The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

জাল সনদ তৈরির সংশ্লিষ্টতা পেলে বোর্ড চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ : ডিবি হারুন

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, ‘জাল সার্টিফিকেট তৈরি চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তদন্তের প্রয়োজনে বাংলাদেশ কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।’ গতকাল শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে আলী আকবর খানের স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে অবস্থিত ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এই কর্মকর্তা।

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন আমরা কাউকে ছাড় দেব না। আমরা এখন পর্যন্ত কাউকে ছাড় দেইনি। এই চক্রের সঙ্গে যত বড় রাঘববোয়াল জড়িত থাক না কেন, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। আমাদের তথ্য উৎপত্তে যদি চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্টতা থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করব। আমরা যেকোনো সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ডাকব।’

ডিবি প্রধান বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের জাল সনদ তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ১ এপ্রিল রাজধানীর পীরেরবাগ এলাকায় একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম এনালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান এবং একই প্রতিষ্ঠানের চাকরিচ্যুত ও বর্তমানে শামসুজ্জামানের ব্যক্তিগত বেতনভুক্ত সহকারী ফয়সালকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

সেদিন দুজনের কাছ থেকে বিপুল জাল সার্টিফিকেট, মার্কশিট, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র এবং শত শত সার্টিফিকেট মার্কশিট তৈরি করার মতো বিশেষ কাগজপত্র, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে চুরি করে নেওয়া হাজার হাজার অরিজিনাল সার্টিফিকেট এবং মার্কশিটের ব্লাঙ্ক কপি, শতাধিক সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট, বায়োডাটাসহ গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদি উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ৫ এপ্রিল কুষ্টিয়ার জেলার সদর থানা এলাকা থেকে গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার কলিকে গ্রেপ্তার করে হয়। গ্রেপ্তার এই তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।

ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের মোবাইলফোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত কামরাঙ্গীরচর হিলফুল ফুযুল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানকে (৪৮) গত ১৮ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান ওরফে মামুন (৪০) গত ১৯ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া সর্বশেষ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী মোছা. শেহেলা পারভীনকে (৫৪) গতকাল (শনিবার) উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, এ কে এম শাসমুজ্জামান ও তার ব্যক্তিগত সহযোগী ফয়সাল গত কয়েক বছরে পাঁচ হাজারের অধিক জাল সার্টিফিকেট মার্কশিট বানিয়ে ভুয়া লোকদের কাছে হ্যান্ডওভার করেছে। একই সাথে সরকারি ওয়েবসাইটে, সরকারি পাসওয়ার্ড, অথরাইজেশন ব্যবহার করে ভুয়া লোকদের মধ্যে বিক্রি করা সার্টিফিকেটগুলোকে বাংলাদেশ সরকারের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে। ফলে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর যেকোনো দেশে বসে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর গুগলে সার্চ করলে তা সঠিক পাওয়া যায়।

ডিএমপির এই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীর তথ্য সংযোজন, বিয়োজন ও পরিবর্তন সংক্রান্ত আবেদন নিবেদনের ফোকাল পারসন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। কোনোক্রমেই সিস্টেম অ্যানালিস্ট বা কম্পিউটার অপারেটররা নয়। সিস্টেম এনালিস্ট বা কম্পিউটার অপারেটরা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রকদের নির্দেশে কঠোর গোপনীয়তা বজায় রেখে সংবেদনশীল এই কাজগুলো করার কথা। কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় শহরে অবস্থিত সরকারি-বেসরকারি কারিগরি স্কুল ও কলেজ, পলিটেকনিকেল ইনস্টিটিউট, সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক, প্রিন্সিপালরা সম্পূর্ণ অবৈধ ও অনৈতিকভাবে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন, রোল নম্বর সৃজন, রেজাল্ট পরিবর্তন, পরিবর্ধন, নাম ও জন্ম তারিখ সংশোধনের তথ্য হোয়াটস অ্যাপে টাকার বিনিময়ে আদান-প্রদান করেছে কম্পিউটার অপারেটর ও সিস্টেম এনালিস্টদের সঙ্গে। এ রকম প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিপরায়ণ ২৫ থেকে ৩০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কিছু দুর্নীতিপরায়ণ সিবিএ দালাল কর্মচারী কর্মকর্তা, কম্পিউটার এবং পরিদর্শন শাখার কর্মকর্তা কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে রেজাল্ট পরিবর্তন, নাম ঠিকানা পরিবর্তন, প্রার্থীদের বয়স পরিবর্তন ও সময়ে অবৈধভাবে রেজিস্ট্রেশন নম্বর, রোল নম্বর প্রদান সংক্রান্ত কাজগুলো করার সিন্ডিকেট বানিয়েছে।’

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.