ডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক গণঅভ্যুত্থানের ইশতেহারে শুধু জুলাই-আগস্ট নয়, বিগত আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপির ভূমিকাও লিখতে হবে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত ‘দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি’তে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জুলাই আগস্টের আন্দোলনের ইশতেহারকে আমরা সমর্থন করি। কিন্তু এই ইশতেহারে ১৯৪৭ সালের ইতিহাস, ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে খালেদা জিয়ার ভূমিকা ও ডা. মিলনের আত্মত্যাগ, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে পাঁচ বছর কারাগারে রেখেছিল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা, গত ১৬ বছরের বিএনপির আত্মত্যাগ- এই কথাগুলো ইশতেহারে লিখতে হবে। এছাড়াও ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ কালোরাতে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনার নামে শেখ মুজিব কেন কালক্ষেপণ করলেন তাও উল্লেখ থাকতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, তাদের কিছু কিছু কার্যক্রমের দ্বিমত পোষণ করছে জনগণ। গত ১৬ বছর মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা ছিল না, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ছিল না, গণতন্ত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বললেও মামলা দেওয়া হয়েছে, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ করলেও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তাই ১৬ বছরের নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের কথা কর্ণপাত না করে শুধু জুলাই বিপ্লবের কথা বললে এই গণঅভ্যুত্থান ফলপ্রসূ হবে না।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি ও আপনার উপদেষ্টারা অনেক গুণী ও সম্মানিত ব্যক্তি। ছাত্র জনতার রক্তের ওপর দিয়ে আপনাদের এই আসনে বসানো হয়েছে। কিন্তু সেই আসনে বসে যদি জনগণের প্রত্যাশা যদি পূরণ না করতে পারেন তাহলে আপনাদের ক্ষমা করবে না। এখনো কেন চালের কেজি ৮০ টাকা? ছাত্র জনতার আন্দোলনের ফসল এই সরকার সব দ্রব্যমূল্যের ওপর অনৈতিকভাবে কেন ভ্যাট বসালো? জনগণ আগে ১০ হাজার টাকায় জীবনযাপন করতে পারলেও এখন ২৫ হাজার টাকায়ও পারে না।
সব জায়গার সিন্ডিকেট ভাঙার দাবি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার আমলের সিন্ডিকেট করেছে, এখন আপনার আমলেও তারা সিন্ডিকেট করছে। ৪০-৪৫ হাজার টাকায় ওমরাহর শত শত টিকিট কিনে রেখে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে? আপনারা (উপদেষ্টা) কি এগুলোর খবর রাখেন? আপনারা সিন্ডিকেট ধরে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রির ব্যবস্থা করুন।
‘আপনারা আমার কাছে না থাকলে আমি অসহায়, আসলে, পাশে থাকলে আমার শক্তি বাড়ে’— প্রধান উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে ফারুক বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, এটা একটা ইতিহাস। এখন তো মাঠে আওয়ামী লীগ নাই, তাহলে এই ষড়যন্ত্রকারীরা কারা? শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিবাদ আর যেন ফিরে আসতে না পারে সেই ইতিহাস সৃষ্টি করুন।’
সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, ১৯৯১ সালের মতো নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য এতে সংস্কারের দরকার নেই। যে সংস্কার হলে জনগণ ৪০ টাকা চাল কিনতে পারবে সেই সংস্কার আমাদের দরকার। দ্বিতীয় স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে অবিলম্বে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। একই সঙ্গে সংস্কারও চলবে। আজকে অনেকজন অনেক কথা বলে, সময় মতোই তার জবাব দেওয়া হবে।