The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪

মায়ের মুখে শুনে পড়াশোনা করে জিপিএ-৫ পেলেন দৃষ্টিহীন তাসপি

জন্ম থেকেই দু চোখে আলো নেই রিজওয়ান ইসমাম তাসপির। জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন হয়েও মায়ের মুখে শুনে শুনে পড়াশোনা করে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। তাসপি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের সরকারি মুজিব কলেজর মানবিক বিভাগ থেকে এমন কৃতিত্ব অর্জণ করেন। পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষক হতে চান তাসপি।

রিজওয়ান ইসমাম তাসপি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের রেহান আলী চৌধুরী এলাকার মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও শাহনাজ পারভিন দম্পতির একমাত্র ছেলে।

পদ্ধতিগত জটিলতার কারণে পড়ালেখায় নানা প্রতিবন্ধকতা ছিল তার। অন্যদের তুলনায় তাকে দেরিতে পড়ালেখা শুরু করতে হয়। আট বছর বয়সে পড়ালেখা শুরু করেন তাসপি। তবে সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে মায়ের কাছ থেকে পড়া শুনে শুনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। জিপিএ-৫ পেয়েছেন তাসপি।

পড়াশোনার ক্ষেত্রে তাসপির একমাত্র সঙ্গী তার মা শাহনাজ পারভিন। তিনি বই পড়ে শোনান, ছেলে তা শুনে মুখস্ত করেন। কখনও কখনও তিনি বই পড়ে রেকর্ড করে রাখতেন যা পরবর্তীতে শুনে মুখস্ত করতেন তাসপি।

তাসপির মা শাহনাজ পারভিন উত্তর চরকাঁকড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তিনি  বলেন, আমার ছেলের অন্যদের মতো না। তাই তার জন্য অনেক সময় ব্যয় করতে হয়েছে। সে প্রচণ্ড মেধাবী ফলে কোনো পড়া একবার শুনলে তার মুখস্ত হয়ে যেত। সে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছি। এসএসসি পরীক্ষায় গণিতে সঠিকভাবে শ্রুতিলেখক না পাওয়ায় জিপিএ-৫ পায়নি। তবুও এসএসসিতে সে জিপিএ ৪ দশমিক ৭২ পেয়েছে। এবার এইচএসসিতে সরকারি মুজিব কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছি।

শাহনাজ পারভিন আরও বলেন,  আমার একমাত্র ছেলে তাসপি। আরেকটা মেয়ে আছে। আমার হাত ধরে তাসপি স্কুলে যাতায়াত করতো। তার বাবা চট্রগ্রামের সরকারি পোস্ট অফিসে চাকরি করেন। ফলে আমার কাছেই তাসপির বেড়ে ওঠা। তার বন্ধুরা ছিল খুব আন্তরিক। তারাও অনেক সহযোগিতা করেছে। তাসপির স্বপ্ন পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হওয়া। আমার সন্তানের জন্য দোয়া করবেন।

তাসপির বাবা মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমার সন্তানের ফলাফলে আমি খুব খুশী। যারা তার পড়াশোনার পেছনে ভূমিকা রেখেছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সে যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারে সেই দোয়া করবেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. পরীক্ষা ও ফালাফল
  3. মায়ের মুখে শুনে পড়াশোনা করে জিপিএ-৫ পেলেন দৃষ্টিহীন তাসপি

মায়ের মুখে শুনে পড়াশোনা করে জিপিএ-৫ পেলেন দৃষ্টিহীন তাসপি

জন্ম থেকেই দু চোখে আলো নেই রিজওয়ান ইসমাম তাসপির। জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন হয়েও মায়ের মুখে শুনে শুনে পড়াশোনা করে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। তাসপি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের সরকারি মুজিব কলেজর মানবিক বিভাগ থেকে এমন কৃতিত্ব অর্জণ করেন। পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষক হতে চান তাসপি।

রিজওয়ান ইসমাম তাসপি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের রেহান আলী চৌধুরী এলাকার মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও শাহনাজ পারভিন দম্পতির একমাত্র ছেলে।

পদ্ধতিগত জটিলতার কারণে পড়ালেখায় নানা প্রতিবন্ধকতা ছিল তার। অন্যদের তুলনায় তাকে দেরিতে পড়ালেখা শুরু করতে হয়। আট বছর বয়সে পড়ালেখা শুরু করেন তাসপি। তবে সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে মায়ের কাছ থেকে পড়া শুনে শুনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। জিপিএ-৫ পেয়েছেন তাসপি।

পড়াশোনার ক্ষেত্রে তাসপির একমাত্র সঙ্গী তার মা শাহনাজ পারভিন। তিনি বই পড়ে শোনান, ছেলে তা শুনে মুখস্ত করেন। কখনও কখনও তিনি বই পড়ে রেকর্ড করে রাখতেন যা পরবর্তীতে শুনে মুখস্ত করতেন তাসপি।

তাসপির মা শাহনাজ পারভিন উত্তর চরকাঁকড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তিনি  বলেন, আমার ছেলের অন্যদের মতো না। তাই তার জন্য অনেক সময় ব্যয় করতে হয়েছে। সে প্রচণ্ড মেধাবী ফলে কোনো পড়া একবার শুনলে তার মুখস্ত হয়ে যেত। সে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছি। এসএসসি পরীক্ষায় গণিতে সঠিকভাবে শ্রুতিলেখক না পাওয়ায় জিপিএ-৫ পায়নি। তবুও এসএসসিতে সে জিপিএ ৪ দশমিক ৭২ পেয়েছে। এবার এইচএসসিতে সরকারি মুজিব কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছি।

শাহনাজ পারভিন আরও বলেন,  আমার একমাত্র ছেলে তাসপি। আরেকটা মেয়ে আছে। আমার হাত ধরে তাসপি স্কুলে যাতায়াত করতো। তার বাবা চট্রগ্রামের সরকারি পোস্ট অফিসে চাকরি করেন। ফলে আমার কাছেই তাসপির বেড়ে ওঠা। তার বন্ধুরা ছিল খুব আন্তরিক। তারাও অনেক সহযোগিতা করেছে। তাসপির স্বপ্ন পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হওয়া। আমার সন্তানের জন্য দোয়া করবেন।

তাসপির বাবা মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমার সন্তানের ফলাফলে আমি খুব খুশী। যারা তার পড়াশোনার পেছনে ভূমিকা রেখেছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সে যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারে সেই দোয়া করবেন।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন