The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

উচ্চশিক্ষায় এআইইউবির ২৮ বছর

আফিফ আইমানঃ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) প্রতিষ্ঠার ২৮ বছর পূর্ণ করেছে চলতি নভেম্বরে। এই দীর্ঘ যাত্রায় এআইইউবি থেকে ৩২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাঁরা চাকরি, ব্যবসা, ক্রীড়াসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন।

‘প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট, ১৯৯২’-এর অধীনে ১৯৯৪ সালে ড. আনোয়ারুল আবেদীন এআইইউবি প্রতিষ্ঠা করেন। রাজধানী ঢাকার কুড়িলে প্রায় আট একর জমিতে এআইইউবির স্থায়ী ক্যাম্পাস অবস্থিত।

বর্তমানে এআইইউবিতে চারটি অনুষদ রয়েছে। এগুলো হলো—প্রকৌশল অনুষদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ, বাণিজ্য অনুষদ, কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদ। এসব অনুষদের অধীনে বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। বিভাগগুলো থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভাষাশিক্ষা, এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্কিং, সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ডিজাইনিং, অ্যানিমেশন, প্রোগ্রামিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ইমার্জিং টেকনোলজির ওপর এআইইউবি সংক্ষিপ্ত কোর্স করায়।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে দেশি-বিদেশি প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন। উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক আছেন প্রায় পাঁচ শ। এআইইউবিতে এখন পর্যন্ত ২০টি সমাবর্তন হয়েছে। সমাবর্তনে মেধাবী শিক্ষার্থীদের চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড, ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড ও ড. আনোয়ারুল আবেদীন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। আছে একাধিক অ্যাকাডেমিক পুরস্কারের ব্যবস্থা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, ইতালি, স্পেন, মেক্সিকো, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এআইইউবির অ্যাকাডেমিক অংশীদারত্ব রয়েছে। প্রায় প্রতি সেমিস্টারেই এআইইউবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিদেশে উচ্চশিক্ষা বিনিময় কার্যক্রমে অংশ নেন।

উচ্চশিক্ষায় অবদানের জন্য ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিজ উইথ রিয়েল ইমপ্যাক্ট র‌্যাঙ্কিং ২০২২-এর তালিকায় এআইইউবি স্থান পেয়েছে। এ ছাড়া কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিং, টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিং, সিমাগো ইনস্টিটিউশন র‌্যাঙ্কিংয়ে এআইইউবির নাম রয়েছে। মানসম্মত উচ্চশিক্ষায় অবদানের জন্য আইএসও ৯০০১: ২০০৮-সহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে এআইইউবি।

এআইইউবি নিয়মিত আন্তর্জাতিক মানের ‘এআইইউবি জার্নাল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকস’ ও ‘এআইইউবি জার্নাল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’ প্রকাশ করে আসছে। এআইইউবিতে রয়েছে সেন্টার ফর সাসটেইনেবল এনার্জি রিসার্স, সেন্টার ফর ন্যানো টেকনোলজি রিসার্চ, সেন্টার ফর বায়োমেডিকেল রিসার্চ, সেন্টার ফর রোবোটিকস অ্যান্ড অটোমেশন, বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টার।

বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটিং অ্যাডভান্সমেন্ট, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট, রোবোটিকস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড সিগনাল প্রসেসিং টেকনিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে এআইইউবি নিয়মিত আন্তর্জাতিক কনফারেন্স-সেমিনার আয়োজন করে আসছে।

সিসকো নেটওয়ার্ক একাডেমি, ওরাকল একাডেমি, মাইক্রোসফট, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনসহ এআইইউবির অনেক অংশীদার রয়েছে।

এআইইউবির ক্যাম্পাসটি সবুজে ঘেরা। এখানে আছে মাল্টিমিডিয়াসহ আধুনিক শেণিকক্ষ। রয়েছে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক গ্রন্থাগার। এই গ্রন্থাগারে একত্রে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী পড়তে পারেন। গ্রন্থাগারে প্রায় ৪৪ হাজার বই আছে। আছে ৬৯ হাজার অনলাইন জার্নাল, লাখো ই-বুকসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১৬টি ক্লাব রয়েছে। আছে কম্পিউটার ল্যাব, ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাব, ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব, ফিজিক্স ল্যাব, কেমিস্ট্রি ল্যাব, থ্রি–ডি অ্যানিমেশন ল্যাব, আইপি ল্যাব। মুট কোর্ট, স্থাপত্য স্টুডিও, মিডিয়া স্টুডিও। অত্যাধুনিক মাল্টিপারপাস হল, অডিটরিয়াম, ক্যাফেটেরিয়া ও ফুড কোর্ট আছে। আছে একটি বিশ্বমানের মেডিকেল সেন্টার। একটি অত্যাধুনিক জিমনেসিয়াম। বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য পৃথক প্রার্থনার স্থান। ২৪ ঘণ্টা ইন্টারনেট ওয়াই–ফাই সার্ভিস। ফুটবল-ক্রিকেট মাঠ, বাস্কেট বল কোর্ট, টেনিস কোর্ট, ভলিবল কোর্ট, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, ইনডোর গেমসের স্থান।

এআইইউবির বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন খেলাধুলায় সুনাম কুড়িয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন কুমার দাস, তাসকিন আহমেদ, সাব্বির রহমান, মমিনুল হক, আফিফ হোসেন, আবু হায়দার রনি, এনামুল হক বিজয়, আকবর আলী প্রমুখ। এ ছাড়া আছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সানজিদা আক্তার, মণিকা চাকমা, কৃষ্ণা রানী সরকার, মিশরাত জাহান মৌসুমী।

এআইইউবির সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের জাহেদ পারভেজ, ফয়সাল মাহমুদ, গুগলের প্রথম বাংলাদেশি প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার (পরিচালক) জাহেদ সবুর। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানিতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপালন করছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।

একবিংশ শতাব্দীর বাজার–চাহিদার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তিভিত্তিক সর্বোচ্চ গুণগত মানের উচ্চশিক্ষার প্রসারে এআইইউবি অঙ্গীকারবদ্ধ। এআইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইশতিয়াক আবেদীন বলেন, ‘২৮ বছর ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয় আগামীর নেতৃত্ব গড়তে নিরলসভাবে কাজ করছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.