The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪

প্রতিক্ষার অবসান: মূল সনদ পেতে যাচ্ছে বেরোবির শিক্ষার্থীরা

বেরোবি প্রতিনিধি: দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের। অবশেষে মূল সনদ পেতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে মূল সনদ দেয়ার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে শিক্ষার্থীরা মূল সনদ পাবে বলে নিশ্চিত করেছেন একাধিক বিশ্বস্তসূত্র। এর ফলে মূল সনদ না থাকায় উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের জটিলতার অবসান ঘটবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার ১৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি ব্যাচের স্নাতকোত্তর এবং ১০টি ব্যাচে স্নাতক শেষ করেছেন প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী। গ্র্যাজুয়েট হয়েও মূল সনদপত্র ছাড়াই ক্যাম্পাস ছাড়তে হয় তাদের। অনেককে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। সাময়িক সনদপত্র নিয়েই ক্যাম্পাস ছেড়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের পক্ষে বারবার মূল সনদ দেয়ার দাবি উঠলেও আমলে নেয়নি সাবেক কোন উপাচার্য।

তবে, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ দায়িত্ব গ্রহণের পর শিক্ষার্থীদের মূল সনদ দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই মধ্যে মূল সনদ প্রদানের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এমন উদ্যোগের ফলে শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে মূল সনদ না থাকার যে বড় বাধা ছিলো তার অবসান ঘটবে। শুধু তাই নয়, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদের দূরদর্শিতায় যোগদানের এক বছরের মধ্যে বিশবিদ্যালয়ের সেশনজট নামক দীর্ঘ ১৪ বছরের যে অভিশাপ তা নিরসন হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করতে পেরে শিক্ষার্থীদের মাঝে ফিরেছে স্বস্তি।

শিক্ষার্থীদের মূল সনদ প্রদানের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য বাইরের যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমেই যে ডকুমেন্টকে প্রাধান্য দেয় তা হলো মূল সনদ। যা ব্যতিত বাইরের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হওয়া প্রায়ই অসম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা উচ্চ শিক্ষার জন্য বাইরে যেতে চায় এবং সুযোগও আসে কিন্তু এতদিন মূল সনদের অভাবে সম্ভব হতো না। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মূল সনদ দেয়ার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। মূল সনদ শুধু উচ্চ শিক্ষা নয়, বরং বিভিন্ন চাকুরীর মৌখিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সহায়ক হবে বলে জানান তারা।

উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে বিদেশে যেতে আগ্রহী ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাশেম বাঁধন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মূল সনদ দেওয়ার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এতে করে আমাদের ক্যাম্পাসের বহু শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক বড় সংকটের সমাধান হবে। আগামী সেশনে আমারও বাইরের দেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য অফার লেটার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেক্ষেত্রে মূল সনদ নিয়ে আমিও অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এমন খবরে কিছুটা স্বস্তিবোধ করছি। শিক্ষার্থী বান্ধব এমন উদ্যোগ গ্রহণ করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণইচ্ছুকদের সহায়তা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

জেন্ডার এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এশা শারমিন হক বলেন, ইতালির দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে অধ্যয়ন করার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু মূল সনদের পরিবর্তে সাময়িক সনদ প্রদান করায় তারা আমার ভর্তিকে শর্ত সাপেক্ষে ভর্তি হিসেবে যুক্ত করেছে। আমাকে ভিসা এ্যাপ্লিকেশনের আগে মূল সনদ প্রদান করে ভার্সিটি ক্লিয়ারেন্স নিতে হতো যা এতদিন আমার জন্য অনেক বড় দুশ্চিন্তার বিষয় ছিল। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের মূল সনদ প্রদান করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে তাই আমি এবং আমার মত অনেকেই এই উদ্যোগের সুফল পাবে। এ জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, বর্তমান প্রশাসন শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় যেমন কাজ করে যাচ্ছে তেমনি এরই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে এই বিষয়টি সমাধানের জন্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মাননীয় উপাচার্য স্যার বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে দেখছেন। স্যারের নিকট থেকে জানতে পেরেছি এই বিষয়টি অতি দ্রুত, হয়তো এই মাসের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে। আমরা চাইনা মূল সনদ অপ্রাপ্তিতে আমাদের কোনো শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হোক।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যার কথা আমাকে জানিয়েছে। তাদের সুবিধার্থে আমি এই পদক্ষেপ নিয়েছি। আশা করছি মূল সনদ উচ্চ শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সহায়ক হবে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.