The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

গুচ্ছে গেলে ভর্তি পরীক্ষায় কাজ না করার হুশিয়ারি জবি শিক্ষকদের

সাকিবুল ইসলাম, জবি: ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থী ভর্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে কাজ না করার হুশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষকরা।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে এ হুশিয়ারি দেয়া হয়। এসময় একাডেমিক কাউন্সিলে গৃহীত সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবীও জানানো হয়।

মানববন্ধনে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি সংক্রান্ত ৬৪ তম একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, ১৫ মার্চ একাডেমিক কাউন্সিলে ৩৬ টি বিভাগ ও ২টি ইন্সটিটিউটের শিক্ষকদের সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে সভার নোটিশে সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে একাডেমিক কাউন্সিলে গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তবে সিন্ডিকেটে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কিন্তু সভায় এমন কোনো সিদ্ধান্তই নেয়া হয়নি। শুধু গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তাই একাডেমিক সভার সিদ্ধান্তের নোটিশ পরিবর্তন করতে হবে।

এসময় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে আছে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সেটিকে দীর্ঘায়িত করছে। এটি আমরা মেনে নিতে পারিনা। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে তুচ্ছ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শুরুর সময়ে একাডেমিক কার্যক্রম যে অবস্থায় ছিল এখন আবার সেই অবস্থায় ফিরে এসেছে।

একাউন্টটিং বিভাগের অধ্যাপক শওকত জাহাঙ্গীর বলেন, গুচ্ছে থাকার কোনোভাবেই আর কোনো যুক্তি নেই। ভর্তি সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের কোনো ধারাতেই একাডেমিক কাউন্সিলের বাহিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। পরবর্তীতে আমাদের দাবি মানা না হলে শিক্ষক সমিতি যে কর্মসূচিই গ্রহণ করবে আমরা সবাই সেটিতে অংশগ্রহণ করবো।

ইতিহাস বিভাগ অধ্যাপক ড. সেলিম বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার যে আইনগত ভিত্তি প্রয়োজন সেটি নেই, এমনকি তার কোনো পরিকল্পনাও নেই। এমনকি এ পরীক্ষা যে নেয়া হচ্ছে সেটিরও আইনত বৈধতা নেই। কেননা জাতীয় সংসদে স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নিজস্ব আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন রয়েছে। সেই বিধিমালা অনুযায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার এখতিয়ার রয়েছে৷ কিন্তু সেই বিধি লঙ্ঘন করে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে৷

বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও সিন্ডিকেট সদস্য হোসনেয়ারা জলি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে উত্তপ্ত না করে আমরা যারা সরকার দলীয় লোক তারা আগামী নির্বাচনের দিকে মনোনিবেশ করি৷ তারপর দেখা যাবে। আমরা ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কেউই গুচ্ছের পক্ষে নই।

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম লুৎফর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তো একটি আইন আছে। আইনে বলা আছে ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। কিন্তু এখন শুনি সিন্ডিকেটে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। যা আইনের পরিপন্থী।

মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কক্ষে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি নেয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন ও সিন্ডিকেট সভার আহ্বান জানিয়ে অবস্থান নেন শিক্ষকরা। পরবর্তীতে শিক্ষকদের দাবির মুখে একাডেমিক কাউন্সিলের সভার সিদ্ধান্তের নোটিশ পরিবর্তন করা হয়।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, আগামী একাডেমিক কাউন্সিলে নিজস্ব পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হবে উপাচার্য আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, আগামী ৮ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভা। এর আগে কিছু বলা যাচ্ছে না। ওই সিন্ডিকেট সভায় সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

মানববন্ধনে শিক্ষকদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মাচারীরাও উপস্থিত ছিলেন। এসময় প্রায় চার শতাধিক শিক্ষকের সঙ্গে শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারীরারা গুচ্ছে বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়।

এর আগে গত ১৫ মার্চ বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিলে গুচ্ছে না থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর গত ১৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতি নিজস্ব পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার জন্য দ্রুত কার্যক্রম শুরু করার জন্য উপাচার্য বরাবর চিঠিও দিয়েছিল। ২৯ মার্চ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তিতে গুচ্ছপদ্ধতি থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় ফিরে আসার জন্য চারদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.