The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

বিসিএস পরামর্শ, ৪০ তম বিসিএসেই প্রথম ক্যাডার তিলা।

সবে মাত্র খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে( কুয়েট) থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ২০১৭ সালে বি এস সি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করেন। এরপর ৪০ তম বিসিএসে প্রথমবারের মত অংশগ্রহণ করে প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম হন তিনি। প্রথম হওয়ার অভিজ্ঞতা ও বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌস তিলা।

নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল বিসি এস চাকারির বাজারে সবচেয়ে পরতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। যেখানে আমি বিসিএস প্রথমবার পরীক্ষা দিয়েই প্রথম হব,এটা স্বপ্নেও ভাবিনি। মার্চ মাসের মধ্যেই চূরান্ত ফল প্রকাশ হবে। এটা জানার পর থেকেই রেজাল্টের ভয় ও দুশ্চিন্তা হতে থাকে প্রতিনিয়ত। অবশেষ যখন ফলাফল জানতে পারি,নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল সৃষ্টিকর্তার সাহায্য, মা- বাবার দোয়া ও আমার পরিশ্রম মিলেই আমার এই সাফল্য।

স্বপ্নযাত্রা শুরু
বিশ্ববিদ্যালয়ে পাসের পর দুইটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করি। তখনো আমার বিসিএস দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল না। ব্যক্তিগত জীবনে আমি চ্যালেঞ্জ নিতে খুব একঘেয়ে লাগা শুরু হয়। এ ছাড়া আমার বন্ধুদের অনেকেই তখন চাকরিতে না ডুকে বিসিএস এর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পরিচিত কয়েক জনের কাছে বিনিএস সম্পর্কে ধারণা নিই। আমার সধ্যে আগ্রহ জন্মালো। কয়েক মাস পরই আমার বিয়ে হয়ে যায়।আমার স্বামী ৩৪ তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে কর্মকর্তা। আমার স্বামীকে দেখে অনুপ্রেরনা পাই এবং প্রশাসন ক্যাডারের বৈচিত্রময় কাজের সুযোগের জন্য এটি আমাকে বেশ আকর্ষণ করে।

নিয়মিত চর্চা করলে কোনো বিষয়ই কঠিন না বিসিএস দেওয়ার পরিকল্পনা করার পরই আমি চাকরি ছেড়ে দিই এবং বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি থেকে চাকরির অফার পাওয়ার পর ও জয়েন করিনি। নিজেকে উৎসর্গ করেছিলাম বিসিএস এর জন্য। বাজারে প্রচলিত গাইডবইয়ের পাশাপাশি বোর্ড নিধারিত পাঠ্যবইকে গুরুত্ব দিয়েছিলাম। সংসার সামলে ও প্রতিদিন পড়ার চেষ্টা করতাম। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী হওয়ায় বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্য, সুশাসন ও নৈতিকতা, ভূগোল এস বিষয় আয়ত্ত করা আমার জন্য বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। তবুও নিয়মমাফিক পড়লে ও নিয়মিত চর্চা করলে কোনো বিষয়ই কঠিন না।

প্রস্তুতির ধরণ

বিসিএস প্রিলিমিনারি সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক ওগুরুত্বপূর্ন ধাপ। এ ক্ষেত্রে প্রচলিত গাইডবইয়ের ওপর পুরোপুরিভাবে নির্ভর না করে পাঠ্যবই অনুসরন করা উচিত। তাই পড়া শুরু করার আগে বুঝতে হবে কী কী জিনিস পড়া আর কী কী বাদ দেব। আর এর জন্যই বিগত বছরের প্রশ্ন হতে পারে সহায়ক। গণিত ও ইংরেজি নিয়মিত চর্চা করতে হবে। অন্যান্য বিষয় মুখস্ত না করে বুঝে বুঝে কয়েক বার পড়তে হবে। তাহলে ভালো মনে থাকবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় শুধু মুখস্তনির্ভর তথ্য দিয়ে ভালো করা যায় না। তখন অনেক গভীর থেকে প্রশ্ন করা হয় তাই বেসিক স্ট্রং করতে হয়। যেহেতু প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় নম্বর পার যোগ হয় না এবং এই পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের মধ্যে প্রায় ১১০-১২০ নম্বর পেলেই সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা যায়। তাই বেশি দাগাতে গিয়ে ভুল উওর দিয়ে নেগেটিভ নম্বর না বাড়ানোই ভালো। এছাড়া পরীক্ষার আগে বাসায় বসে ঘরে বসে মডেল টেস্ট দিতে হবে।

লিখিত পরীক্ষার নম্বরই মূলত ক্যাডারপ্রাপ্তি নির্ধারণ করে দেয়। এখানে জেনারেল ক্যাডারে ৯০০ নম্বর ও নিজ বিষয়ে পরীক্ষা দিলে মোট ১১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পড়া জিনিসগুলোই আরেকটু বিস্তারিতভাবে পড়তে হবে ও গণিতের চর্চা করতে হবে। বাংলা ও ইংরেজি নিজ ভাষায় গুছিয়ে লেখার চর্চা করতে হবে, শব্দভান্ডার বাড়াতে হবে। এবং নিয়মিত পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পড়তে হবে। লিখিত অযাচিত তথ্য উপাত্ত,মানচিত্র ইত্যাদি দিয়ে না লিখে প্রশ্ন অনুযায়ী অল্প কথায় সঠিক তথ্য দিলে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। তবে প্রশ্নের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত ও উদ্ধৃতি দেওয়া যেতে পাড়ে। তার জন্য বেশি লেখা চর্চা করতে হবে।

ভাইবাতে ভালো করার উপায়:

ভাইবার মোট ২০০ নম্বর লিখিত পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে যোগ হয়ে চূরান্ত ফর নির্ধারিত হয়। ভাইবাতে পিএসসির সম্মানিত বিজ্ঞ সদস্যরা প্রার্থীদের মেধার পাশাপাশি অন্যান্য গুনবালি ও যাচাই করে থাকেন। যেমন বাচন ভঙ্গি, উপস্থিত বুদ্ধি ইত্যাদি। ভাইভার জন্য সমসাময়িক বিষয়াবলি, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ, নিজ পঠিত বিষয় প্রদত্ত পছন্দের ক্যাডার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। নিয়মিত পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে। এছাড়া ইংরেজিতে কথা বলার চর্চা থাকলে ভালো।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.