বাকৃবি প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিচার্স সিস্টেমের (বাউরেস) তিন দিনব্যাপী বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি কর্মশালা শুরু হয়েছে। অনুষ্ঠানে বাকৃবির ১৭ জন গবেষক এবং খামারি পর্যায়ে বিশেষ অবদান রাখায় ৬ জন উদ্যোক্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
শনিবার (১৮ মার্চ) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ঐ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়।
বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জয়নাল আবেদিনের সভাপতিত্বে এবং সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মুমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম। অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান এবং ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অরগানাইজেশনের (ফাউ) বাংলাদেশের সিনিয়র টেকনিক্যাল উপদেষ্টা ড. কাতারজিনা জাপলিকা।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ‘এইচ-ইনডেক্স’ অনুযায়ী বাকৃবির ১৭ জন গবেষককে সম্মানজনক ‘গ্লোবাল রিসার্চ ইমপ্যাক্ট রিকোগনাইজেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ স্কোরধারী ৫ জন এবং অনুষদভিত্তিক একজন করে সিনিয়র ও জুনিয়র মোট ১২ শিক্ষককে এ পুরস্কার দিয়েছে বাউরেস। ‘এইচ-ইনডেক্স’ এর সর্বোচ্চ স্কোরধারী ৫ জন হলেন মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো রফিকুল ইসলাম, একোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক, পশুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাশেম, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম লুৎফুল কবির এবং ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুজ্জামান।
এছাড়া কৃষি উদ্যোক্তা ও সফল সংগঠক হিসেবে স্মার্ট কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্যে বরিশালের রিতা ব্রহ্ম, মাৎস্য উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্যে ত্রিশালের এ. কে. এম. আবু নোমান, হর্টিকালচার ফসল উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্যে ঠাকুরগাঁও জেলার মো. শাকিল আহম্মেদ, বানিজ্যিক ফল উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্য রাজশাহীর মো. আমিনুল ইসলাম, দানাদার শস্য উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্যে ময়মনসিংহের মো. নজরুল ইসলাম এবং কৃষি উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্যে টাঙ্গাইলের মো. মনিরুজ্জামানকে বাউরেস থেকে ‘প্রফেসর ড. আশরাফ আলী খান স্মৃতি পুরষ্কার-২০২৩’ প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুল আলম বলেন, মাথাপিছু আয়ের দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ এখন এগিয়ে। তবে কৃষিতে আমাদের বর্তমান যে সাফল্য আমাদের তা ছাড়িয়ে যেতে হবে। মোট উৎপাদনের চেয়ে মাথাপিছু উৎপাদনের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে। মাথাপিছু উৎপাদন বেশি হলে তবেই আমরা রপ্তানির দিকে এগিয়ে যেতে পারব। কেবল নিজের দেশের চাহিদা বা প্রয়োজনের কথা না ভেবে রপ্তানিমুখী কৃষির প্রতি নজর দিতে হবে। বর্তমান সরকার কৃষির প্রতি সর্বদা সুদৃষ্টি রাখছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সার, বীজ সকলক্ষেত্রে সরকার পর্যাপ্ত ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে। এই ক্ষেত্রগুলোতেই গবেষণার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কৃষির যেকোনো সমস্যা এবং তার সঠিক সমাধান অনুসন্ধান কেবল গবেষণার মাধ্যমেই সম্ভব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশের কৃষি গবেষণায় অসামান্য অবদান রেখে চলেছে বাউরেস। এখানে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। গবেষণার উদ্দেশ্যে আসা তহবিলের পুরোটাই যথাযথভাবে গবেষণা কাজে ব্যবহার করা হয়। আমাদের গবেষকরা একবোরে মাঠ পর্যায়ে কৃষকের সাথে কাজ করে যাতে কৃষির সকল সুফল তাদের কাছে পৌঁছে যায়। এক্ষেত্রে গবেষণার জন্য আমি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাই। দেশ এবং বিদেশের সকল গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একযোগে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে আমরা সবসময় আগ্রহী।