The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪

জুনিয়রদের ডাকতে গিয়ে কুবিতে সিনিয়র দুই পক্ষের সংঘর্ষ

কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১টায় হলটির ২০৯ নাম্বার কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম ব্যচের শিক্ষার্থীদের নিজেদের কক্ষে ডাকতে গিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় ১৫তম ব্যচের শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ১৫ তম ব্যচের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ২০৯ নাম্বার কক্ষে মিটিংয়ে বসে। মিটিংয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুইটি পক্ষে বিভক্ত ছিলো। একটি পক্ষের মধ্যে ছিলেন ইমতিয়াজ আহমেদ চিন্ময়, গোলাম দস্তগীর, হাসিব হাসান, রাজু মিয়াজি ও ফয়সাল। অপর পক্ষে ছিলেন আকাশ রাজবংশী, সোহাগ চৌধুরী, আশিকুর রহমান এবং সাদির আহমেদ। মিটিং চলাকালীন দুটি পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ফয়সাল সাদিরকে ঘুষি দেয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

সংঘর্ষ চলাকালীন হলে অন্যান্য সিনিয়র শিক্ষার্থীরা এসে তাদের থামায়। এবং দুই পক্ষকে মীমাংসার জন্য ৫০৭ নাম্বার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশের উপস্থিতিতে ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা তাদের মধ্যে মিটমাট করে দেয়।

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশ জানান, হলের জুনিয়ররা নিজেদের মধ্যে ব্যক্তিগত সমস্যার জেরে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়েছে। কেউ কাউকে আঘাত করেনি। হল সভাপতি হিসেবে আমি তাদের ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দেই।

মিটিংয়ে বাগবিতণ্ডা এবং সংঘর্ষের কারণ সম্পর্কে ২০৯ নাম্বার কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী সোহাগ চৌধুরী জানায়, আমরা ১৬ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদেরকে ২০৯ নাম্বার কক্ষে খিচুড়ি খাওয়ার জন্য ডাকি। কিন্তু তাদের ১০৯ নাম্বার রুমে আটকে ১৫তম আবর্তনের হাসিব, ফয়সাল, রাজু, চিন্ময়, দস্তগীর কথা বলতে থাকে। পরে আমরা তাদের ১০৯ নাম্বার কক্ষ থেকে আমাদের রুমে খাওয়ার জন্য ডেকে আনি। খাওয়ার পর আমরা ১৫তম আবর্তনের সবাই মিলে ২০৯ নাম্বার কক্ষে মিটিংয়ে বসি। মিটিংয়ে জুনিয়রদের রুম থেকে ডেকে আনা নিয়ে আমাদের উপর চড়াও হয় ফয়সাল, রাজু, চিন্ময়, হাসিব ও দস্তগীর। তর্কের এক পর্যায়ে ফয়সাল সাদিরকে ঘুষি দেয় এবং বাকিরাও আমাদের উপর হামলা করে। হামলায় আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে যখম হয়।

তবে আরেকটি পক্ষের শিক্ষার্থী হাসিব হাসান বলেন, আমরা ১০৯ নাম্বার কক্ষে ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে যাই এসময় সাদির, আকাশ এবং সোহাগ দরজায় লাথি দিয়ে ঢুকে, জুনিয়রদের সামনে আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। পরে আমরা তাদের রুমে মিটিয়ে বসলে দুর্ব্যবহারের কারণ জানতে চাই। তখন তারা ক্ষীপ্ত হয় এবং আমাদের মেরে বের করে দেয়।

এদিকে সংঘর্ষের বিষয়ে ১৪তম আবর্তনের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, ‘আজকের সংঘর্ষের ঘটনা এক দিনে ঘটেনি। অনেকদিন থেকে হলের ১৫তম আবর্তন শিক্ষার্থীরা দুই গ্রুপে বিভক্ত। আধিপত্য বিস্তারে ১৬ আবর্তনের জুনিয়রদের কাছে টানতে তাদের মধ্যে রেশারেশি হতে থাকে। যার দরুন আজকে এ সংঘর্ষ।

এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মিহির লাল ভৌমিক বলেন, ‘আমাদের কাছে কোন পক্ষ লিখিত কোন অভিযোগ দেয়নি। তবে আমি জানতে পেরেছি তারা বন্ধুদের মধ্যে বিষয়টি মিটমাট করে নিয়েছে। প্রশাসনিক জায়গা থেকে এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. রাজনীতি
  3. জুনিয়রদের ডাকতে গিয়ে কুবিতে সিনিয়র দুই পক্ষের সংঘর্ষ

