ঢাকা, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫ ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
 
শিরোনাম

আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনাল-২০২২ প্রোগ্রামিং বিশ্বকাপে এবার লড়বে ঢাবি-বুয়েটসহ ৮ বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৮ জুলাই, ২০২২ ১০:৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনাল-২০২২  প্রোগ্রামিং বিশ্বকাপে এবার লড়বে ঢাবি-বুয়েটসহ ৮ বিশ্ববিদ্যালয়

প্রোগ্রামিংয়ের অলিম্পিয়াড খ্যাত ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্টের (আইসিপিসি) ওয়ার্ল্ড ফাইনাল-২০২২ এ অংশ নিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি আয়োজকদের পক্ষ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

তরুণ প্রজন্মের জন্য প্রতি বছর বিশেষভাবে আয়োজিত হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট (আইসিপিসি)’। বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ এই প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার গত আসরে (৪৪তম) এশিয়া-ওয়েস্ট রিজিয়নে (পশ্চিমাঞ্চলে) প্রথম স্থানের অর্জনসহ বাংলাদেশের তিন বিশ্ববিদ্যায়ের স্থান হয়েছিল। রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত এই পর্বে বিশ্বের ১১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছিলেন।

এবার ৪৫তম ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্টের (আইসিপিসি) চূড়ান্ত পর্বের (ওয়ার্ল্ড ফাইনাল) আয়োজক হয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ৬ থেকে ১১ নভেম্বর ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ‘আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনাল ঢাকা’ শীর্ষক এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এতে ৭৫টি দেশের দেড় শতাধিক দল সরাসরি অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। সহ-আয়োজক হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এবং একাডেমিক হোস্ট ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, বাংলাদেশ।

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিউটার প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানজনক একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা হলো আইসিপিসি। আইসিপিসি আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের বেলর বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে এ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে আইসিপিসি ফাউন্ডেশন।

এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এ ইভেন্টের আয়োজন করছে এবং চীন, জাপান এবং থাইল্যান্ডের পর বাংলাদেশ এশিয়ার মাত্র চতুর্থ দেশ যারা এ ইভেন্টের আয়োজক হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

আইসিপিসির যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সাল থেকে। যদিও ১৯৭৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এ আয়োজনের দায়িত্বে ছিল কম্পিউটারের বৈজ্ঞানিক গবেষণার অন্যতম বৃহৎ ও পুরোনো প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্পিউটিং মেশিনারি (এসিএম)।

আইসিপিসি প্রতি বছর দু’টি পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। ১ম পর্বে বিশ্বের ৮টি অঞ্চল থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিজয়ীরা চূড়ান্ত (ওয়ার্ল্ড ফাইনাল) পর্বে অংশ নেয়। আইসিপিসি, ঢাকা বিশ্বের ৮টি অঞ্চলের মধ্যে এশিয়া-পশ্চিম অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। বিশ্বের ৮টি অঞ্চল থেকে আঞ্চলিক পর্বে বিজয়ী দলগুলো এবছর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় আইসিপিসি এর চূড়ান্ত পর্বে (ওয়ার্ল্ড ফাইনাল) অংশ নেবে।

আইসিপিসি বাংলাদেশ পর্বে চ্যাম্পিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইসিপিসি-এর এশিয়া-ঢাকা আঞ্চলিক পর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের দল DU_FlareBlitz 4.0 চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এ প্রতিযোগিতায় যথাক্রমে ১ম ও ২য় রানার আপ হয়েছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দল BUET:NerdHerd এবং BUET:3Q2।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান গত ৭ জুলাই কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ অনলাইনের মাধ্যমে এই আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    নিউইয়র্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উদযাপন

    নিজস্ব প্রতিবেদক
    ২১ জুলাই, ২০২২ ১০:৩০
    নিজস্ব প্রতিবেদক
    নিউইয়র্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উদযাপন

    সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূতি উদযাপন করা হয়েছে।

    নিউইয়র্কের লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়টে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন দেশটিতে থাকা ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীরা।

    উপস্থিত সবাই নিজেদের স্মৃতির স্বর্ণসুষমায় হিরন্ময় করে তুলেছিলেন সময়টাকে।

    জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকানী অধ্যাপক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ শহীদুলাহর সঞ্চালনায় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

    বাংলাদেশের পাশাপাশি প্রথা মেনে পরিবেশিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীতও।এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, অর্জন ও ঐতিহ্য নিয়ে দুটি ডকুমেন্টরি প্রদর্শিত হয়।

    চিরচেনা জায়গার প্রিয়তম স্থানগুলো দেখতে দেখতে মনের অজান্তেই সকলে ফিরে যান নিজেদের জীবনের শ্রেষ্ঠতম দিনগুলোতে। অনুষ্ঠানটি ছিল একেবারেই ব্যতিক্রমী।

    অনুষ্ঠানে সভাপতি, প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি বা বক্তৃতার প্রচলিত প্রথার অনুসরণ ছিল না।অনুষ্ঠানটিকে সবার অংশগ্রহণে সর্বজনীন আনন্দের স্মারক হিসেবে তুলে ধরার প্রত্যয়ই অনূদিত হয়েছে সব কর্মকাণ্ডে।

    উপস্থিত প্রত্যেকের পরিচিতি ও সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ ছিল অনুষ্ঠানের একমাত্র উপজীব্য। প্রত্যেকে নিজেদের জীবনের শ্রেষ্ঠতম সময় হিসেবে যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্বকালকে উল্লেখ করেছেন, পাশাপাশি নিজেদের বর্তমান অবস্থান ও অর্জনের নেপথ্যেও এই প্রতিষ্ঠানের অনবদ্য ভুমিকার কথা অকুণ্ঠচিত্তে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেছেন।

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      ঢাবি ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষার পদার্থ বিজ্ঞান অংশের সমাধান

      নিজস্ব প্রতিবেদক
      ১০ জুন, ২০২২ ১৭:৮
      নিজস্ব প্রতিবেদক
      ঢাবি ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষার পদার্থ বিজ্ঞান অংশের সমাধান

      ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এদিন বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়েছে দুপুর সাড়ে ১২টায় শেষ হয় এ পরীক্ষা। পরীক্ষা চলাকালীন কার্জন হল পরিদর্শন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

      এবার ‘ক’ ইউনিটে এক হাজার ৮৫১টি আসনের বিপরীতে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা এক লাখ ১৫ হাজার ৭১০ জন। সে হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন প্রায় ৬২ জন শিক্ষার্থী।

      প্রাসঙ্গিক
        মন্তব্য

        ঢাবির নীল দলের মনোনয়ন পেলেন যৌন হয়রানিতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষক

        নিজস্ব প্রতিবেদক
        ১৩ মে, ২০২২ ১৪:১৭
        নিজস্ব প্রতিবেদক
        ঢাবির নীল দলের মনোনয়ন পেলেন যৌন হয়রানিতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষক

        যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের প্যানেলে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল।

        অভিযুক্ত ওই দুই শিক্ষক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস (এমআইএস) বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আকরাম হোসেন।

        বৃহস্পতিবার (১২ মে) নির্বাচনের প্যানেল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে নীল দল ও বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল তাদের ৩৫ সদস্যের মনোনীত প্যানেল রেজিস্টার কার্যালয়ের নির্বাচন শাখায় জমা দিয়েছে।

        চলতি মাসের ২৪ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে ৩৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ মে প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ। এর মধ্যে কোনো দল চাইলে তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে পারবে। নীল দলের শিক্ষক প্যানেলের ৩৫ সদস্যের মধ্যে ওই দুই জনের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের অভিযোগ রয়েছে।

        সম্প্রতি অধ্যাপক মো. আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নিকট চিঠি দিয়েছিলেন ওই বিভাগের (এমআইএস) এক সাবেক ও প্রভাষক পদপ্রার্থী এক শিক্ষার্থী।

        ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে শিক্ষক নিয়োগের আগে বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আকরাম তাকে ‘অনৈতিক’ ও ঘৃণ্য প্রস্তাব দেন। তিনি রাজি না হলে তখন তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

        এদিকে গত বছরের ২২ নভেম্বর অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চের (নিটার) নারী সহকর্মীদের হেনস্তা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের ৩৭ জন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। এর মধ্যে যৌন হয়রানির শিকার নারীদের মধ্যে দুইজন লিখিতভাবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন।

        নীল দলের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহিম বলেন, দলের প্রতি ওনাদের প্রতিশ্রুতি ও আনুগত্য বিবেচনায় সর্বসম্মতিক্রমে তাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যৌন হয়রানির যে অভিযোগ সে ব্যাপারে আমরাও অবগত আছি। কিন্তু সেটা কেবল অভিযোগ, প্রমানিত সত্য নয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হলে তখন তাদের অবস্থান পরিষ্কার হবে।

        প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য

          ছাত্রলীগের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত ঢাবি উপাচার্যের

          নিজস্ব প্রতিবেদক
          ১৮ এপ্রিল, ২০২২ ২৩:৭
          নিজস্ব প্রতিবেদক
          ছাত্রলীগের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত ঢাবি উপাচার্যের

          মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহর শ্রদ্ধা জানানোর ঘটনায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।

          বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে তারা বলেছে, অধ্যাপক রহমত উল্লাহর আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনা নিশ্চিতপূর্বক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবিলম্বে এ বিষয়ে ‘যথোপযুক্ত ব্যবস্থা’ নিতে হবে। তাঁকে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। উপাচার্য ছাত্রলীগের এসব বক্তব্যের সঙ্গে সহমত জানিয়েছেন।

          আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে তার হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, রাকিব হোসেন, তিলোত্তমা শিকদারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা তাদের সঙ্গে ছিলেন। তবে ছাত্রলীগের এই স্মারকলিপি দেওয়ার ঘণ্টা দেড়েক আগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ‘ভুল করে থাকলে ক্ষমা প্রার্থনা’ করেছেন আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকনেতা অধ্যাপক রহমত উল্লাহ।

          স্মারকলিপি দেওয়ার আগে উপাচার্যের সামনে বক্তব্য দেন সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহর বক্তব্য ছাত্রসমাজকে আঘাত করছে। এ ধরনের বক্তব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদার সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। একে কেন্দ্র করে পরে আমরা তাঁর যে বয়ান দেখেছি, তা যথেষ্ট নয় বলে আমরা মনে করি। জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতে দেশের ইতিহাসের ঘৃণিত ব্যক্তি মোশতাকের নাম যখন কেউ সচেতন বা অসচেতনভাবে উচ্চারণ করেন এবং তা আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক প্ল্যাটফর্মে উচ্চারণ করেন, এর পেছনে তার (অধ্যাপক রহমত উল্লাহ) কোনো শুভ উদ্দেশ্য ছিল বলে আমরা মনে করি না৷ তার এই বক্তব্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ছাত্রসমাজ মনে করে, এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন আছে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মসূচিতে মোশতাকের কথা বলা হয়েছে, তাই এ বিষয়ে প্রশাসনকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

          এরপর বক্তব্য দেন সনজিত চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির পর সবচেয়ে ঘৃণিত যে কাজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হলো, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। এ ধরনের ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে তিনি দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি। বিষয়টি বেদনার যে তিনি শুধুই একজন শিক্ষক নন, শিক্ষকনেতাও। আমাদের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদেরও একজন তিনি। তিনি যে অপ্রকৃতিস্থ কথা বলেছেন, এর মাধ্যমে অপরাধ করেছেন। প্রকারান্তরে তিনি জাতির পিতাকে অসম্মান করেছেন এবং জাতির পিতার খুনিকে সম্মানিত করেছেন। এটি আমাদের হৃদয়কে রক্তাক্ত করেছে। আমরা আবারও তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে আপনি তার জন্য যে ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তা নেবেন বলে আমরা মনে করি। আমরা চাই, তিনি যেসব দায়িত্বশীল জায়গায় রয়েছেন, সব জায়গা থেকে তিনি অব্যাহতি চাইবেন এবং জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। সংবাদ সম্মেলন করে টালবাহানাপূর্ণ কোনো ক্ষমাপ্রার্থনা আমরা মেনে নেব না।

          এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের স্মারকলিপিটি উপাচার্যকে পড়ে শোনান সনজিত। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড, বাঙালির হৃদয়ে “কুখ্যাত মীর জাফর” হিসেবে ঘৃণিত খন্দকার মোশতাক আহমদকে জ্ঞাত-অজ্ঞাতভাবে শ্রদ্ধা জানানোর মতো যেকোনো ঘটনা-বক্তব্যকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জাতির জনকের খুনির নাম উচ্চারিত হতে পারে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এ ঘটনাকে ধৃষ্টতামূলক বলে মনে করে। একই সঙ্গে শুধু বক্তব্য প্রত্যাহারই নয়, এ বক্তব্যের জন্য আমরা তাঁকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনার দাবি জানাই। রহমত উল্লাহর আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনা নিশ্চিতপূর্বক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবিলম্বে এ বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

          ছাত্রলীগের নেতাদের বক্তব্য শোনার পর উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এই সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ দিই। খুব পরিশীলিত ভাষা ও যৌক্তিক উপস্থাপনার মাধ্যমে তারা বিষয়টির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। লিখিত ও মৌখিক যে বক্তব্য সনজিত চন্দ্র দাস ও সাদ্দাম হোসেন এখানে উপস্থাপন করল, সেগুলোর সবটাই খুবই যৌক্তিক মাত্রায়, পরিশীলিত, পরিমিত ও দায়িত্বশীলভাবেই এসেছে। আশা করি, তাদের বক্তব্যগুলোর সঙ্গে দ্বিমত করার মতো মানুষ সমাজে খুব বেশি থাকবে না। এসব বক্তব্যের সঙ্গে কেউ দ্বিমত করার কোনো কারণ খুঁজে পাবে বলে আমার মনে হয় না। এগুলোর সঙ্গে আমি সহমত জ্ঞাপন করি এবং আশা করি যে একটি সুন্দর সমাধান আসবে।

          অধ্যাপক আখতারুজ্জামান আরও বলেন, ছাত্রলীগ যেভাবে দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়ে বিষয়টির প্রতিবাদ করল, এভাবেই মূলত যেকোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, বাংলাদেশ, মহান ভাষা আন্দোলন—এই মূল্যবোধের সঙ্গে আমরা কোনোভাবেই কোনো অপশক্তি, ষড়যন্ত্রকারী বা ঘৃণিত মহলের কোনো ধারণা, মত বা দর্শনের প্রতিফলন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এবং বিশেষ করে এই জাতি কখনো গ্রহণ করবে না। এসব বিষয়ে আমরা খুবই যত্নশীল।

          গতকাল রবিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতিও ‘শ্রদ্ধা’ জানান বলে অভিযোগ ওঠে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ ওই বক্তব্য নিয়ে আপত্তি জানালে ওই সভাতেই সভাপতির বক্তব্য দিতে গিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান মো. রহমত উল্লাহর বক্তব্যের ওই অংশ প্রত্যাহার করেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।

          অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। নীল দলের প্যানেল থেকে তিনি শিক্ষক সমিতির সভাপতির পাশাপাশি আইন অনুষদের ডিনও নির্বাচিত হয়েছেন।

          প্রাসঙ্গিক
            মন্তব্য
            সর্বশেষ সংবাদ
              সর্বাধিক পঠিত