The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

রোজা রাখার বিস্ময়কর ৫ স্বাস্থ্য উপকারিতা

আল্লাহ তায়ালা বলেন, “রোজা আমার জন্য, আমি নিজে রোজার প্রতিদান দেব”। সব ইবাদতই তো আল্লাহর জন্যই । তাহলে রোজাকে আল্লাহ কেন বললেন “আমার জন্য” । আসলে অন্য সব ইবাদত করার পাশাপাশি তা প্রদর্শনের সুযোগ ও মনোভাব থাকে, যেমন নামাজ, হজ, যাকাত ইত্যাদি। কিন্তু রোজা আল্লাহ এবং বান্দা ছাড়া প্রদর্শনের বা জাহির করার কোন সুযোগই থাকে না । আল্লাহর প্রতি বান্দার আনুগত্যই আমাদের জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণের মূল নিয়ামক। এই আনুগত্য প্রকাশের অন্যতম উপায় হল রোজা।

রমজানে বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস, পেপটিক আলসার বা গ্যাস্ট্রিক আলসার, শ্বাসকষ্ট, হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদিতে ভুগছেন, তাদের সমস্যা হবার সম্ভাবনা থাকে। তবে রোজা রাখা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও রোজা রাখতে তারা প্রবল আগ্রহী। তারা যদি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোজার মাসের জন্য ঔষধ সেবন বিধি ঠিক করে নিতে পারেন, তবে সহজেই রোজা রাখতে পারেন। এতে রোজা ভাঙ্গার বা রোজা থেকে বিরত থাকার কোন প্রয়োজন হয় না ।

রোজার স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে আজকের কলাম লিখেছেন ডা. মো ফরিদ উদ্দিন, এমবিবিএস (ঢাবি), সিসিডি (BIRDEM), এম এস সি (UK), ফেলোশিপ ট্রেনিং ডায়াবেটিস – সিএমসি হাসপাতাল, চেন্নাই, ভারত।

১) রক্তের কোলেস্টেরল :
যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের , রোজা তাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। রোজা ভালো কোলেস্টেরলকে (এইচ ডি এল) বাড়াতে এবং মন্দ কোলেস্টেরলকে (এল ডি এল) ও টাইগ্রিসারাইড কমাতে সাহায্য করে।

২) অতিরিক্ত ওজন :
যাদের ওজন অতিরিক্ত, তাদের ক্ষেত্রে রোজা ওজন কমানোর জন্য এক সহজ ও সুবৰ্ণ সুযোগ। ওজন কমে যাওয়ায় বিভিন্ন রোগ থেকে বেঁচে থাকা যায়, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ, বাতের ব্যাথা, অস্টিও আরথাইটিস, গাউট ইত্যাদি। আবার ওজন কমাতে পারলে কোলেস্টেরলের মাত্ৰাও কমে আসে।

৩) হৃদরোগী এবং উচ্চ রক্তচাপ :
রোজার মাধ্যমে ডায়াবেটিস ও কোলেস্টারাল নিয়ন্ত্রণ হওয়ার ফলে যারা হৃদরোগে অথবা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন, তাদের জন্য রোজা অত্যন্ত উপকারী। এতে কমাতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুকি কমায় ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৪) পেপটিক আলসার :
এক সময় ধারণা ছিল পেপটিক আলসারে আক্রান্ত রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন। না, তাদের ঘনঘন খাওয়া খেতে হবে, অনেকক্ষণ পেট খালি রাখা যাবে না। অনেকে মনে করেন, রোজা পেপটিক আলসারের ক্ষতি করে এবং এসিডের মাত্রা বাড়ায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এসব ধারণা ঠিক নয়। রোজায় নিয়ন্ত্রিত খাওয়া দাওয়ার ফলে এসিডের মাত্রা কমে যায়। তাই সঠিকভাবে রোজা রাখলে এবং সঠিক খাবার দিয়ে সেহেরি ও ইফতার করলে রোজা বরং আলসারের উপশম করে, অনেক সময় আলসার ভালো হয়ে যায়। এছাড়া রোজা গ্যাস্ট্রাইটিস, আই বি এস ইত্যাদি রোগেও উপকারী।

৫) শ্বাসকষ্ট বা এজমা রোগী :
যারা এই সমস্ত রোগে ভোগেন, তাদেরও রোজা রাখতে কোন অসুবিধা নেই। রোজায় এ ধরনের রোগ সাধারণত বৃদ্ধি পায় না। বরং চিন্তামুক্ত থাকায় এবং আল্লাহর প্রতি সরাসরি আত্মসমর্পণের ফলে এ রোগের প্রকোপ কমই থাকে। প্রয়োজনে রাত্রে একবার বা দুইবার ঔষধ খেয়ে নিবেন, যা দীর্ঘক্ষণ শ্বাস নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ধরনের ঔষধ বাজারে সহজেই পাওয়া যায়। দিনের বেলায় প্রয়োজন পড়লে ইনহেলার জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা যায়, যা রোজার কোন ক্ষতি করবে না।

উপসংহারে বলা যায়, রোজা যেহেতু আল্লাহ তায়ালার জন্য এবং আল্লাহ এর পুরস্কার দিবেন, তাই কেউ যদি মনে করেন আমি আল্লাহর জন্যই রোজা রাখব, যা হবার হবে, তার কোন সমস্যাই হবে না। আর যারা মনে করবে, রোজা রাখলে নানা রকমের সমস্যা হবে, রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে, নানা রকম জটিলতা হবে, তাদের বেলায় এসব সমস্যা হবার সম্ভাবনাই বেশি। দৈহিক রোজার সাথে সাথে অন্তরের রোজাটাই আসল, তাই কোন অজুহাত বা আলস্য করে রোজা পালন থেকে বিরত থাকা উচিত নয়।

রাতে ঘুমের মধ্যে বোবায় বা জ্বীনে ধরে কেন? সমস্যা, কারন ও প্রতিকার

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.