The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

সবচেয়ে কম ব্যয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে, শিক্ষার্থীপ্রতি খরচ ১ হাজার

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি শিক্ষার্থীর পেছনে ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তথ্য অনুয়ায়ী, প্রতি বছর সরকার শিক্ষার্থীপ্রতি সবচেয়ে কম খরচ করে থাকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। যেখানে একজন শিক্ষার্থীর পেছনে খরচ মাত্র ১ হাজার ১৫১ টাকা। অথচ উচ্চশিক্ষায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ ৪৭তম বার্ষিক প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীর মাথাপিছু ব্যয়ের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ২০২০ সালের তথ্য নিয়ে সর্বশেষ এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত কলেজ রয়েছে মোট ২ হাজার ২৫৭টি। এগুলোতে শিক্ষার্থী পৌনে ৩০ লাখ। মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে স্নাতক সম্মানে রয়েছে প্রায় ১৫ লাখ। বাকিরা পাস কোর্সসহ অন্যান্য স্তরের। এখানে সরকার থেকে রাজস্ব খাতে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীপিছু ব্য়য় করে থাকে নিজস্ব আয় থেকে। তবে এই নিজস্ব আয়টি হয় মূলত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই নেওয়া ফির মাধ্যমে। যার ফলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীর পেছনে বছরে খরচ হয় মাত্র ১ হাজার ১৫১ টাকা।

যার ফলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক জরিপে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলো থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের গুণগত মানের একটি তুলনামূলক চিত্র বোঝা যায়। গত বছর করা ওই জরিপের তথ্য বলছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলো থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ৬৬ শতাংশই বেকার থাকছেন।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইউজিসির প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ২০২০ সালে শিক্ষার্থীপিছু সরকারের বার্ষিক ব্যয় ২১ হাজার ২৩৮ টাকা। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এখানে ইউজিসি ভুল করেছে। প্রকৃতপক্ষে ২০২০ সালে শিক্ষার্থীপিছু সরকারের বার্ষিক ব্যয় ছিল ২ লাখ ১২ হাজার টাকার মতো।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীপিছু সরকারের বার্ষিক ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৩ হাজার ৯৬০ টাকা। অথচ ২০১৯ সালে এ ব্যয় দেখানো হয়েছিল পৌনে দুই লাখ টাকা।

ইউজিসি তথ্য মতে, সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চেয়ে বিজ্ঞান, চিকিৎসা, প্রকৌশল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের বার্ষিক ব্যয় বেশি। যেমন শিক্ষার্থীপিছু সবচেয়ে বেশি ব্যয় হওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্ববিদ্যালয়। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ২০১৮ সালে বিশেষায়িত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে মোট শিক্ষার্থী দুই শতাধিক।

প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীপিছু সরকারের বার্ষিক ব্যয় ১ লাখ ৯২ হাজার টাকার বেশি, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যয় হয় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার বেশি, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ লাখ ৩৪ হাজারের বেশি। আর ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ব্যয় ১ লাখ ৯১ হাজারের বেশি।

অন্যদিকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীপিছু ব্যয় প্রায় ৪ লাখ টাকা, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা এবং গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা। আর চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ব্যয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা।

শিক্ষার্থীপ্রতি মাথাপিছু ব্যয় নিয়ে এক গণমাধ্যমকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, বিভিন্ন কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীপিছু ব্যয় কমবেশি হতে পারে। যেমন নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কম, কিন্তু মোট বরাদ্দ বেশি হওয়ায় শিক্ষার্থীপিছু ব্যয় বেশি হতে পারে। আবার বিজ্ঞান ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন খাতে ব্যয় বেশি হয়। এ বিষয়ে ইউজিসির পক্ষ থেকে একটি যথাযথ ব্যাখ্যা থাকা দরকার। তবে তাঁর মতে, শিক্ষার্থীপিছু ব্যয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই সমতা থাকা উচিত।

বর্তমানে সারাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫২টি। ইউজিসির সর্বশেষ হিসাব বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিভুক্ত কলেজ, মাদ্রাসাগুলো বাদে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোট শিক্ষার্থী ৩ লাখ ১৪ হাজার ৯৩০ জন। তবে কলেজ, মাদ্রাসাসহ মিলিয়ে উচ্চশিক্ষায় মোট শিক্ষার্থী আছে ৪৩ লাখ ৬২ হাজার ১৮৭ জন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.