জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৮ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তবে এদের মধ্যে একজনের নাম ভুলবশত তালিকাভুক্ত হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রাথমিক তদন্তে পরিচয় পাওয়া শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মামলার বাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিনের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের তালিকার ক্রম পরিবর্তন করে প্রধান আসামী অদলবদলের অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভোরে জড়িতদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলা নম্বর-৪৬/৬০৭। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পরের যোগসাজশে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেনকে।
অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃতরা হলেন, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাজন মিয়া, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাজু আহম্মদ, ইংরেজি বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মাহমুদুল হাসান রায়হান, ইতিহাস বিভাগের ৪৪ ব্যাচের জোবায়ের আহমেদ। ইংরেজি বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী হামিদুল্লাহ্ সালমান, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিকুজ্জামান আতিক, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহাগ মিয়া, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব ।তবে ইতিহাস বিভাগের ৪৪ ব্যাচের জোবায়ের আহমেদের নামটি ভুলবশতভাবে এসেছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ ও মামলা থেকে নাম তুলে নিবেন বলে জানান।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়, বহিষ্কৃতের তালিকায় শেষে থাকা বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান লাবিবকে মামলার তালিকায় প্রধান আসামী করা হয়েছে। অপরদিকে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাজন মিয়াকে মামলার শেষে রাখা হয়েছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভিডিও ফুটেজ দেখে তালিকা করে গণপিটুনিতে জড়িতদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী মামলা করতে নির্দেশ দিয়েছিলো । কিন্তু সুদীপ্ত শাহিন তালিকা ক্রম পরিবর্তন করে মামলার প্রধান আসামী পাল্টে দেয়।
এ বিষয়ে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে তালিকা দিয়ে মামলা করতে বলে । তালিকাটি টাইপিস্টদের কাছ থেকে সাজিয়ে নেওয়ার সময় তিনি ক্রম উলোটপালোট করে ফেলেন । আমার বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে ক্রম পরিবর্তন অভিযোগটি সঠিক নয়।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, সুদীপ্ত শাহিন আজ সকালে নিরাপত্তা অফিসের টাইপিস্ট হাসান ইমামকে তালিকা ক্রম পরিবর্তনের দায় নিয়ে লিখিত দিতে চাপ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে টাইপিস্ট দায় নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য প্রশাসন সোহেল আহমেদ বলেন, আমরা বহিস্কৃতদের তালিকা ক্রম অনুযায়ী মামলা করতে নির্দেশনা দিয়েছিলাম। তবে মামলায় কেন ক্রম পরিবর্তন করা হলো সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
You might also like