চার বোনের মাঝে তিনি ভ্যানচালক বাবার একমাত্র ছেলে। মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্যই তিনি প্রথম ঢাকায় যান। এর আগে কখনও তার ঢাকায় যাওয়ার সুযোগ হয়নি। বলছি এমরান হোসেনের কথা। লক্ষ্মীপুরের ছেলে এমরান এবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। অর্থের অভাব আছে সত্য তবে পরিবারের ভালোবাসায় চিকিৎসক হওয়ার যাত্রায় আরো একধাপ এগিয়ে গেলেন এমরান হোসেন।
রোববার (১২ মার্চ) মেডিকেলে ভর্তির ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে তিনি ৪৭৯তম স্থান অর্জন করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
এমরান লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের মিয়াপাড়া এলাকার ভ্যানচালক মো. ইউসুফের ছেলে। বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে হাজিরহাট মিল্লাত একাডেমি থেকে এসএসসি ও লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে তিনি জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
বাড়ি থেকে জেলা শহরে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে যাতায়াত খরচ বহন করা সম্ভব হতো না এমরানের পরিবারের। এতে তিনি কলেজে নিয়মিত যেতে না পারলেও সকল পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতেন বলে জানান তার শিক্ষকরা।
এমরান হোসেন স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, তিনি ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছেন। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগের খবর পেয়ে তার বাবা-মা সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতেই ফলাফল পাওয়ার পরপরই তিনি ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন।
চরকাদিরা কে এম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইফতেখার মাহমুদ শিবলু বলেন, এমরান আমার প্রতিবেশী। খুব সাদামাটা জীবন তার। সম্পূর্ণ নিজের মেধা ও চেষ্টা দিয়ে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। মেডিকেলে ভর্তির জন্য সবাই কোচিংয়ের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। কিন্তু এমরান কারও কাছে কোচিং অথবা প্রাইভেটও পড়েনি। পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার মধ্য দিয়ে এ সুযোগটি তার জন্য পৃথিবী জয়ের আনন্দে পরিণত হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. রিয়াজ বলেন, এমরান আমার প্রতিবেশী। সে খুব গরিব ঘরের সন্তান। আমাদের এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থী। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়ে সে তার স্বপ্নের এক ধাপ এগিয়ে গেছে। সবার কাছে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।