নিজস্ব প্রতিবেদক : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ইতালী প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। প্রবাসীর স্ত্রী সাদিয়া মল্লিক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ করে ঝিনাইদহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। তবে মামলাটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও সামাজিকভাবে হেও প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষকরা।
মামলার এজাহার সূত্রে, ইবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন এবং অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা সহ ছয়জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলার বাদীসহ আসামীরা সকলেই ঝিনাইদহের ঝিনুক আবাসিক টাওয়ারের বাসিন্দা। ভিকটিমের স্বামী বিদেশ থাকায় দীর্ঘদিন থেকে আসামীরা বিভিন্নভাবে তাকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। গত ২৭ মে রাতে এক নাম্বার আসামী তাকে রুমে একা পেয়ে অন্য আসামীদের সহযোগিতায় ধর্ষনের উদ্দেশ্যে জাপটে ধরেতে উদ্যত হলে তিনি চিৎকার করেন৷ এসময় এক নাম্বার সাক্ষী চিৎকার শুনে ছুটে আসে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আসামীরা তার সাথে বাজে অঙ্গভঙ্গি করতো বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর গত ৫ জুলাই মামলা করলে বিষয়টি বিভিন্ন মহলে প্রশ্নের জন্ম দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের একটি পেইজ থেকে এ বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্পাসের সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এদিকে গত ১১ জুলাই বিকাল ৫টার দিকে “রেজওয়ানুল ইসলাম বাপ্পি” নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক আইডি থেকে বিষয়টি শেয়ার হলে সকলের সামনে আসে।
ওই ব্যক্তির পোস্টের নিচে মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি লিখেন, ‘এই দুইজনই অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী ও সম্মানী ব্যক্তিত্ব। এটি ষড়যন্ত্র বলে আমার মনে হচ্ছে।’ পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপ ও পেইজে শেয়ার হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা এই বিষয়টি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এস এম জামিরুল ইসলাম লিখেন, ‘ষড়যন্ত্র করে তাদের মানহানি করার একটা অপচেষ্টা। তারা দুজনের কেউই পর নারীর প্রতি আসক্ত নয়। মিথ্যা মামলা পরিহার সহ ঐ নারীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা উচিৎ।’ রাজু আহমেদ লিখেন, ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা আর বানোয়াট মামলা। এই মামলাকারী মহিলার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হওয়া উচিত।’
এ বিষয় জানতে অভিযোগকারী সাদিয়া মল্লিকের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করা হয়েছে। এটা মানসম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য করা হয়েছে। খুব দ্রুতই এটা প্রমাণ হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’ অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, ‘এটা মিথ্যা, বানোয়াট, প্রতিহিংসা মূলক, হয়রানিমূলক মামলা। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাদের সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য করা হয়েছে।’