জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীরকে জোর করে পদত্যাগ করানোর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুর মোর্শেদ ভূঁইয়া কিছুদিন ধরেই কোষাধ্যক্ষকে পদত্যাগ করতে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। তবে শিক্ষার্থীদের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নেন কোষাধ্যক্ষ। ফেণী নোয়াখালী কুমিল্লা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা সংঘটিত হওয়ায় জবি শিক্ষার্থীদের ত্রাণ কার্যক্রমে দিন রাত পরিশ্রম করে গেছেন কোষাধ্যক্ষ। এছাড়া ৫ ই আগস্টের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কোষাধ্যক্ষকে কোন ধরনের সহযোগিতা না করার ঘোষণাও দেন সাদা দলের শিক্ষকেরা। তবে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে গত এক মাস যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়কে সচল রেখেছেন কোষাধ্যক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র হতে জানা যায় কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের একসময়ের প্রভাবশালী ছাত্রদল নেতা রইছ উদ্দিনের রয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের ভালো সম্পর্ক। জবির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য নানা মাধ্যমে জোর তদবির চালিয়েছিলেন তিনি। পরে ব্যর্থ হয়ে কোষাধ্যক্ষ পদ ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা যায়। একই সাথে ছাত্রদল নেতাদের কাছে ক্যম্পাস নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য কয়েকজন বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ছাত্রদলের দ্বারা ক্যম্পাস নিয়ন্ত্রণ টেন্ডার বানিজ্য সহ নানা অপকর্ম পরিচালনার জন্য কোষাধ্যক্ষ পদ ভাগিয়ে নেওয়াই এ মুহুর্তে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের প্রধান উদ্দেশ্য।
কোষাধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোশফিকুর রহমান লিখেন, ট্রেজারার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদ কারণ এর সাথে টেন্ডারের অনেক ইস্যু থাকে। সামনে আবার জগন্নাথে অনেকগুলো বড় বড় কাজ হওয়ার সম্ভাবনাও আছে। তাই এখানে সৎ লোক থাকলে অনেক সমস্যা অনেকেরই!
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী সোহাগ আহমেদ বলেন , ট্রেজারার স্যারের পদত্যাগ শিক্ষার্থীরা চায় নি। তাহলে কেন স্যার পদত্যাগ করলেন? না কারো প্রেসার ছিল? বিষয়টি তদন্ত করা হোক।
অভিযোগের বিষয়ে বিএনপিপন্থী সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দিন বলেন, “গত সিন্ডিকেট মিটিংয়ের পর থেকে ট্রেজারার স্যারের সাথে আমার কথা হয়নি। তিনি আমার কলিগ। উনার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক আছে। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।”
সাদা দলের সহ-সভাপতি অধ্যাপক মঞ্জুর মোর্শেদ ভুইঁয়া বলেন, “এ অভিযোগ সত্য নই। এ বিষয়ে কারো সাথে আমার কথা হয়নি।
পদত্যাগের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী। তবে তিনি বলেন, সাবেক উপাচার্য সাদেকা হলিমের পদত্যাগের পর থেকে আমি একাই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেছি। শিক্ষার্থীদের দুর্দিনে পাশে থেকে সকল সমস্যা মোকাবিলা করেছি। ছাত্রদের আন্দোলনের তোপের মুখে আমাকে পদত্যাগ করতে হয়নি এবং ছাত্রদের মাঝে আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে, এজন্য আমি নিজেকে গর্ববোধ করি।
এদিকে উপাচার্য নিয়োগের প্রথম দিনই তাকে বিতর্কিত করার লক্ষ্যে অধ্যাপক রইস উদ্দীন, মঞ্জরুল মোর্সেদ ভূঁইয়া সহ কয়েকজন বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি পদে নিয়োগ নেন। একই সাথে বিভিন্ন দপ্তরে কর্মকর্তাদের মধ্যে বড় রকমের রদবদল করেন। এতে সাধারন শিক্ষার্থীদের সমালোচনা মুখে পড়েন তারা।