ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই তাকে ‘রাজনীতিবিমুখ’ শিক্ষক হিসেবে চেনেন। তিনি নিজেও কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য বা সমর্থক পরিচয় দেওয়ার চেয়ে শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বলে উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) গণমাধ্যমে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘আমি বরাবরই রাজনীতির বাইরের মানুষ। আমি শিক্ষক, গবেষণায় ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করি। এখনো আমি কোনো রাজনীতি করি না। আগামীতেও কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমার নাম জড়ানোর ইচ্ছা নেই।’
উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার গুঞ্জনের মধ্যেই গতকাল সোমবার তার ৩৫ পৃষ্ঠার জীবনবৃত্তান্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদের তত্ত্বাবধানে বর্তমানে দেশে ও দেশের বাইরের ১৭ জন পিএইচডি গবেষক ও ৮ জন এমফিল গবেষক গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি দুই শতাধিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ ও বইয়ের রচয়িতা।
অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ড. শফিক আহমদ খান অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন এবং ষাটের দশকের প্রথম দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণ রসায়ন বিভাগ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন।
পেশাগত জীবনে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ‘অধ্যাপক’ ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ২০০৬ সালে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও অধ্যয়ন বিভাগে। ২০১২-২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি এ বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি একই বিভাগে অধ্যাপনা করছেন।
অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ মর্যাদাপূর্ণ কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যের ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তী সময়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয় এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা সম্পাদন করেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড, ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস সোয়ানসি, এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ ও গবেষণা করেছেন।
দীর্ঘদিন বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যে ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্টের উন্নয়নে কাজ করছেন। তিনি মিশরের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি ইন কায়রোতে ‘ডিস্টিংগুইসড ভিজিটিং রিসার্চার’, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ‘অধ্যাপক’, থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ‘এশিয়ান রিসার্চ ফেলো’ এবং অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভারসিটির ‘ভিজিটিং স্কলার’, ২০০৪-০৮ সাল পর্যন্ত কানাডার রয়েল রোডস ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি মেম্বার, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস ১৯৯৬-৯৭ এর ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া তিনি বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, আমেরিকান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, যুক্তরাজ্য সরকারের সোয়ানসি-বে রেশিয়াল ইকুইটি কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা, প্রকল্প ও কর্মসূচিতে উপদেষ্টা ও পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।