The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

ইদের ছুটিতে নাড়ীর টানে বাড়ি মুখী শিক্ষার্থীদের অনুভূতি

আরিফ হোসাইন, ববিঃ মা, মাতৃভূমি ও প্রিয় মানুষগুলোর প্রতি মানুষের ভালোবাসার যেন অন্ত নেই। সেই ভালোবাসা থেকে গাজী মাজহারুল ইসলাম বলেছেন-
একবার যেতে দেনা আমায় ছোট্ট সোনার গাঁয়
    যেথায় কোকিল ডাকে কুহু
দোয়েল ডাকে মুহু মুহু
    নদী যেথায় ছুটে চলে আপন ঠিকানায়।।

 

ইদ মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ইসলাম ধর্মাবলম্বী বা মুসলমানদের মাঝে ইদ খুবই আনন্দের এবং ধর্মীয় দিক থেকেও তাৎপর্যময়। দীর্ঘ একমাস রমজানের পর আসে ইদ-উল ফিতর।ইদু-উল ফিতরকে ঘিরে মুসলমানদের মাঝে উৎসাহ – উদ্দীপনাও কম নয়। ইদকে উদ্দেশ্য করে কেনা কাটা  করে সবাই। শিশুরা নতুন  জামাকাপড় পেয়ে মহা খুশিতে থাকে। রমজান আসলেই অপেক্ষা করতে থাকে ইদের দিনের মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য,ইদের দিন সবার থেকে সালামি নিতেও ভুল করে না।

এসবের মাঝে পরিবার থেকে দূরে থাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে যেন ইদের আনন্দ একটু বেশিই দেখা যায়। আবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ দিলেও টিউশনির জন্য বাড়িতে যেতে না পারা শিক্ষার্থীদের দীর্ঘশ্বাসও আছে।

এই নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ আরিফ বলেন, দীর্ঘদিন পর সবাই পরিবারের কাছে যেতে পারতেছি। আমার খুবই লাগতেছে। পরিবারের লোকজনও আমার জন্য অপেক্ষা করতেছে। মা- বাবা, ছোট ভাইবোন কয়েকদিন থেকেই ফোন দিতেছি কখন বাড়িতে যাবো।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী জাকির হোসেন হৃদয় বলেন,আমার বাসা সিলেটের হবিগঞ্জ। আমি দীর্ঘ ১ বছর পরে বাড়িতে যাচ্ছি। বাসা থেকে কয়েকদিন আগে থেকেই ফোন দিয়ে বলতেছে, বাড়িতে আসবি কখন।যখন বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশে রওয়ানা দেই তখন মনের মধ্যে অনেক আনন্দ আসে, বাড়ির আত্মীয় স্বজন,  বাবা মার সাথে থাকবো এইভাবে অনেক আনন্দ পাই।

ববি’র শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার শবনম বলেন, বাড়িতে যাওয়ার আনন্দই আলাদা। আর সেটা ইদের ছুটিতে হলে তো কথাই নেই। পরিবারের সবার সাথে ইদ উৎযান খুবই আনন্দদায়ক। বাসার সবাই ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা নিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করতেছে।

সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থী দেবশ্রী দেবনাথ বলেন, আমি অন্য ধর্মের হলেও সবার সাথে আমিও ইদের ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছি। বাড়িতে যেতে পারায় আমারও খুবই ভালো লাগতেছে। আমাকে আমার অনেক বন্ধু ইদের দাওয়াত দিয়েছে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১ম বর্ষের  শিক্ষার্থী রিফাত খন্দকার বলেন,প্রতি বছরের ইদের তুলনায় এই ইদের অনুভূতিটা ভিন্ন। স্কুল জীবন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আকাঙ্খা ছিল।সেই স্বপ্ন ও  আকাঙ্খা এবার সত্যি হলো।পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে এই প্রথমবার ইদের ছুটিতে  বাড়িতে যাচ্ছি,ভাবতেই কেমন যেন ভালো লাগছে।

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান  সিফাত বলেন,   সারাদিনের জমজমাট ক্যাম্পাসটাও আজ নিরব,চারিদিকে শুধু হাহাকার।
দূর থেকে শুধু ভেসে আসে  দু-একটা পাখির কলরব।

আমি ব্যালকুনিতে দাড়িয়ে, হঠাৎ চোখ বিদ্ধ হলো চত্বর গুলোর উপর। যেখানে, সারাদিন গানের আড্ডা হতো, গলা ছেড়ে গাইতো ঝাঁকেঝাঁকে প্রান। আজ সেই প্রিয় জায়গাটাও যেন বিষাক্ত, কখন কে কিভাবে ছেড়ে পালাবে তার প্রতিযোগিতা চলছে। কেউ ছুটছে রাতে কেউ বা মধ্যে রাতে কেউ সারাটি রাত নির্ঘুম কাটিয়ে দিচ্ছে কখন সকাল হবে?

এভাবেই ক্ষনে ক্ষনে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে সাহারা মরুভূমির মাঝে হাজারো স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরা আমার স্বপ্নের প্যারাডাইস। কিন্তু আমার তো টিউশনি আছে,আমার তো ২৫/২৬ রমজানের আগে যাওয়া সম্ভব নয়।

এতোসব আনন্দ, অনুভূতির মাঝে কিছু শিক্ষার্থীর পড়ালেখাসহ বিভিন্ন কারণে বাড়ি ফেরা হবে না। তাদের মনে কতই না আক্ষেপ !

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.