সাকিবুল ইসলাম, জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজ এর প্রধান ফটকের পাশের গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। বিশালাকৃতির কাঠ লিচু গাছটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে না জানিয়ে কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ঈমাম সালাউদ্দীনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
জানা যায়, বুধবার রাত নয়টার পর থেকে সারারাত ধরে গাছটি কাটা হয়। গত তিন পূর্বে নারিকেল গাছের ডালপালা কাটার অনুমতি নিয়ে কাঠ লিচু গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। মজবুত এ গাছটি কেটে টুকরো করে বিক্রির উপযোগী করে রাখা হয়েছে। গাছটির অল্প কিছু ডালপালা মসজিদের টিনের চালের ছাদের উপরে ছিলো। তবে অর্ধশত বছরের পুরনো গাছটি কোনো বড় ধরনের কারন ছাড়াই কেটে ফেলা হয়েছে বলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে সরজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম, বৃক্ষরোপণ ও কর্তন কমিটির সদস্যরা গাছ কাটার স্থানটি পরিদর্শন করেন এবং বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে অবগত করেন। এ নিয়ে এরই মধ্যে শিক্ষার্থী সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গাছ কাটার কাজ পাওয়া লিটন জানান, বড় হুজুর (সালাউদ্দীন) আমাকে গাছ কাটতে বলেছেন। উনি আমাকে দুই হাজার টাকা ও ডালপালা, লাকড়ি নিয়ে যেতে বলেছেন, বিনিময়ে গাছটি কেটে ফেলতে বলেন। আমি লোকজন নিয়ে গতকাল সারারাত ধরে গাছ কেটেছি। আজকে রাতে লাকডিগুলো নেয়ার সময় স্যারেরা আমাকে এসব নিয়ে যেতে নিষেধ করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ঈমাম সালাউদ্দীন বলেন, মসজিদের যেনো ক্ষতি না হয় সেজন্য আমি গাছটি কাটতে বলেছিলাম৷ সাবেক ট্রেজারার আমাকে বলেছিলেন গাছের জন্য কোনো সমস্যা হলে সেটা কেটে ফেলার জন্য৷ কাউকে না জানিয়ে গাছ কাটা আমার অন্যায় হয়েছে। আমি এ ঘটনায় ক্ষমাপ্রার্থী।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, আমি আজ সারাদিন সচিবালয়ে ছিলাম। এবিষয়ে আমি কিছু জানি না, আমাকে কেউ কিছু জানায়নি৷
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. মোস্তফা কামাল বলেন, শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের লিচু গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। এটার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুমোদন নিয়েছে কি না দেখতে হবে। যদি অনুমোদন না নিয়ে থাকে তাহলে এবিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মসজিদের কমিটির দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, আমি নারিকেল গাছের ডালপালা ছাটাইয়ের বিষয়ে অবগত ছিলাম। গাছ কাটার ব্যাপারে আমাকে জানানো হয়নি। আমি সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঈমামকে চার্চ করেছি এবং বিষয়টি উপাচার্যকে অবগত করেছি। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, আমি এস্টেট কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছি সরেজমিনে পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য। রিপোর্ট হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ কাটার অধিকার কারোর নেই। এখানে কমিটি আছে তাদের মতামত নিয়ে গাছ কাটতে হবে। সবকিছুই নিয়মের মধ্যে থেকে করতে হবে। শনিবার গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে তাই সেই জায়গা পরিষ্কার করার নির্দেশও দিয়েছি।