ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ঢাবি ছাত্রদল। আজ মঙ্গলবার বিকাল ৪.৩০ মিনিটে উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে তাদের। ছাত্রদলের কর্মসূচি ঘোষণার পর একই দিন বিকাল ৩.০০টায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগও কর্মসূচি দিয়েছে। ছাত্র সংগঠন ২টি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদল জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকাল ৪.৩০ মিনিটে ঢাবি ছাত্রদলের নতুন কমিটি উপাচার্যের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করবে এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন যৌক্তিক বিষয় তাকে অবহিত করবেন।
অন্যদিকে ছাত্রলীগ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় মধুর ক্যান্টিন থেকে পদযাত্রা করে উপচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানাবিধ সংকট নিরসনের দাবিতে ঢাবি ছাত্রলীগ উপাচার্যকে স্মারকলিপি প্রদান করবে।
বৃহৎ দুটি ছাত্রসংগঠনের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণায় সকাল থেকে ঢাবি ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেয়া শুরু করেছে বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সোমবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি আবাসিক হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পরদিন সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে মহড়া দিতে নির্দশনা দেয়া হয়। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মারামারি হতে পারে, তাই সকল ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রাখার নির্দশনা দেয়া হয় ছাত্রলীগের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপগুলোতে। ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর সহয়তায় কয়েকটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে প্রায় একই ধরণের এরকম নির্দেশনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সঙ্গে ছাত্রদলের নতুন কমিটির সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা থাকলেও বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় শেষ পর্যন্ত তা আমরা উপাচার্য স্যারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করব। তার অনুমতি নিয়েই ছাত্রদল ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করবে। আমরাও ছাত্রলীগের নেতাদের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, নিষিদ্ধ কোনো সংগঠনের নেতা তো নই।
ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপি-জামায়াত শিক্ষার্থীদের লাশের ওপর ভর করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চায়। ছাত্রসমাজ এ বিষয়ে সচেতন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শিক্ষার সুন্দর ও স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সব সময় স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও মিছিল-সভা করেন। এটি তারই একটি সম্মিলিত বহিঃপ্রকাশ।
এর আগে গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে আসার কথা ছিলো ছাত্রদল নেতাদের। এ খবর পাওয়ার পরপরই তৎপর হয়ে উঠে ছাত্রলীগ। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথগুলোতে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা। পরে অবশ্য ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে না আসলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও সরে যান।
গত মে মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এর পর থেকে ছাত্রদল ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত৷ এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ১১ সেপ্টেম্বর খোরশেদ আলমকে সভাপতি ও আরিফুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটি হয়।