বদ্ধতা, মমত্ববোধ আর ভালোবাসার অনুপম সৌধের ওপর প্রেমের জয়গান গেয়ে যিনি শান্তিপিপাসু মানুষের জন্য এক ব্যতিক্রমী দর্শন প্রবর্তন করেন- তিনিই হলেন জালালুদ্দিন রুমি।
শিক্ষামন্ত্রীে আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধের যে অনুপম সৌধ নির্মাণ করে গেছেন, বাংলার রুমি সৈয়দ আহমদুল হক তাঁর দীর্ঘ জীবনের নিরলস গবেষণা, সাহিত্য-রচনা ও নির্মোহ সাধনার আলোকে সেই সৌধটির একাডেমিক ডিসকোর্স প্রণয়নে পারঙ্গমতা দেখিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে যদি জালালুদ্দিন রুমির মানবতাবাদী প্রেম-দর্শন ও বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনার আলোকে ধর্মীয় সম্প্রীতির এক নিরাপদ ও শান্তিময় জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে হয় তাহলে বাংলার রুমির সেই একাডেমিক ডিসকোর্সকে অবলম্বন ও কার্যকর করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
ঢাবির ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ এবং আল্লামা রুমি সোসাইটি বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ড. দীপু মনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
এসময় ঢাবি উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, জালাল উদ্দিন রুমি ছিলেন প্রেম, সম্প্রীতি ও প্রজ্ঞার কবি। তিনি তাঁর সাহিত্য-কর্মের মাধ্যমে মানবতাবাদী দর্শন প্রচার করেছেন। এই আধ্যাত্মিক কবি, ইসলামী ব্যক্তিত্ব এবং সুফী সাধক তাঁর লেখনীর মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক, মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে যে অনন্য অবদান রেখেছেন তা বিশ্ববাসীর কাছে আজও সমাদৃত। ঢাবির শতবর্ষপূর্তি এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে এই সম্মেলন আয়োজন করার জন্য উপাচার্য ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ এবং আল্লামা রুমি সোসাইটিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আল্লামা রুমি সোসাইটি বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ রেজাউল করিম, সোসাইটির উপদেষ্টা সৈয়দ মাহমুদুল হক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ অধ্যাপক ড. অমিত দে এবং সম্মেলন আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান।