The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ১৪ই নভেম্বর, ২০২৪

সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের কারণে শিখন ঘাটতিতে শিক্ষার্থীরা

করোনার কারণে বিপর্যস্ত দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। দুই ধাপের দীর্ঘ ছুটিতে শিখন ঘাটতিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। ক্লাস না হওয়া, অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হওয়ার সামর্থ না থাকা এবং সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়ার কারণে এমন ঘাটতি তৈরি হয়েছে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, এই ঘাটতি পূরণ হওয়া সম্ভব নয়। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শিক্ষা খাতের জন্য অশনিসংকেত বয়ে আনছে।

করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে ২০২০ সালের মার্চে প্রথমবারের মতো বন্ধ করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আংশিক খুলে দেয়া হয়। ওই সময় অনলাইনে ও টিভিতে ক্লাস করতেন শিক্ষার্থীরা। সশরীরে ক্লাস ছিলো নির্ধারিত দিনে। এরপর করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কারণে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেয় সরকার। দুই দফায় ছুটি বাড়ানোর কারণে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এছাড়া দেশের সব জায়গায় ইন্টারনেট সেবা সমান গতির না হওয়ায় অনলাইন ক্লাসেও অনুপস্থিত ছিলো মফস্বলের অধিকাংশ শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা দিয়ে প্রমোশন পেয়েছে পরের ক্লাসে। ফলে প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষাস্তর পর্যন্ত পরপর তিন শিক্ষাবর্ষে ব্যাপক শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

এদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা নিতে পারবে। তবে সে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে তিন ধাপে। প্রথম ধাপে রয়েছে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা। তাদের টিকা দেয়ার বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে কোনো নির্দেশনা না আসায় আপাতত বাসায় থাকতে হচ্ছে এই স্তরের শিক্ষার্থীদের। ১২ বছরের বেশি বয়সের যারা তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবেন। তবে তাদের মধ্যে দুই ডোজ টিকা যারা নিয়েছে তারাই শুধু সশরীরে ক্লাস করতে পারবে। এরা আছে দ্বিতীয় ধাপে। এক ডোজ টিকাধারী শিক্ষার্থীরা বাসায় থেকে অনলাইনে ক্লাস করবে। এরা তৃতীয় ধাপে আছে।

তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, শীঘ্রই সব শিক্ষার্থীর দুই ডোজ টিকা দেয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে। টিকা দেয়া শেষ হলেই সবাই সশরীরে ক্লাস করতে পারবে। এভাবে ধাপে ধাপে ক্লাস চালু করায় এক ধরনের বৈষম্য তৈরি হচ্ছে বলে মনে করেন অভিভাবকরা। তারা বলেন, সশরীরে ক্লাস আর অনলাইন ক্লাস কখনো সমান হতে পারে। হয় টিকা দিয়ে সবার একসাথে ক্লাস চালু করা উচিত আর না হলে আপাতত ক্লাস বন্ধ রাখা হোক। সবার টিকা দেয়া শেষ হলে তারপর ক্লাস চালু করুক। যারা অনলাইনে ক্লাস করবে তারা সশরীরে ক্লাস করাদের থেকে পিছিয়ে পড়বে।

এসব বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, করোনার সময়ে শিক্ষা খাতে অনেক ঘাটতি হয়েছে। অনলাইন ক্লাসে সবাই একটিভ ছিলো কিনা বলতে পারছি না। তবে অর্ধেক সিলেবাস মানেই হলো অর্ধেক জ্ঞান। এক ক্লাসের পুরো পড়া শেষ না করে আরেক ক্লাসে উঠে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এটা ভয়াবহ ঘটনা। অর্ধেক জ্ঞান কখনো পরিপূর্ণ জ্ঞানের সমান হতে পারে না।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.