শিরোনাম
রাজধানীর সাইন্সল্যাবে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ কর্মসূচি
প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ এবং নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখার প্রচেষ্টায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় সাইন্সল্যাব অবরোধ করেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে সাইন্সল্যাব এলাকা অবরোধ করেন তারা। ঢাকা কলেজের ঐতিহ্যবাহী ইন্টারমিডিয়েট শ্রেণী অক্ষুণ্ণ রাখার দাবিতে তারা এ অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করা ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের দাবির জায়গাটা হচ্ছে ঢাকা কলেজের অস্তিত্ব। ঢাকা কলেজ যেভাবে আছে,কিয়ামত পর্যন্ত সেভাবেই থাকবে। সে খসড়াটা (সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের) প্রকাশ হয়েছে সেটা আমরা দেখেছি, আমরা পর্যালোচনা করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকা কলেজের ১৮৪ বছরের ইতিহাস। সেই ইতিহাসে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ব্যাক্তিবর্গ আছেন, আমরা তাদের সাথে কথা বলেছি, এমনকি সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত গিয়েছি, আইনজীবীদের সাথে কথা বলেছি।
তারা বলেছে এই অধ্যাদেশে যদি বিশ্ববিদ্যালয় হয়, এখন ঢাকা কলেজে ইন্টারমিডিয়েট যেভাবে আছে হয়তো ৫ বছর, ১০ বছর সেটা থাকবে। কিন্তু ভবিষ্যতে এই জিনিসটা থাকবে না।’
ইন্টারমিডিয়েটের গুরুত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা কলেজের ঐতিহ্য যেভাবে ইন্টার মিডিয়েট দিয়ে শুরু হয়েছে, কিয়ামত পর্যন্ত ইন্টারমিডিয়েট দিয়েই শেষ হবে।’
ঢাকা কলেজের ঐ শিক্ষার্থী আরো বলেন, ‘একটা বলয় চেষ্টা করতেছে এই ধরণের বিশ্ববিদ্যালয় মডেল দিয়ে ঢাকা কলেজে ইন্টারমিডিয়েট বিলীন করে দেবার। আমরা ঢাকা কলেজে ইন্টারমিডিয়েট বিলীন হতে দিব না। আমাদের ইন্টারমিডিয়েটের অস্তিত্ব আছে, থাকবে।’
সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির মডেলের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘কিন্তু যারা এই মডেলের বিশ্ববিদ্যালয় চাইছে, তাদের জায়গা থেকে তারা চাইতেই পারেন। কিন্তু এই মডেলের বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা ঢাকা কলেজে হবে না।’
এস এম মঈন, সরকারি বাঙলা কলেজ প্রতিনিধি
রাবি ছাত্রলীগকর্মী হত্যা মামলায় জামায়াত-শিবিরের সব আসামি খালাস
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। রোববার দুপুর ২টার দিকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক জুলফিকার উল্লাহ চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন কেন্দ্রীয় আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, রাজশাহী মহানগরের তৎকালীন আমির আতাউর রহমানসহ ১১৪ জন আসামি ছিলেন।
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, ‘সাক্ষ্য-প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত সবাইকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।’
তিনি জানান, মামলার ১১৪ জন আসামির মধ্যে ৯ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। ১০৫ জন জীবিত আছেন। রায় ঘোষণার সময় ২৫ আসামি উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা অনুপস্থিত ছিলেন।
ফারুক হোসেন রাবির গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে হল দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষ হয়। এতে ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন নিহত হন। তার লাশ ম্যানহোলে পাওয়া যায়।
ঘটনার পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে ৩৫ জন জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে মহানগরীর মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর প্রায় আড়াই বছর পর ২০১২ সালের ২৮ জুলাই পুলিশ আদালতে ১ হাজার ২৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা ছাড়াও রাবি ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ, সম্পাদক মোবারক হোসেন, নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাসমত আলী, শহীদ হবিবুর রহমান হলের সভাপতি রাইজুল ইসলামসহ ১১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। দীর্ঘদিন পর অবশেষে এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
রায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, রায়ে খুশি-অখুশি এখনই বলা যাবে না। আগে রায়টা দেখি, তারপর। তবে মামলাটা করার সময় প্রকৃত আসামিদের আড়াল করে রাজনৈতিক কারণে অন্যদের আসামি করা হয়েছিল।
৬ দেশে ইন্টার্নশিপে যাচ্ছেন বাকৃবির ৫০ শিক্ষার্থী
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের ২২তম ইন্টার্নশিপ ব্যাচের ইন্টার্নশীপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবছর বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের আরও ছয়টি দেশে ৫০ জন শিক্ষার্থী ইন্টার্নশিপের সুযোগ পেয়েছে। সবমিলিয়ে ১৯৩ জন ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী এবারের ইন্টার্নশিপে অংশ নিচ্ছেন।
জানা যায়, দেশের বাইরে ৫০ জন শিক্ষার্থী সুযোগ পেয়েছে, যার মধ্যে থাইল্যান্ডে ৩৩, মালয়েশিয়া ১০, জাপান ২, ইন্দোনেশিয়া ৩, জার্মানি ১ ও নেপাল ১ জন ইন্টার্নশিপের সুযোগ পেয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের ১৫টি স্থানে এই ইন্টার্নশীপ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
ইন্টার্নশিপ উপলক্ষ্যে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) দুপুর তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়।
ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো আবদুল মজিদ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের অ্যাগ্রোভেট ও ক্রপ কেয়ার ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার জয়ন্ত দত্ত গুপ্ত। এচাড়া ভেটেরিনারি অনুষদের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্নশীপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, তোমরা যেখানেই যাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবে। একসময় মাঠপর্যায়ের কাজ বা ইন্টার্নশিপের তেমন সুযোগও ছিল না। কিন্তু আজ তোমরা সেই সুযোগ পেয়েছো। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও ইন্টার্নশীপের সুযোগ তোমাদের সামনে উন্মুক্ত হয়েছে। এই সুযোগটি কোনো কাকতালীয় বিষয় নয়। এর পেছনে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরলস পরিশ্রম, শিক্ষকদের ত্যাগ এবং দেশের মানুষের করের টাকায় গড়ে ওঠা এক বিশাল বিনিয়োগ। তাই এই সুযোগের যথাযথ মূল্যায়ন করো।
তিনি আরও বলেন, তোমাদের প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি কাজ যেন শেখার, অবদান রাখার এবং দেশের জন্য কিছু করার হয়ে ওঠে। এই ইন্টার্নশীপ তোমাদের পেশাগত জীবনের ভিত্তি গড়ে দেবে। তাই একে শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, দায়িত্ব ও গৌরবের অংশ হিসেবে গ্রহণ করো।
শিক্ষা ভবন অভিমুখে লং মার্চের ডাক দিলেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে এবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারির দাবিতে আগামী সোমবার (১৩ অক্টোবর) ‘লং মার্চ টু শিক্ষা ভবন’ শীর্ষক কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) মধ্যরাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তাদের দাবি, বহুল প্রতীক্ষিত অধ্যাদেশ অবিলম্বে জারি করতে হবে। নয়তো আন্দোলন আরও তীব্র হওয়ার হুঁশিয়ারী প্রদান করেন তারা।
নিজেদের আন্দোলনকে শুধু দাবি নয় বরং নিজেদের অস্তিত্বের লড়াই উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের ইতিহাসে এমন সুশৃঙ্খল, পরিকল্পিত ও পরিণত আন্দোলন আগে দেখা যায়নি। আমরা আমাদের শেষ পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।’
শিক্ষাভবন অভিমুখে লং মার্চ নিয়ে সরকারি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী শাওন আহমেদ সৈকত বলেন, ‘বিগত ১টা বছর যাবৎ একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে দিনরাত পার করা শিক্ষার্থীরা এখন তাদের শিক্ষাজীবনের নিশ্চয়তা চায়। লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন নিয়ে রাষ্ট্র যেই সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেই সিদ্ধান্ত রাষ্ট্র ঘোষণা করুক। আমাদের ১৩ তারিখের কর্মসূচীর একমাত্র উদ্দেশ্য অধ্যাদেশ আদায়, এর বাহিরে আর কোনো ধরনের প্রত্যাশা আমাদের নেই।’
সাত কলেজের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর আন্দোলনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কলেজটির ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মুত্তাকি বিশ্বাস বলেন, ‘অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই শিক্ষা সিন্ডিকেটের দৃশ্যমান ও অদৃশ্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। খসড়া প্রকাশের পর মতামত দেওয়ার জন্য ৭ কর্মদিবস সময় নির্ধারণ করা হলেও সেই সময়সূচি আবার বাড়ানো হয়। ৯ অক্টোবর মতামত দেওয়ার সময় শেষ হলেও আমরা আশঙ্কা করছি অধ্যাদেশ জারির পথে বাধা সৃষ্টি করতে সেই মহলের নেপথ্য কার্যক্রম এখনও চলমান।’
তিনি বলেন, ‘এ ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার একমাত্র উপায় হলো দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করা। কারণ এই অনিশ্চয়তার কারণে শিক্ষার্থীরা এখন স্বাভাবিকভাবে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছে না। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছি, অধ্যাদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
শিক্ষার্থীদের আশা, যত দ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারি করে তাদের পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে রাষ্ট্র তাদের সহায়তা করবে।
বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে নোবিপ্রবি নোবিপ্রবি
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) প্রথমবারের মতো বিশ্বখ্যাত টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) কর্তৃক প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০২৬’-এ স্থান করে নিয়েছে। এই মাইলফলক অর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের মধ্যে ১২তম অবস্থানে রয়েছে এবং বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান ১২০১ থেকে ১৫০০-এর মধ্যে। প্রথমবারেই এমন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবাই উচ্ছ্বসিত।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) টিএইচই তাদের ওয়েবসাইটে ২০২৬ সালের র্যাঙ্কিং প্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানদণ্ড হিসেবে এই র্যাঙ্কিং তালিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।
এই অর্জনটি নোবিপ্রবির জন্য এক বিশেষ গুরুত্ব বহন করে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আগে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে স্থান পাওয়ার জন্য তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ বা আলাদা দপ্তর ছিল না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতি বছরই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত হতো। তবে, গত বছর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত নতুন প্রশাসন ‘নোবিপ্রবি র্যাঙ্কিং এন্ড স্ট্র্যাটেজি সেল’ নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর প্রতিষ্ঠা করে। এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এই নতুন উদ্যোগের ফলশ্রুতিতেই নোবিপ্রবি আজ এই বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জন করলো।
র্যাঙ্কিংয়ে প্রথমবারেই বাজিমাত করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা বেশ আশাবাদী। ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন এটিকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য একটি 'বড় অর্জন' হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, “তুলনামূলকভাবে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান হয়েও নোবিপ্রবি এই অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। সারাবিশ্বে গবেষণার ক্ষেত্রে আমরা ৭২২তম অবস্থানে রয়েছি, যা আমাদের গবেষণার উন্নত মানকে স্পষ্ট করে। এই র্যাংকিংয়ের ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা স্কলারশিপ, ফান্ডিং ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আরও বেশি সুযোগ সুবিধা পাবেন। বিদেশে এখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বললে গর্বের সাথে বলা যাবে যে এটি বিশ্বের ১২০০ থেকে ১৫০০-এর মধ্যে অবস্থান করছে।”
এই অর্জন নিয়ে উচ্ছ্বাস থাকলেও শিক্ষার্থীরা র্যাঙ্কিং-এর পাশাপাশি মৌলিক সমস্যা সমাধানেও প্রশাসনের ইতিবাচক ভূমিকা দেখতে চান। এ বিষয়ে বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জাহেদুল হক বলেন, “কোনো ইউনিভার্সিটির শিক্ষার মান শুধু বিশ্ব র্যাংকিং দেখে বুঝা যায় না। আমাদের মোট শিক্ষার্থীর কতো শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ক্যারিয়ার জীবনে ভালো করলো, এটা ফোকাসে রাখা উচিৎ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিৎ ক্যারিয়ারমুখী কোর্স বাধ্যতামূলক করে দেওয়া। র্যাংকিং নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি মৌলিক বিষয়াবলি যত উন্নত করা যাবে, সেটা র্যাংকিংয়ের অগ্রগতিতেও সহায়ক ভূমিকা রাখবে।”
র্যাঙ্কিং প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু থেকেই যুক্ত থাকা নোবিপ্রবি র্যাঙ্কিং এন্ড স্ট্র্যাটেজিক ডেভেলপমেন্ট সেলের অতিরিক্ত পরিচালক ও ফার্মেসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফাহাদ হোসাইন জানান, নতুন দপ্তর হিসেবে আমাদের কাছে ডেটা গোছানো ছিল না। আমরা অতি অল্প সময়ের মধ্যে যতটুকু ডেটা সংগ্রহ করতে পেরেছি, সেটাই এপ্রিল মাসে জমা দিই। যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় এক্সপার্ট লোক নিয়োগ করে, সেখানে আমরা নিজেদের লোকাল সাপোর্ট নিয়ে এই কাজ করেছি।”
তিনি আরও বলেন, এই স্বীকৃতির সবচেয়ে বেশি সুফল ভোগ করবে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা, যারা উচ্চতর গবেষণায় ভালো প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পাবেন।
নোবিপ্রবি র্যাঙ্কিং এন্ড স্ট্র্যাটেজিক ডেভেলপমেন্ট সেলের পরিচালক ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল হক অত্যন্ত আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, আমরা যতটুকু আশা করিনি তার চেয়েও বেশি ফলাফল পেয়েছি। তবে এটা মাত্র শুরু, অনেক পথ বাকি। আমাদের স্বপ্ন হচ্ছে নোবিপ্রবিকে বাংলাদেশে সেরা পাঁচটি এবং বিশ্বে সেরা ১০০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দেখতে পাওয়া। আশা করি সবার সহযোগিতায় আমরা তা অর্জন করতে পারবো।”
নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা চমক দেখাতে পেরেছি।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলের সহযোগিতায় এই অবস্থানে আসতে পেরেছি। আমাদের সামনে অনেক দূর যেতে হবে। এক্ষেত্রে এলাকাবাসী সহ সকল অংশীজনদের আমরা চাই। যেহেতু আমরা গবেষণায় ভালো করেছি কিন্তু কিছু বিষয়ে পিছিয়ে আছি। যে বিষয়গুলোতে পিছিয়ে আছি সেগুলিতে উন্নতি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আবেদন করবো। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়নে জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবো।”
এবারের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের মোট ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। যার মধ্যে ২২টি সরাসরি র্যাঙ্কিংয়ে এবং বাকি ছয়টি রিপোর্টার ক্যাটাগরিতে জায়গা করে নিয়েছে। শিক্ষার মান, শিক্ষার্থী-শিক্ষকের অনুপাত, গবেষণার মান, সাইটেশন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীসহ কয়েকটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে টিএইচই এই র্যাঙ্কিং প্রকাশ করে।
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত


মন্তব্য