শিরোনাম
পদত্যাগ করেছেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ
ঢাকা কলেজ প্রতিনিধিঃ অবশেষে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ঢাকা কলেজ থেকে পদত্যাগ করেছেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ এবং উপাধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেন।ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের কোনো রকম সহোযোগিতা না করা এবং শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করার জন্য ছাত্রলীগেকে বিনামূল্যে খাওয়ানো,চিকিৎসা প্রদানসহ বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ উঠে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের উপর।
যানা যায় সদ্য শেষ হওয়া ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জন্য বিভিন্ন হলের খাবার ফ্রি করে দেন।এছাড়া আহত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।নগদ অর্থও প্রদান করেন।নানা ভাবে ছাত্রদের বিপক্ষে ছাত্রলীগকে সাহায্য করে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করেন।
আন্দোলন শেষ হওয়ার পর সকল বিশ্ববিদ্যালয়,কলেজ যখন তাদের প্রশাসনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের এরুপ আচরন জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ঢাকা কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীরা ।
গতকাল (১১ আগস্ট)শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অধ্যক্ষের রুম ঘেরাও করে অবস্থান করেন।এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঢাকা কলেজ থেকে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানান।গতকাল শিক্ষার্থীদের সুস্পষ্ট কিছু না বললেও জানান তিনি পদত্যাগ করবেন।আজ ১২ আগস্ট অধ্যক্ষের পদ থেকে প্রত্যাহার করে অন্যত্র পদায়নের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ এবং উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ.টি.এম মইনুল হোসেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা
সকল ধরনের রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন নিষিদ্ধ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার (১১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ দেওয়া হয়।
রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম সাধারণ শিক্ষার্থীর দাবির প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেটের ৮৫তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক, পেশাজীবী বা অঙ্গসংগঠন, লেজুরভিত্তিক প্যানেল, পরিষদ বা সমিতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন না। ১১ আগস্ট থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম থেকে আগে থেকেই দাবি তোলা হচ্ছিল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার।
পদত্যাগ করেছেন জবি উপাচার্য সাদেকা হালিম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম পদত্যাগ করেছেন। রোববার সন্ধ্যায় উপাচার্য তার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, কিছুক্ষণ আগে রাষ্ট্রপতি বরাবর আমি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি।
এর আগে দুপুর আড়াইটায় উপাচার্য রেজিস্ট্রার প্রক্টরিয়াল বডি ও হল প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের পদত্যাগের জন্য ২৪ ঘণ্টা আল্টিমেটাম বেঁধে দিলেও তিন ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করেন তিনি।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ এবং প্রথম নারী উপাচার্য। ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সাদেকা হালিমকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। তার নিয়োগ সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রোখছানা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫–এর ১০ (১) ধারা অনুসারে অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছেন। উপাচার্য হিসেবে তার নিয়োগের মেয়াদ চার বছর। তবে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তিনি নিয়মিত চাকরির বয়স পূর্তিতে মূল পদে প্রত্যাবর্তনপূর্বক অবসরগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন শেষে ওই মেয়াদের অবশিষ্টাংশ পূর্ণ করবেন। উপাচার্য পদে তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতা পাবেন এবং বিধি অনুযায়ী পদসংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ড. সাদেকা হালিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। রাষ্ট্রপতি ও আচার্য প্রয়োজনে যেকোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
অধ্যাপক সাদেকা হালিম উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ১৯৮৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
সাদেকা হালিম কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি থেকে দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি নেন। পরে কমনওয়েলথ স্টাফ ফেলোশিপ নিয়ে যুক্তরাজ্যের বাথ ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট-ডক্টরেট সম্পন্ন করেন। তথ্য কমিশনের প্রথম নারী তথ্য কমিশনার ছিলেন তিনি।
আন্দোলনের মুখে ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের পদত্যাগ
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কেকা রায়চৌধুরীসহ দুই শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন।
রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে তারা পদত্যাগপত্রে সই করেন।
পদত্যাগ করা অন্যজন হলেন সিনিয়র শিক্ষক ফারহানা খানম। ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তাদের পদত্যাগপত্রে সই করার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
এর আগে সকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের হুমকি এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কেকা রায়চৌধুরীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। একইসঙ্গে স্কুলের পদার্থবিজ্ঞানের সিনিয়র শিক্ষক ফারহানা খানমসহ গভর্নিং বডির পদত্যাগের একদফা দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানতে চাইলে অধ্যক্ষ কেকা রায়চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সম্মান রেখে পদত্যাগ করছি। ফারহানা খানম বলেন, আমাকে জোর করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করানো হয়েছে। আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করিনি।
তাদের পদত্যাগের দাবিতে সকাল ১০টায় রাজধানীর বেইলি রোডে স্কুলের মূল ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ শিক্ষার্থী। এ সময় এক দফা এক দাবি এক, এক ঘণ্টায় পদত্যাগ; মানি না মানব না, দুর্নীতি সইব না— শিক্ষার্থীরা এসব স্লোগান দেন।
পরে অধ্যক্ষ নিজে এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। হ্যান্ডমাইকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা যে দাবিতে আন্দোলন করছ, এসব অভিযোগের কোনোটাই সত্য নয়। যদি প্রমাণ করতে পারো তাহলে আমি এ পদ থেকে সরে যাব। আর তোমরা যদি আমাকে একেবারেই না চাও তাহলে আমি সর্বোচ্চটা বিসর্জন দিতে রাজি আছি।
তিনি বলেন, আমি আসার পরে এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি, কোনো ভর্তিবাণিজ্য হয়নি। সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছি।
অধ্যক্ষের বক্তব্যের মধ্যেই শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেন এবং আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যে তাকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যক্ষ কেকা চৌধুরী ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. ফারহানা খানম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীদের হামলার সময় নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় দিতে সাহায্য করেননি। উল্টো তাদের টিসি দেওয়া এবং হেনস্তা করার হুমকি দেন। তাদের বিরুদ্ধে কলেজে অভ্যন্তরীণ দুর্নীতিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। এ জন্য তাদের চাকরিচ্যুত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদত্যাগের হিড়িক
কুবি প্রতিনিধিঃ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী সরকারের পতনে পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। উপাচার্য, প্রক্টরিয়াল বডি, আবাসিক হলের প্রাধক্ষ্যসহ মোট নয়জন পদত্যাগ করেছেন।
রবিবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী, সহকারী প্রক্টর জাহিদ হাসান, অমিত পলাশ, আবু ওবায়দা রাহিদ,শারমিন সুলতানা, শেখ হাসিনা হলের প্রাধাক্ষ্য অধ্যাপক ড. মেহের নিগার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধাক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শামসুজ্জামান মিলকী, নওয়াব ফয়জুননেসা আবাসিক হলের শিক্ষক কাশমী সুলতানা পদত্যাগ করেন।
রাষ্ট্রপতি বরাবর প্রেরিত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈনের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলেন, আমি আমার ব্যক্তিগত কারণে উপাচার্যের পদ থেকে এই পত্রের মাধ্যমে অদ্য অপরাহ্ণে পদত্যাগ করিতে আপনার নিকট পদত্যাগপত্র পেশ করিলাম। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়ন অব্যাহত থাকুক এই কামনা করছি। অন্যরা সবাই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১০ এর (৩) ভাইস-চ্যান্সেলরের পদ শূন্য হইলে কিংবা ছুটি, অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে তিনি তাঁহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে নব-নিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা ভাইস-চ্যান্সেলর পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত চ্যান্সেলরের ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত না থাকা সাপেক্ষে 1[প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর], ভাইস-চ্যান্সেলরের দায়িত্ব।
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত


মন্তব্য