The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষায় প্রস্তুতি, আত্মবিশ্বাস ও পরিবারের উৎসাহ

জান্নাতুল মাওয়া লিশাঃ সম্প্রতি শেষ হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা। পরীক্ষা ভালো না হলে মন খারাপ হওয়া স্বাভাবিক। মনে হয় যেনো আমার সবশেষ। আমার একটু একটু করে গড়ে তোলা স্বপ্নের সেই আলিশান বাড়ি এক ধাক্কায় ভেঙ্গে পড়ে গেছে কিন্তু বাড়ি যদি মজবুত হয় তাহলে একটা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এর পর সেটা ভাঙতে পারে না। হয়তো কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। তবে সেই ক্ষতি থেকে বের হয়ে আসতে এখনও যতটুকু সময় আছে সেই সময়ের উপর্যুক্ত ব্যবহার করে স্বপ্নের বাড়িটা মেরামত করতে হবে। এই মুহূর্তে এই বাড়িটা হলো আপনার আত্মবিশ্বাস। যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে পালায় ভীতু কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার ইচ্ছা নিয়ে যারা ময়দানে নামে তারা কখনো ভীরুতার আশ্রয় নিতে পারে না।

“বিশ্ববিদ্যালয়” মানে হাজারো শিক্ষার্থীর কাছে নির্ঘুম রাত, অক্লান্ত পরিশ্রম আর এক আকাশ সমান আবেগ। শিক্ষা জীবনের বীজ বপণের সময় থেকেই ধীরে ধীরে আবেগটা তৈরি হয়। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এরপর চূড়ান্ত লড়াই হয়ে সামনে আসে ভর্তি পরীক্ষা। রাতের পর রাতের আয়েসের ঘুম নিমিষেই হার মেনে নেয় এই আবেগের কাছে। স্বল্প সময়ে দীর্ঘ প্রস্তুতির দিন পার করতেই কড়া নাড়ে পরীক্ষা। ইতিমধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে যারা ভালো ভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়নি, তাদের এটা মনে হতে পারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এত সহজ প্রশ্নে আমি ভালো পরীক্ষা দিতে পারলাম না তাহলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কিভাবে ভালো ফলাফল করবো! কিন্তু না, নিজেকে শক্ত রাখতে পড়াশোনার প্রস্তুতির পাশাপাশি এখন নিতে হবে মানসিক প্রস্তুতি। নিজেকে এমনভাবে শক্ত করে গড়ে তুলতে হবে যেন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোরগোড়ায় ভর্তির কাগজ নিয়ে না পৌঁছানো পর্যন্ত হাল ছাড়া যাবে না। নিজের পড়াশোনার জন্য কান টা ব্যাবহার করুন , আশপাশের মানুষ কি বললো কি নিয়ে হাসি ঠাট্টা করলো সেটা শুনে কান পরিশ্রান্ত করা থেকে বিরত থাকতে হবে । যারা যুদ্ধের ময়দানে আত্মবিশ্বাস নিয়ে অংশগ্রহণ করে তাদের দমিয়ে রাখা যায় না জয় তাদের নিশ্চিত। এই সময় পরিবারের উৎসাহ টা ভীষণ প্রয়োজন কারণ পরিবারও যদি ভেবে নেয় আর সম্ভব না বা তোমার দ্বারা আর কিছু হবে না এই বাক্যটা একবার উচ্চারণ করলে পরীক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়। এতে তার পক্ষে নতুন করে স্বপ্ন দেখা সহজ হয়ে ওঠে না ।

আত্মবিশ্বাসের সাথে মাঠে আসতে হবে পরীক্ষার সময় যথাসম্ভব চিন্তামুক্ত রাখতে হবে নিজেকে। নিজেদেরকে সব পরিস্থিতিতে কিভাবে সামলাতে পারি তার উপায় খুঁজে বের করতে হবে । পরীক্ষার প্রশ্ন হাতে পাওয়া মাত্রই ভয় পেয়ে গেলে আমার কি হবে ভেবে পরীক্ষা খারাপ করা যাবে না সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন নিজেকে এখন থেকে নিয়ন্ত্রণে রাখার। এখানে ভাগ্যের ও একটা বিষয় থাকে তাই সর্বোচ্চ পরিশ্রম আর সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন। চাওয়ার মত করে চাইলে ইনশাল্লাহ তিনি কখনো ফেরাবেন না।

আরও পড়ুন: কাজী নজরুল ইসলামের ছেলেবেলা: দারিদ্র নিয়ে অতি বাড়াবড়ি

এরপর প্রহর গুনতে গুনতে হটাৎ করে শুনতে পাওয়া “বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে গেছো ।” এক অফুরন্ত ভালোবাসা প্রকাশ সৃষ্টিকর্তার কাছে। সত্যিই কতটা সুন্দর হয় দিনগুলো। নিজের একটা পরিচয়, নিজের একটা অর্জন, পরিবারের মানুষগুলোর অক্লান্ত পরিশ্রমেরও স্বার্থকতা। এরপর এক আকাশ সমান আবেগ অনুভূতি নিয়ে পা রাখা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কতশত নতুন মুখ, নতুন সহপাঠী, নতুন শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো একটি মজার বিষয় দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষের সাথে পরিচয়ের সুযোগ গড়ে ওঠে। অন্য সংস্কৃতির সংস্পর্শে আসা সবাইকে চেনা জানা এ যেন এক উৎসব মুখর পরিবেশ। আর সময়টা যদি হয় বসন্তের তাহলে তো কথাই নেই। বসন্তের এ আমেজে নবীনকে বরণ করে নেওয়া এক গুচ্ছ ফুল, কবিতা আর গানে। নতুন ক্যাম্পাস চেনার চেষ্টা, মানিয়ে গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, সহপাঠীদের সাথে বেড়াতে যাওয়া। যেন না গেলে বোঝাই যাবে না জীবন এভাবেও উপভোগ করা যায়! তাই নতুন করে স্বপ্ন সাজিয়ে আবার নিজেকে সামলে নিতে হবে নিতে হবে মানসিক প্রস্তুতি, জয় আপনার নিশ্চিত।

শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়/
You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.