ডেস্ক রিপোর্ট: রাজশাহী কলেজ সায়েন্স ক্লাবের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী ৮ম ন্যাশনাল সায়েন্স ফেস্ট–২০২৫। ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী কলেজ মাঠে আয়োজিত হয়েছে এই খুদে বিজ্ঞানীদের মিলনমেলা।
মেলায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের খুদে বিজ্ঞানীরা মোট ৪২টি স্টলে নিজেদের উদ্ভাবনী প্রকল্প উপস্থাপন করেন। এসব প্রকল্পের মধ্যে যান্ত্রিক যানজট নিরসন, ভুমিকম্প সেন্সর, সবুজ বিপ্লব, বন্ধুপূর্ণ ইকো পুনর্ব্যবহারযোগ্য শহর, উচ্চ ইলেক্ট্রিসিটির মাধ্যমে খাদ্য সংরক্ষণ প্রকল্প ইত্যাদি অন্যতম।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় কেউ এসেছেন শিক্ষকের হাত ধরে, কেউ বা মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে, আবার অনেকে বন্ধুদের সঙ্গেও এসেছেন। কেউ সঙ্গে নিয়ে এসেছে তার উদ্ভাবনী প্রকল্প, কারও বগলে পোস্টার আবার কেউ কেউ উপস্থাপন করবেন বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ। স্কুল-কলেজের খুদে বিজ্ঞানীদের কত–কী যে আবিষ্কার!
রাজশাহী কলেজের একটি স্টলে গিয়ে দেখা যায়, উচ্চ ইলেক্ট্রিসিটির মাধ্যমে খাদ্য সংরক্ষণের একটি মডেল। যার বিশেষত্ব হলো উচ্চ ইলেক্ট্রিসিটি ব্যবহারের মাধ্যমে শক্তির খরচ কমিয়ে লাভজনকভাবে খাদ্য সংরক্ষণ। উদ্ভাবনী খুদে বিজ্ঞানীরা জানান, এর মাধ্যমে প্রতি কেজি খাদ্য সংরক্ষণে ব্যয় হবে ৭৫ পয়সার ইলেক্ট্রিসিটি এবং এর মাধ্যমে খাদ্যের গুনগত মানের পরিবর্তন ছাড়াই খাদ্য সংরক্ষণ করা সম্ভব।
পাশেই সরকারি প্রমথনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বায়োপ্লাস্টিকের মডেল। যা পরিবেশ বান্ধব এবং দীর্ঘ মেয়াদী না হওয়ায় পরিবেশ ও জীবকুলের জন্য ক্ষতিকর নয়। ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা বলেন, প্লাস্টিক যেখানে মাটিতে সম্পূর্ণ মিশতে প্রায় ৫০০ বছরের মতো সময় লাগে, সেখানে তাদের উদ্ভাবনী প্রকল্প বায়োপ্লাস্টিক ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে পঁচে যাবে। বায়োপ্লাস্টিকের একটি নমুনা তারা সকলের সামনে প্রদর্শনী হিসেবে তুলে ধরেন।
এছাড়াও সায়েন্স ক্লাবের উদ্যোগে দুইদিন ব্যাপী ডিবেটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যরা।
দুইদিনের বিজ্ঞান মেলার প্রদর্শনী শেষে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩ টায় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে রাজশাহী কলেজ অডিরিয়ামে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মোঃ নুরুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর ড.এ.কে.এম আজাহারুল ইসলাম।
আয়োজকরা জানান, এই ধরনের মেলা আগামী দিনে বিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধন ও এর অনন্যতা উপলব্ধি করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতাকে প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি করবে।