জুনিয়রদের ডাকতে গিয়ে কুবিতে সিনিয়র দুই পক্ষের সংঘর্ষ

কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১টায় হলটির ২০৯ নাম্বার কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম ব্যচের শিক্ষার্থীদের নিজেদের কক্ষে ডাকতে গিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় ১৫তম ব্যচের শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ১৫ তম ব্যচের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ২০৯ নাম্বার কক্ষে মিটিংয়ে বসে। মিটিংয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুইটি পক্ষে বিভক্ত ছিলো। একটি পক্ষের মধ্যে ছিলেন ইমতিয়াজ আহমেদ চিন্ময়, গোলাম দস্তগীর, হাসিব হাসান, রাজু মিয়াজি ও ফয়সাল। অপর পক্ষে ছিলেন আকাশ রাজবংশী, সোহাগ চৌধুরী, আশিকুর রহমান এবং সাদির আহমেদ। মিটিং চলাকালীন দুটি পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ফয়সাল সাদিরকে ঘুষি দেয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

সংঘর্ষ চলাকালীন হলে অন্যান্য সিনিয়র শিক্ষার্থীরা এসে তাদের থামায়। এবং দুই পক্ষকে মীমাংসার জন্য ৫০৭ নাম্বার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশের উপস্থিতিতে ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা তাদের মধ্যে মিটমাট করে দেয়।

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশ জানান, হলের জুনিয়ররা নিজেদের মধ্যে ব্যক্তিগত সমস্যার জেরে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়েছে। কেউ কাউকে আঘাত করেনি। হল সভাপতি হিসেবে আমি তাদের ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দেই।

মিটিংয়ে বাগবিতণ্ডা এবং সংঘর্ষের কারণ সম্পর্কে ২০৯ নাম্বার কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী সোহাগ চৌধুরী জানায়, আমরা ১৬ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদেরকে ২০৯ নাম্বার কক্ষে খিচুড়ি খাওয়ার জন্য ডাকি। কিন্তু তাদের ১০৯ নাম্বার রুমে আটকে ১৫তম আবর্তনের হাসিব, ফয়সাল, রাজু, চিন্ময়, দস্তগীর কথা বলতে থাকে। পরে আমরা তাদের ১০৯ নাম্বার কক্ষ থেকে আমাদের রুমে খাওয়ার জন্য ডেকে আনি। খাওয়ার পর আমরা ১৫তম আবর্তনের সবাই মিলে ২০৯ নাম্বার কক্ষে মিটিংয়ে বসি। মিটিংয়ে জুনিয়রদের রুম থেকে ডেকে আনা নিয়ে আমাদের উপর চড়াও হয় ফয়সাল, রাজু, চিন্ময়, হাসিব ও দস্তগীর। তর্কের এক পর্যায়ে ফয়সাল সাদিরকে ঘুষি দেয় এবং বাকিরাও আমাদের উপর হামলা করে। হামলায় আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে যখম হয়।

তবে আরেকটি পক্ষের শিক্ষার্থী হাসিব হাসান বলেন, আমরা ১০৯ নাম্বার কক্ষে ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে যাই এসময় সাদির, আকাশ এবং সোহাগ দরজায় লাথি দিয়ে ঢুকে, জুনিয়রদের সামনে আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। পরে আমরা তাদের রুমে মিটিয়ে বসলে দুর্ব্যবহারের কারণ জানতে চাই। তখন তারা ক্ষীপ্ত হয় এবং আমাদের মেরে বের করে দেয়।

এদিকে সংঘর্ষের বিষয়ে ১৪তম আবর্তনের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, 'আজকের সংঘর্ষের ঘটনা এক দিনে ঘটেনি। অনেকদিন থেকে হলের ১৫তম আবর্তন শিক্ষার্থীরা দুই গ্রুপে বিভক্ত। আধিপত্য বিস্তারে ১৬ আবর্তনের জুনিয়রদের কাছে টানতে তাদের মধ্যে রেশারেশি হতে থাকে। যার দরুন আজকে এ সংঘর্ষ।

এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মিহির লাল ভৌমিক বলেন, 'আমাদের কাছে কোন পক্ষ লিখিত কোন অভিযোগ দেয়নি। তবে আমি জানতে পেরেছি তারা বন্ধুদের মধ্যে বিষয়টি মিটমাট করে নিয়েছে। প্রশাসনিক জায়গা থেকে এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।'

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন