The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

ডা. জাফরুল্লাহ এক শার্ট-প্যান্ট ৩৫ বছর পরেছেন!

সাদাসিদে জীবনে অভ্যস্ত ছিলেন গরিবের ডাক্তার খ্যাত জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে একটা শার্ট-প্যান্ট পরেছেন। আর পায়ে দিতেন ২০০ টাকার প্লাস্টিকের স্যান্ডেল।

তার কথা ছিল, ‘দেশের মানুষ পেট ভরে খেতে পায় না, সবাই জামা-কাপড় পরতে পারে না। আমরা তো মুক্তিযুদ্ধ করেছি মানুষের খাওয়া-পরার সমস্যা না থাকার জন্য। এখানে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। তাই আমার জন্য বিলাসিতা মানায় না।’

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ডা. জাফরুল্লাহ। ৮২ বছর বয়সী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বহুবছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। তার বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা আর মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। মা–বাবার ১০ সন্তানের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সবার বড়। ছাত্রজীবনে বাম ধারার রাজনীতি করলেও পরবর্তী জীবনে সক্রিয় রাজনীতি করেননি জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

১৯৭১ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে ভারতের আগরতলায় গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর সেই হাসপাতালের নামেই একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে চেয়েছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে নাম ঠিক করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

সামরিক শাসকদের সময়েই স্বাস্থ্যনীতি, ওষুধনীতি ও নারী শিক্ষা— এমনকি সে সময়ে সহজে দেশের মানুষের জন্য পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে সরকারকে রাজি করানো এবং প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে সরকারকে প্রভাবিত করতে তার ভূমিকা আলোচনায় এসেছে সবসময়।

সমাজসেবার স্বীকৃতি হিসাবে জীবনে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন এই গুণী ব্যক্তি। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখায় ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে ফিলিপাইন সরকারের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার, ১৯৯২ সালে সুইডেনের বিকল্প নোবেল হিসাবে পরিচিত রাইট লাভলিহুড পুরস্কার, ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো’ পুরস্কার এবং মানবতার সেবার জন্য ২০২১ সালে কানাডা থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ২০২২ সালে আহমদ শরীফ স্মারক পুরস্কার এবং পল্লীবন্ধু পুরস্কার পান। সবশেষ গত ১৮ মার্চ সমকাল ও চ্যানেল ২৪-এর ‘দেশের যোদ্ধা বন্ধু সবার’ গুণীজন সম্মাননা লাভ করেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.