The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পরীক্ষার ৬ মাস পেরোলেও প্রকাশ হয়নি ফলাফল!

কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পরীক্ষা বিধিমালা অনুসারে সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের জন্য ৮ সপ্তাহ এবং ফাইনাল পরীক্ষার জন্য ১০ সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক পরীক্ষার ছয় মাস পরও হয়নি ফলাফল প্রকাশ। শিক্ষকদের অবহেলার কারণেই ফল প্রকাশ হচ্ছেনা বলে জানান শিক্ষার্থীরা। ফলে বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষার আবেদন করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বিভাগের মধ্যে ১০ বিভাগের স্নাতকের ফলাফল প্রকাশ হলেও ৭ বিভাগের ফলাফল এখনো প্রকাশ হয়নি। ফলাফল প্রকাশ না হওয়া বিভাগগুলো প্রত্নতত্ত্ব, ইংরেজি, গণিত, আইন, পদার্থ বিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান ও পরিসংখ্যান বিভাগ।

এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী জানান, স্নাতকের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পরীক্ষাসহ সব কিছু শেষ করেছি ডিসেম্বর ২০২৩ এ কিন্তু ৫ মাসের অধিক সময় পার হলেও আমাদের ফলাফল দেওয়া হচ্ছে না। পরীক্ষা কমিটির সভাপতি কে একাধিকবার বলার পরেও উনি আমাদের কোন কথা আমলে নিচ্ছেন না। এমনিতেই আমাদের করোনা সময়ের জট রয়েছে। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ হিসেবে ২০২২ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলে এখন ২০২৪ সাল। চাকরির পরীক্ষার আবেদন করতে পারছি না, পরীক্ষার ফলাফল এর জন্য। আমরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে খবর নিয়েছি স্যার এখনো পরীক্ষা ফলাফল সেখানে জমা দেননি, এটা খুবই দুঃখজনক।

পরিসংখ্যান বিভাগের অন্য একজন শিক্ষার্থী জানান, আমাদের সাথে পরীক্ষা দেওয়া অন্য সব ডিপার্টমেন্ট রেজাল্ট পেয়ে গেছে অথচ আমরা পাই নাই। অবশ্যই এটা আমাদের উপর অনেক বাজে প্রভাব পড়তেছে, শুধু মানসিক না সব দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, না পারছি কোন চাকরিতে এপ্লাই করতে, না পারছি বাইরে হায়ার স্টাডিজ এর জন্য এপ্লাই করতে। মনে হচ্ছে জীবনের সব থেকে বড়ো ভুল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে। সামনে বড় বড় কয়েকটা সরকারি সার্কুলার আসছে মনে হয় না ওগুলোতে এপ্লাই করতে পারবো।

বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সাথে কথা বললে তারা জানান বর্তমান সংকটই চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ বিলম্বিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাছান খান জানান, আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত ফল প্রকাশ করার। শিক্ষার্থীদের ইমপ্রুভমেন্ট রেজাল্ট পেতে একটু সময় লাগছে যার কারণে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করতে দেরি হচ্ছে। ঈদের বন্ধের আগে আমরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে ফলাফল জমা দিয়ে দিবো।

পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আফরিনা আক্তার মিশু বলেন, স্নাতক চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করতে হলে সব সেমিস্টারে ফলাফল প্রয়োজন। আমাদের শিক্ষার্থীদের ইমপ্রুভমেন্টের রেজাল্ট পেতে সময় লেগেছে। তাই চূড়ান্ত ফলাফলে একটু দেরি হয়েছে। আজ আমরা ফলাফল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরে পাঠিয়ে দিবো। কবে ফলাফল প্রকাশ এটা তো আমার হাতে থাকবে না। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে বলতে পারবে।

স্নাতক চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ বিলম্ব কেন হচ্ছে এমন প্রশ্নে ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. বনানী বিশ্বাস বলেন, প্রায় দেড়, দুই মাস আগে পরীক্ষার ফলাফল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। এখন কবে ফলাফল প্রকাশ হবে এটা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী বলেন, অনেক সময় শিক্ষকরাও সঠিক সময়ে খাতা জমা দিতে পারেন না, তখন তাদেরকে ব্যাপারটা আমরা জানাই। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় একটা সংকট চলছে শিক্ষকরাও ক্যাম্পাসে কম আসছেন তাই এখন চাইলেও আমরা তাদেরকে বলতে পারছি না। রেগুলার রেজাল্টগুলোও দেরিতে জমা দেওয়া হচ্ছে ফলে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের সঠিক সময় বিলম্বিত হচ্ছে।

সার্বিক বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির বলেন, একটা বিভাগের রেজাল্ট কোন পর্যায়ে আছে, খাতা দেখা হয়েছে কিনা, রেজাল্ট তৈরি কোন অবস্থায় এগুলো না জেনে তো আমি বলতে পারবো না। তবে যে রেজাল্টগুলো আমাদের কাছে আসছে সেগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় দ্রুত আমরা অনুমোদন দিয়ে দিচ্ছি। রেজাল্ট জমা না পড়লে আমাদের করার কিছু নাই। সঠিক সময়ে ফলাফল না দিতে পারলে তো সকল শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতি হচ্ছে। এক মাস যাবত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এটা তো কারোর কাছে কাম্য না।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.