দুদকের করা দুই মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক গাড়িচালক মো. আবদুল মালেক ও তাঁর স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে মামলা দুটির আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হলো। আগামী ৭ জুন সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করা হয়েছে।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে করা মামলায় মালেক এবং অবৈধ সম্পদ ভোগদখলে রাখতে পরস্পরকে সহায়তার অভিযোগে করা মামলায় মালেক ও তাঁর স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬–এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান আজ বুধবার অভিযোগ গঠন করেন।
এই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ মোস্তফা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগ গঠনের শুনানিকালে আসামি মালেক ও তাঁর স্ত্রী নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন বলে আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে একটি মামলা এবং ও তাঁর স্ত্রী নার্গিসের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক।) এর সাত মাসের মাথায় অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করে দুদক। মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি আবদুল মালেক দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন। তিনি তাঁর জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত ১ কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ৮১০ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে তা ভোগদখলে রেখেছেন। অপর মামলায় মালেক ও তাঁর স্ত্রী নার্গিস বেগমকে আসামি করা হয়। এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, মালেক ও তাঁর স্ত্রী নার্গিস বেগম জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১ কোটি ১০ লাখ ৯২ হাজার ৫০ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ভোগদখলে রাখায় পরস্পরকে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেন।
আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলের গাড়িচালক ছিলেন। অষ্টম শ্রেণি পাস আবদুল মালেক ১৯৮২ সালে গাড়িচালক হিসেবে যোগ দেন। বছর চারেক পর অধিদপ্তরের পরিবহন পুলে যোগ দেন। গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত তিনি প্রেষণে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিবহন পুলের গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, জালটাকাসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন মালেক। তাঁর বিরুদ্ধে তুরাগ থানায় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। পরে দুটি ধারায় তাঁকে ১৫ বছর করে মোট ৩০ বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। মালেক এখন কারাগারে থাকলেও তাঁর স্ত্রী দুদকের মামলায় জামিনে আছেন।