The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ২২শে অক্টোবর, ২০২৪

জাবিতে অপ্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণ না করার আহবান

জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অপ্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণ করে অর্থ অপচয় না করে অর্থনৈতিক সঙ্কট সামাল দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন,জাবি সংসদ।

শনিবার (১ মার্চ) সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান হৃদয় কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,অর্থনৈতিক সঙ্কট সামাল দিতে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের বরাদ্দ হ্রাসে সরকার উদ্যোগী হওয়া সত্ত্বেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক অপ্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণের তোড়জোড়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ক্ষুব্ধ।

এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি ইমতিয়াজ অর্ণব ও সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায় বলেন, চলতি অর্থ বছরের শুরুর দিকে অর্থনৈতিক সঙ্কটের চাপ সামলাতে দেশব্যাপী চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমূহকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে সরকার। এই প্রক্রিয়ায় বরাদ্দ হ্রাসের মধ্য দিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়ের লক্ষ্য থাকলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক অপ্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণ চলছেই।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯০টি বাসা ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও ইতোমধ্যে ১২০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের জন্য আরো ৬টি আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে এবং এসব ভবনের অধিকাংশই ভবিষ্যতে নিশ্চিতভাবেই ফাঁকা পড়ে থাকবে। তার উপর দুটি প্রশাসনিক ভবন থাকা সত্ত্বেও ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন আরেকটি ভবন নির্মাণে প্রশাসনের যারপরনাই আগ্রহ আমাদের বিস্মিত ও লজ্জিত করে। ডিপিপি’তে তথ্য গোপন করে এই ভবনটি নির্মাণের প্রথম পাঁয়তারায় বাধ সাধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।মন্ত্রণালয়ের সেই সাময়িক স্থগিতাদেশকে পাশ কাটিয়ে সিন্ডিকেটে এই অপ্রয়োজনীয় ভবনটির প্রয়োজনীতা ধার্য করা হয়। যতই সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক না কেনো, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজন জানে তৃতীয় প্রশাসনিক ভবন কতটা অপ্রয়োজনীয় এবং এটি নির্মাণের নতুন পাঁয়তারা দৃশ্যমান হওয়া মাত্রই সকলকে নিয়ে জনগণের অর্থের শ্রাদ্ধ্য আটকে দিতে ছাত্র ইউনিয়ন বদ্ধপরিকর।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, অপূর্ণাঙ্গ নতুন প্রশাসনিক ভবনটি পূর্ণাঙ্গ করে এবং পুরো বিশ্ববিদ্যালয় অটোমেশনের আওতায় আনা ১৩৭ কোটি ব্যয়ের সর্বোত্তম বিকল্প। আমরা মনে করি, শ্রেণিকক্ষের সঙ্কট নিরসনে প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে হবে সবকিছুর আগে। তবে প্রতিটি অনুষদের ভবন সম্প্রসারণ করে জাতীয় অর্থনৈতিক সঙ্কটকালে আরো প্রায় ১২০ কোটি টাকা অপচয় না করা ও পরিবেশ রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। প্রশাসনের মাথায় রাখা উচিৎ যে, নির্মানাধীন লেকচার থিয়েটার কাম এক্সামিনেশন সেন্টারে মোট ৬২টি শ্রেণিকক্ষ থাকবে, যার প্রত্যেকটিতে একসাথে ১০০ জন শিক্ষার্থী বসতে পারবে। আরো থাকবে ১০ টি ল্যাব যা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারবে। থাকবে দুইটি গ্যালারি, যার প্রত্যেকটিতে ২৫০ জন শিক্ষার্থী একসাথে পরীক্ষা দিতে পারবে। সেহেতু একাডেমিক ভবনসমূহের সম্প্রসারণ কতটা জরুরি, তা নিঃসন্দেহে পুনঃবিবেচনা করতে হবে।অবাক করা ব্যাপার, প্রায় ২৫ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে যে সার্কুলার রোড নির্মাণের পরিকল্পনা ডিপিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সেটির যে রুট ঠিক করা হয়েছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পরিবেশ বিনষ্ট হবে এবং বিপুল বন সম্পদ উজাড় হবে। উপরন্তু প্রস্তাবিত রুট মেনে চলাচল করলে গন্তব্যে পৌঁছাতে বর্তমান সময়ের চেয়ে বেশি লাগবে। একাডেমিক ভবনসমূহের মধ্যবর্তী জায়গা দিয়ে এই সার্কুলার রোড নির্মাণের ফলে শিক্ষার পরিবেশও বিনষ্ট হবে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, অপ্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে মেগা প্রকল্পে ব্যয় হ্রাসের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক সঙ্কট সামাল দেয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি। আহ্বান জানাচ্ছি, জহির রায়হান মিলনায়তনের সংস্কার, সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চের উন্নয়ন, আল বেরুনী হলের খেলার মাঠ সংস্কার এবং মেডিকেল সেন্টারের জন্য তিনটি এম্বুলেন্স ক্রয়ের মত প্রশংসনীয়, ইতিবাচক ও শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্তসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের।

এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়,বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ আশা করে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অপ্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণের মধ্য দিয়ে এই দুঃসময়ে জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের অপচয় রোধের ব্যাপারে সরকারও উদ্যোগী হবে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.