বাংলাদেশি তরুন গোলাম সারোয়ার (২৬) চাকরি নিয়ে মিসরে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে মিসরীয় তরুণী ডালিয়ার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক হয় দুজনের। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন ২০২০ সালে এবং এই জুটি পিরামিডের দেশ মিসরেই সারেন তাদের বিয়ের পর্ব । প্রথম বারের মত গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে আসেন মিসরীয় তরুণী ডালিয়া।
গোলাম সারোয়ার সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের গোলাম মাওলার ছেলে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি স্ত্রী ডালিয়াকে নিয়ে বাড়িতে আসেন। এরপর মিসরিয় বধূকে দেখার জন্য এলাকার শত শত মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় করেন।
২০১২ সালে মিসরে যান গোলাম সারোয়ার সেখানে গিয়ে একটি পোশাক তৈরির কারখানায় চাকরি নেন। মিসরে তিনি ডালিয়ার বাসার পাশেই থাকতেন। কিছুদিনের মধ্যেই ডালিয়ার ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই সুবাদে মাঝেমধ্যে ডালিয়ার বাসায় যাতায়াত করতেন তিনি। একপর্যায়ে ডালিয়াকে তাঁর ভালো লাগে। ডালিয়াও তাঁকে পছন্দ তার মনে স্থান দেন। সারোয়ার একপর্যায়ে ২০১৮ সালে ডালিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু ডালিয়ার পরিবারের কেউ এই বিয়েতে সম্মতি দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাঁদের বোঝানোর জন্য ডালিয়া অনেক চেষ্টা করেন এবং অবশেষে ডালিয়া তাঁর মা-বাবাকে রাজি করান। অবশেষে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে পারিবারিকভাবে তাঁদের বিয়ে হয়।
গোলাম সারোয়ার বলেন, গত বছর তাঁদের একটি সন্তানের জন্ম হলেও তিন দিনের মাথায় মারা যায়। বিয়ের পরপরই করোনা মহামারি শুরু হলে এত দিন বাড়িতে আসা সম্ভব হয়নি তাঁদের। তাই এখন এসেছেন। দুই মাসের জন্য তারা দেশে এসেছেন। ছুটি কাটিয়ে আবার মিসরে ফিরে যাবেন।
বিদেশি বধূ ডালিয়াকে দেখতে অনেকের সাথে পাশের বাড়ির গৃহিণী রোকেয়া বেগমও হাজির হয়েছেন। তিনি বলেন, বিদেশি তরুণীকে বধূ সেজে আসতে দেখে খুবই ভালো লাগছে। মেয়েটি দেখতেও অনেক সুন্দর।
মিসরিয় তরুণী ডালিয়ার কাছে বাংলাদেশি খাবার ও পরিবেশ খুবই ভালো লেগেছে। গোলাম সারোয়ারের বাবা গোলাম মাওলা বলেন, ছেলের বউ বাড়িতে আসায় পরিবারের সবাই আনন্দিত ও খুমি হয়েছে। পুত্রবধূ ডালিয়া বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারেন না। এক্ষেত্রে তাঁদের ছেলেই দোভাষীর কাজ করেন।
সারোয়ার ও ডালিয়া দম্পতির সুখ ও শান্তি কামনা করেন নবীপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জনাব বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, শুক্রবার সকালে তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্যকে পাঠিয়ে ভিনদেশী বধূর খোঁজখবর নিয়েছেন। শুনেছি তাঁকে দেখার জন্য আশপাশের অনেক মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় করছেন । তবে সবমিলিয়ে গ্রামের মানুষ এতে অনেক খুশি।