The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪

তিনদিন আগে অপহৃত দুই ব্যক্তি ঢাবির মুহসীন হল থেকে উদ্ধার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল থেকে মো. আব্দুল জলিল ও হেফাজ উদ্দীন নামে দুই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনদিন আগে হাতিরঝিলের নিজ বাসা থেকে তাদের অপহরণ করে এনে একেক দিন একেক হলে রেখে নির্যাতন চালানো হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দাবি, জলিলের কাছে বড় অঙ্কের টাকা পেতেন। দীর্ঘদিন পাওনা টাকা না পেয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় শাহবাগ থানা পুলিশ হলের ৫৪৪ নম্বর কক্ষ থেকে তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জলিলের পরিবার হাতিরঝিল থানায় একটি জিডি করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অপহরণের মূল হোতা শাহাবুদ্দিনসহ ঢাবির তিন শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তারা হলেন- ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক ও ফিন্যান্স বিভাগের মোহাম্মদ আবুল হাসান সাঈদি, মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের প্রচার উপ-সম্পাদক ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোনতাছির হোসাইন এবং মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও মুহসীন হল ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ উপ-সম্পাদক আল শাহরিয়ার মাহমুদ তানসেন।

এ ঘটনায় জড়িত মোনতাছির শাহাবুদ্দিনকে নিজের আত্মীয় বলে দাবি করছেন। তবে শাহাবুদ্দিনের বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কোনো পরিচয় জানা যায়নি। অন্যদিকে অপহরণের শিকার জলিল এবং হেফাজ উদ্দীন দু’জন বন্ধু বলে জানা গেছে।

জানা যায়, ভুক্তভোগী জলিলের কাছে ৩৫ লাখ টাকা পান মোনতাছিরের আত্মীয় পরিচয় দেওয়া শাহাবুদ্দিন নামে ওই ব্যক্তি। জলিল ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে তার থেকে টাকা নেন এবং ফেরত চাইলে নানা ছলচাতুরি করেন। টাকা ফেরত দিতে দেরি করায় শাহাবুদ্দিন তিন-চারজন ঢাবি শিক্ষার্থীসহ ১০-১২ জনকে নিয়ে জলিল ও হেফাজকে হাতিরঝিলের হাজীপাড়া নামক এলাকায় তাদের নিজ বাসা থেকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ২টা নাগাদ অপহরণ করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অপহৃত জলিল ও হেফাজকে প্রথমে ঢাবির বিজয় একাত্তর হলের একটি কক্ষে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন করা হয়। পরবর্তীতে তাকে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের ৫৪৪ নম্বর কক্ষে নিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে।

নির্যাতনের বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহবাগ থানার এসআই আলামিন বলেন, নির্যাতনের আলামত হিসেবে পুলিশ ওই কক্ষটি থেকে একটি লোহার রড উদ্ধার করেছে। এছাড়া ভুক্তভোগীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে।

আব্দুল জলিলও টাকা লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, শাহাবুদ্দিন আমার কাছে ৩৫ লাখ টাকা পান। কিন্তু মাঝখানে ওনার সাথে আমার যোগাযোগ হয় না। এতে করে ভুল বোঝাবুঝির একপর্যায়ে আমাকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ২টায় বাসা থেকে তারা ১০-১২ জন মিলে তুলে আনেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আটকে রাখেন। প্রথমে বিজয় একাত্তর হলে এবং পরে মুহসীন হলে আটকে রাখেন। গত তিনদিন ধরে আমাকে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে।

মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ হুসেন বলেন, প্রথমত এ ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত ছিলাম না। আজকে জানতে পারলাম তাদের দু’জনকে তিনদিন যাবত হলে আটকে রেখেছে। এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, আমরা প্রথমে পুলিশের কাছ থেকে জানতে পারলাম মুহসীন হলের চার বা পাঁচ তলায় আমাদের কয়েকজন ছাত্রের সহযোগিতায় একজনকে তুলে আনা হয়েছে। টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে তাকে মারধরও করা হয়েছে। পরে শাহবাগ থানা ও হল প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা ওই দু’জনকে উদ্ধার করি।

তিনি বলেন, তাদেরকে একত্রিত করে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এতে সকল ঘটনা বেরিয়ে আসে। আমরা তাদেরকে পুলিশে হস্তান্তর করেছি। ভুক্তভোগীসহ অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীর পরিবার আগেই একটি জিডি করেছেন। তার ভিত্তিতে এখন তারা মামলায় যাবে। বাংলাদেশের আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী তাদের বিচার বহাল থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরনের অপরাধমূলক কাজে জিরো টলারেন্স।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.