করোনাসহ বিভিন্ন সংকটে শিক্ষার্থী যাতে শিক্ষা থেকে ছিটকে না পড়ে সে কারণেই শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, টিউশন ফি এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
আজ রোববার (১৯ জুন) বিকেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট অডিটরিয়ামে ২০২২ সালের উপবৃত্তি, টিউশন ফি ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তা বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানা। অনুষ্ঠানে অভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এছাড়া অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও উপবৃত্তি পাওয়া কিছু শিক্ষার্থী অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অতিরিক্ত সচিব নাসরীন আফরোজ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো, গবেষণার জন্য বরাদ্দ বাড়ানো, সার্বিকভাবে কারিগরি ও কর্মভিত্তিক শিক্ষা প্রচলন, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার প্রসার, কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়নসহ বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এর অন্যতম দিক হচ্ছে সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা।
অনুষ্ঠানে উপমন্ত্রী বলেন, ‘যারা আর্থিক ও পারিবারিকভাবে শিক্ষায় ব্যয় করতে পারছেন না সেসব পরিবারের শিক্ষার্থীরা যাতে কোনোভাবেই শিক্ষা থেকে বিচ্চুত না হয় সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট গঠন করা হয়। শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষাজীবন থেকে ছিটেকে না পড়ে সে জন্য আজ এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হলো। শিক্ষার্থীদের জন্য এই সহায়তা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একটি আশির্বাদ। সেটি যেন সব শিক্ষার্থী মনে রাখে যে রাষ্ট্র যেভাবে পাশে এসেছে শিক্ষার্থীরাও যেন রাষ্ট্রের পাশে থাকে। সমাজের প্রয়োজনে অন্যের প্রয়োজনে শিক্ষার্থীরা যেনও পাশে থাকে। শিক্ষার্থীরা নিজেদের যোগ্য করে তুলে নিজেকে সবার জন্য কাজে লাগাতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে। আমরা প্রত্যেকে যদি পরের জন্য কাজ না করি সহযোগিতামূলক মানসিকতা নিয়ে না নামি তাহলে সমাজ এগুবে না।
অনুষ্ঠানে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষার্থীদের অর্থ বিতরণ করা হবে বলে জানানো হয়। মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪০ লাখ ১৩ হাজার ৪৩৪ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে ৬৭৪ কোটি ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ৮ লাখ ৮২ হাজার ৭৬৯ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে ৪৫০ কোটি ৩০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫৩ জন দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বাবদ ৭৪ কোটি ৮২ লাখ ৩১ হাজার ৭০০ টাকা। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নিশ্চিত করতে ৫০৫ জন দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে ভর্তি সহায়তা হিসেবে ৩১ লাখ ১০ হাজার টাকা বিতরণ করা হবে।
অর্থের অভাবে শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট স্থাপন করা হয়।