ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫ ২১ কার্তিক ১৪৩২
 
শিরোনাম

ইসরাইলি বাহিনীর হাতে আটক শহিদুল আলম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:১৭
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরাইলি বাহিনীর হাতে আটক শহিদুল আলম

গাজায় ইসরাইলি অবৈধ নৌঅবরোধ ভাঙতে আন্তর্জাতিক নৌবহর “ফ্রিডম ফ্লোটিলা” রওনা হয়েছিল। এ নৌবহরে ছিলেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির নৌবাহিনী শহিদুল আলমসহ ফ্লোটিলার সব নৌযান আটক করেছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি নতুন ফ্লোটিলা যা গাজার সমুদ্রবন্দর ভেঙে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইল। ফ্লোটিলার সব জাহাজ এবং যাত্রী ইসরাইলি নৌবাহিনী দ্বারা আটক হয়েছে এবং বর্তমানে একটি ইসরাইলি বন্দরে নেওয়া হচ্ছে।

ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “আইনগত নৌবন্দর ভেঙে যুদ্ধে প্রবেশের আরও একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা কোনো ফল ছাড়াই শেষ হয়েছে। জাহাজ এবং যাত্রীরা একটি ইসরাইলি বন্দরে নেওয়া হয়েছে। সকল যাত্রী নিরাপদ এবং সুস্থ অবস্থায় আছেন। তাদের দ্রুত বহিষ্কৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে।”

ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন কর্তৃক আয়োজিত এই নয়-জাহাজের ফ্লোটিলায় অন্তত ১০০ জন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এর মধ্যে একটি জাহাজের নাম কনসিয়েন্স (Conscience), যা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ইতালি থেকে যাত্রা শুরু করে।

কনসিয়েন্সের আয়োজকরা বুধবার সকালে জানিয়েছেন, “আমাদের জাহাজ বর্তমানে একটি ইসরাইলি সামরিক হেলিকপ্টারের দ্বারা আক্রমণ করা হচ্ছে, অন্য ৮টি জাহাজও অবৈধভাবে আটক ও জব্দ করা হচ্ছে।” কর্মীদের প্রকাশ করা ফুটেজে দেখা যায়, ইসরাইলি নৌবাহিনী জাহাজগুলোতে চড়ে অভিযান চালাচ্ছে।

ফ্লোটিলার জাহাজগুলোতে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলারের ওষুধ, শ্বাসযন্ত্র ও পুষ্টিসামগ্রীসহ গাজার হাসপাতালে পাঠানোর মতো জরুরি মানবিক সহায়তা ছিল।

“থাউজ্যান্ড ম্যাডলিনস” নামে অভিযানে অংশ নেওয়া নয়টি জাহাজে প্রায় ১০০ জন কর্মী রয়েছেন। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত এফএফসি এ পর্যন্ত ডজনখানেক মানবিক মিশন চালিয়েছে গাজায় সহায়তা পৌঁছে দিতে এবং অবরুদ্ধ উপত্যকার মানবিক সংকটের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে।

এর আগের সপ্তাহে গাজামুখী ৪০টিরও বেশি নৌকা আটক করে ইসরাইল, যাতে ৪৫০ জনেরও বেশি কর্মী ছিলেন। ইসরাইল পূর্বেও গাজাগামী জাহাজে হামলা চালিয়েছে, ত্রাণ সামগ্রী জব্দ করেছে এবং কর্মীদের আটক করে পরে বহিষ্কার করেছে।

প্রায় ২৪ লাখ মানুষের বসবাসের গাজা উপত্যকায় ১৮ বছর ধরে ইসরায়েল অবরোধ বজায় রেখেছে। মার্চ মাসে তারা সীমান্ত বন্ধ করে খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশে বাধা দিয়ে অবরোধ আরও কঠোর করে, যার ফলে অঞ্চলটি দুর্ভিক্ষে পতিত হয়।২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলি হামলায় গাজায় ৬৭ হাজার ১০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। অব্যাহত বোমাবর্ষণে অঞ্চলটি এখন কার্যত বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    নিজের নোবেল জয়ের খবর জানেন না যে বিজ্ঞানী

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক
    ৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১৭:৫৮
    আন্তর্জাতিক ডেস্ক
    নিজের নোবেল জয়ের খবর জানেন না যে বিজ্ঞানী

    চলতি বছর চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ফ্রেড রামসডেল। তবে তিনি হয়তো এখনো জানেনই না যে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।কারণ বড় এই সুসংবাদ এখনো তার পর্যন্ত পৌঁছানো যায়নি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। 

    প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন বিজ্ঞানী ফ্রেড র‍্যামসডেল যিনি বিজ্ঞান ও জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রাখার এক অনন্য উদাহরণ। তবে এবার সেই ভারসাম্যই তাকে “অফ দ্য গ্রিড” করে ফেলেছে—এমন পর্যায়ে যে, নোবেল কমিটিও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি!

    চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিশেষ অবদান রাখায় এ বছর নোবেল পান তিনজন। নোবেলপ্রাপ্তরা হলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারি ই ব্রানকো ও ফ্রেড রামসডেল এবং জাপানের শিমন সাকাগুচি। 

    র‍্যামসডেল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের আইডাহোর পাহাড়ি অঞ্চলে ট্রেকিংয়ে আছেন, পুরোপুরি ডিজিটাল ডিটক্সে। তার ল্যাব সোসোমা বায়োথেরাপটিক্স এর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘তিনি এখন নিজের সেরা জীবন কাটাচ্ছেন — কিন্তু পৃথিবী তাকে খুঁজে পাচ্ছে না।’ 

    ডিজিটাল ডিটক্স মানে হচ্ছে, ডিজিটাল দুনিয়া থেকে কিছু সময়ের জন্য নিজেকের সরিয়ে নেওয়া। 

    র‍্যামসডেলের বন্ধু ও সহকর্মী জেফ্রি ব্লুস্টোন বলেন, ‘আমি নিজেও ওর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি, কিন্তু পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে, ব্যাককান্ট্রিতে কোথাও ট্রেকিংয়ে গেছে।’

    নোবেল কমিটিও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি অন্য মার্কিন বিজ্ঞানী মেরি ব্রানকোর সঙ্গেও প্রথমে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি— কারণ যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলের সঙ্গে স্টকহোমের সময়ের পার্থক্য ৯ ঘণ্টা। পরে তারা যোগাযোগ করতে সক্ষম হন ।

    র‌্যামসডেলের ব্যাপারে নোবেল কমিটির সেক্রেটারি-জেনারেল থমাস পার্লমান মজার ছলে বলেছেন, ‘তাকে যদি কেউ দেখেন, দয়া করে খবরটা জানিয়ে দিন — তিনি এখন নোবেলজয়ী!’

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন তিন মার্কিন বিজ্ঞানী

      অনলাইন ডেস্ক
      ৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১৭:৯
      অনলাইন ডেস্ক
      পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন তিন মার্কিন বিজ্ঞানী

      চলতি বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জন ক্লার্ক, মিশেল দেভোরেট ও জন মার্টিনিস। ম্যাক্রোস্কোপিক কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং এবং ইলেকট্রিক সার্কিটে এনার্জি কোয়ান্টাইজেশন গবেষণার জন্য এই তিন মার্কিন বিজ্ঞানীকে এ পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।

      মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কারের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করে।

      রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বলেছে, তাদের এই আবিষ্কার কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। আর এর পুরস্কার স্বরূপ তাদের নোবেলে ভূষিত করা হয়েছে।

      কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অদ্ভুত এবং সাধারণত ক্ষুদ্রাতীত কণার আচরণগুলো কীভাবে আমাদের পরিচিত বড় আকারের মানব-সৃষ্ট বস্তু বা অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যেতে পারে সেটির ওপর এ বছরের পদার্থে নোবেলের বিষয় ছিল।

      পুরস্কারপ্রাপ্ত এ তিন বিজ্ঞানী তাদের ধারাবাহিক পরীক্ষার মাধ্যমে দেখিয়েছেন, যে এই ঘটনাটি সম্ভব। তারা এমন একটি অতিপরিবাহী বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা তৈরি করেন, যা একটি অবস্থা থেকে সরাসরি অন্য অবস্থায় 'টানেল' করে যেতে পারে। বিষয়টি দেখে মনে হয় যেন একটি জিনিস দেওয়ালের মধ্যে দিয়ে ভেদ করে চলে গেছে।

      তারা আরও দেখিয়েছেন যে এই ব্যবস্থাটি নির্দিষ্ট মাত্রার বা সুনির্দিষ্ট ‘ডোজ’-এ শক্তি শোষণ করে এবং বিকিরণ করে। যা কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ভবিষ্যদ্বাণীর সাথে পুরোপুরি মিলে যায়।

      নোবেল পুরস্কারের ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার সমানভাবে ভাগ করে নেবেন এই তিন পদার্থবিজ্ঞানী।

      গতবছর পদার্থের নোবেল পেয়েছিলেন ‘মেশিন লার্নিং’ এর দুই পথিকৃত যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী জন জে হপফিল্ড এবং কানাডার গবেষক জেওফ্রে ই হিন্টন।

      বরাবরের মতই চিকিৎসা বিভাগের পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সোমবার চলতি বছরের নোবেল মৌসুম শুরু হয়। বুধবার রসায়নে চলতি বছরের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার আসবে সাহিত্যের নোবেল ঘোষণা। এরপর শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১৩ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

      ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

      প্রাসঙ্গিক
        মন্তব্য

        বড় অংশ নারী ও শিশু

        ২ বছর যাবত গাজায় ইসরাইলি বর্বরতা! নিহত ৬৭ হাজার ফিলিস্তিনি

        অনলাইন ডেস্ক
        ৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১০:৪০
        অনলাইন ডেস্ক
        ২ বছর যাবত গাজায় ইসরাইলি বর্বরতা! নিহত ৬৭ হাজার ফিলিস্তিনি

        ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি বর্বরতার ২ বছর পূর্ণ হলো আজ মঙ্গলবার। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় উপত্যকায় হামলা শুরু করে দখলদার বাহিনী। সেই হামলা আজও চলছে আর এতে নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

        শুধু বিমান কিংবা স্থল হামলা নয়; সেদিন থেকেই উপত্যকাটি অবরোধ করেছে দখলদার বাহিনী। যার ফলে ত্রাণের অভাবে ভয়াবহ ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন গাজার বাসিন্দারা।

        ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের অতর্কিত হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় তীব্র আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল। হামাস নির্মূলের নামে ২ বছর ধরে গাজায় তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার বাহিনী। এতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই উপত্যকা।

        চাথাম হাউসের রাজনৈতিক বিশ্লেষক সানাম ভাকিল বলেন, ‘২ বছর ধরে গাজায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে আসছে ইসরাইল। যদিও তারা সেখানে কী অর্জন করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ইরান-সমর্থিত প্রতিরোধ নেটওয়ার্কের সক্ষমতাও কমেছে। অন্যদিকে, কয়েক দশকের তুলনায় এবার আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিকভাবে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তেল আবিব।’

        গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল, অনেকদিন ধরেই এ অভিযোগ করে আসছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। গেল ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনেও বলা হয় ‘ইসরাইল গাজায় জাতিগত নিধন (জেনোসাইড) চালাচ্ছে।’

        রাজনৈতিক বিশ্লেষক সানাম ভাকিল বলেন, ‘গাজায় গণহত্যার চূড়ান্ত রূপ প্রকাশ করেছে ইসরাইল। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করেছে আইডিএফ।

        সেখানে এমন পরিকল্পিত জীবনধারা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা তাদের অস্তিত্ব হুমকির মধ্যে ফেলেছে। ফিলিস্তিনিদের ওপর জাতিগত নিধনের পদক্ষেপ নিয়েছে ইসরাইল।’

        আইডিএফের ক্রমাগত হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার। ফিলিস্তিনকে সমর্থন করায় ইরান, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন এবং কাতারেও হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। 

        মন্তব্য

        চিকিৎসায় নোবেল পেলেন তিন বিজ্ঞানী

        অনলাইন ডেস্ক
        ৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১৭:১০
        অনলাইন ডেস্ক
        চিকিৎসায় নোবেল পেলেন তিন বিজ্ঞানী

        চিকিৎসাবিদ্যায় অনবদ্য অবদান রাখায় চলতি বছর যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের তিন চিকিৎসাবিজ্ঞানী। সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় সুইডেনের স্টকহোম থেকে ২০২৫ সালের চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট।

        চিকিৎসায় এ বছরের নোবেল বিজয়ীরা হলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক মেরি ই. ব্রাঙ্কো ও ফ্রেড রামসডেল এবং জাপানের শিমন সাকাগুচি। পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স নিয়ে গবেষণার জন্য চলতি বছর তাদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

        ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট বলেছে, মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেমের কাজ হলো শরীরকে জীবাণু ও ভাইরাসের মতো বাইরের হুমকি থেকে রক্ষা করা। তবে কখনও কখনও এই ব্যবস্থা ভুলবশত শরীরের নিজস্ব টিস্যুকেই আক্রমণ করে বসে; যার ফলে দেখা দেয় অটোইমিউন রোগ।

        দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা মানবদেহের ‘সেন্ট্রাল টলারেন্স’ বা কেন্দ্রীয় সহনশীলতার ধারণার ওপর গবেষণা করে আসছিলেন। এতে টি-সেল নামের এক ধরনের প্রতিরোধক কোষ থাইমাসে গঠিত হওয়ার সময়ই শরীরের নিজস্ব উপাদানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখালেও পরে তা ধ্বংস হয়ে যায়।

        নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান ওলে কাম্পে বলেছেন, মানবদেহের সব সেলফ-রিঅ্যাক্টিভ টি-সেল থাইমাসে ধ্বংস হয় না; কিছু কোষ রক্তে থেকে যায়। এই কোষগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য শরীরের বাইরে (থাইমাসের বাইরের অংশে) আরও একটি প্রক্রিয়া কাজ করে; সেটিকে পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স বলা হয়।

        চলতি বছরের নোবেলজয়ী তিন বিজ্ঞানী এই প্রক্রিয়ার মূল রহস্য উদঘাটন করেছেন। গবেষণায় তারা দেখেছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখে বিশেষ এক ধরনের কোষ; যাকে রেগুলেটরি টি-সেল (Treg) বলা হয়। এসব কোষের বিকাশ ও কার্যক্রম নির্ভর করে ফক্সপিথ্রি (FOXP3) নামের একটি জিনের ওপর।

        শিমন সাকাগুচি ১৯৯০-এর দশকে প্রথম প্রমাণ করেন, মানবদেহে এমন একটি রেগুলেটরি টি-সেল আছে, যা শরীরের নিজস্ব টিস্যুর বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় আক্রমণ রোধ করে। পরে মেরি ই. ব্রাঙ্কো ও ফ্রেড র‍্যামসডেল ইঁদুর ও মানুষের শরীরে ফক্সপিথ্রি (FOXP3) জিনের ত্রুটি শনাক্ত করেন; যা এই টি-সেলের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।

        গবেষণায় তারা দেখান, ফক্সপিথ্রি (FOXP3) জিনই এসব কোষের বিকাশের মূল নিয়ন্ত্রক এবং এটি পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্সের ভিত্তি তৈরি করে। এই আবিষ্কারের ফলে এখন বিজ্ঞানীরা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারছেন, কীভাবে মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, কেন এই প্রক্রিয়া ভেঙে গেলে অটোইমিউন রোগ দেখা দেয় এবং কীভাবে ক্যানসার কোষ কখনও কখনও এই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে ইমিউন সিস্টেমের আক্রমণ থেকে বেঁচে যায়।

        চিকিৎসাশাস্ত্রের এই নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীরা ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট থেকে একটি মেডেল, সনদপত্র এবং ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা পাবেন।

        এর আগে, গত বছর চিকিৎসাশাস্ত্রে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের দুই চিকিৎসাবিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুনকে। মাইক্রো আরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট ট্রান্সক্রিপশন জিন নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখায় তাদের ওই পুরস্কার দেওয়া হয়।

        প্রতিবছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল ঘোষণা করে সুইডেনের স্টোকহোমের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট। আগামীকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় পদার্থবিজ্ঞানের নোবেলবিজয়ীদের নাম ঘোষণা করবে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স।

        ১৯০১ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার নোবেল। এ পুরস্কারটির নামকরণ করা হয়েছে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নাম অনুসারে। ঊনবিংশ শতকের এই বিজ্ঞানী শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিনামাইট আবিষ্কার করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছিলেন।

        তিনি উইল করে গিয়েছিলেন যে তার যাবতীয় অর্থ থেকে যেন প্রতি বছর পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্য—এই ৫টি খাতে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই পুরস্কারের নামকরণ হবে তার নামে। ১৯৬৯ সাল থেকে এই ৫ বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনীতিও।

        প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য
          সর্বশেষ সংবাদ
            সর্বাধিক পঠিত