কলেজ প্রতিনিধিঃ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নিহত হন সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী হাসান মেহেদী।তার এ অকাল মৃত্যুতে শোকাভিভূত হয়ে পড়ে গোটা সোহরাওয়ার্দী কলেজ। তার এই আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখতেই বদলে দেওয়া হয়েছে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অডিটরিয়ামের নাম। শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষর করা আবেদনপত্রটি উপাধ্যক্ষের নিকট জমা দেওয়া হয়। যার ফলে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অডিটোরিয়ামের বর্তমান নাম শহীদ সাংবাদিক হাসান মেহেদী অডিটরিয়াম। হাসান মেহেদী সোহরাওয়ার্দী কলেজের ডিগ্রির ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
অডিটোরিয়ামের নামকরণের বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই পাশে ছিলেন হাসান মেহেদী। প্রথমে আহ্বায়ক কমিটি, প্রথম কার্যকরী পরিষদ এবং বর্তমান কার্যকরী পরিষদেরও উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। আমাদের যেকোন ধরনের সুবিধা অসুবিধায় সবসময় পাশে পেয়েছিলাম তাকে। সাংবাদিকতায় তার পথচলা আমাদের অনুপ্রেরণা ও সাহস জুগিয়েছে। আশা করি তার দেখানো পথ অনুসরণ করেই এগিয়ে যাবে সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতি।
অডিটোরিয়ামের নামকরণ ও হাসান মেহেদী সর্ম্পকে জানতে দ্যা রাইজিং ক্যাম্পাসের কথা হয় অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আবিদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, আমাদের সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে মেহেদী ভাইয়ের এই আত্মত্যাগকে চিরস্মরণীয় করে রাখবার ক্ষেত্রে অডিটোরিয়ামের নামকরণের বিকল্প নেই। এরজন্যেই আজকের এই গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে স্বাক্ষর করেছি।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের আমিরুল ইসলাম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সোহরাওয়ার্দী কলেজের অডিটোরিয়াম নামকরণের মাধ্যমে অমর হয়ে থাকবে হাসান মেহেদী ভাইয়ের নাম। কলেজের অডিটোরিয়াম যতদিন থাকবে ততদিন থাকবে মেহেদী ভাইয়ের নাম। সাধারণ শিক্ষার্থীর পাশাপাশি নবাগত যেসব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আসবে তারাও জানবে মেহেদী ভাইয়ের আত্মত্যাগের কথা।
অডিটোরিয়ামের নামকরণের বিষয়ে উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, এটা আসলে শিক্ষার্থীদের আবেগের জায়গা। আমরাও চাই আমাদের কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীর এই আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকুক। তার সম্মানার্থে আমরাও চাই এ স্মৃতিকে ধরে রাখতে। আমাদের বর্তমান শিক্ষার্থীদেরও অনুপ্রানিত করুক তার এই আত্মত্যাগ।
প্রসঙ্গত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই বিকেলের দিকে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের কাছে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন তিনি। পরবর্তী সময়ে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে।