The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪

বিশ হাজার টাকা দিয়ে শুরু, আজ ২৫ হাজার কোটি টাকার মালিক!

ব্যবসা করতে পুঁজি লাগে, তাই বাবা চাইতেন ছেলে তার মতো চাকরি করবে। বারো জন ছেলে-মেয়ের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো বাবা কোরেশ আলী খানকে। পরিবারের কিছুটা দায়িত্ব নিজের কাধে নিতে হাফিজুর রহমান লেখাপড়া শেষে চাকরি করলেও তাতে মন বসাতে পারেননি। ছোট থেকেই হাফিজুর রহমান খান ছিলেন স্বপ্নবাজ। স্বপ্ন দেখতেন দেশে একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হবেন। তাই চাকরি ছেড়ে নেমে পড়েন ব্যবসায়। স্বপ্নবাজ এ হাফিজুর রহমান আজ সফল একজন উদ্যোক্তা। গড়ে তুলেছেন রানার গ্রুপ।

পুঁজি কম থাকলেও হাফিজুর রহমানের ছিল অসাধারণ মেধাশক্তি ও পরিশ্রম করার দৃঢ় মানসিকতা। ব্যবসার জন্য  তিনি কি না করেছেন। দিন-রাত ছুঠেছেন গ্রাম থেকে গ্রামে। তার সেই পরিশ্রমের ফসল রানার মোটরসাইকেল আজ ছুটছে শহর থেকে গ্রামে। মটরসাইকেলের সাথে সাথে বর্তমানে রানার গ্রুপের যানবাহনগুলোও দেশের বাজারে পরিচিত নাম। দেশের অটোমোবাইল বাণিজ্যে সুনাম কুড়িয়ে এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে রানার মোটরসাইকেল।

মোটরসাইকেল দিয়ে শুরু করে রানার এগ্রো কোম্পানি, রানার অটো ব্রিকস ফিল্ড, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, রানার সিসটেমস লিমিটেড, রানার প্রোপার্টিজ ও রানার মোটরস লিমিটেড নামে বেশ কয়েকটি কোম্পানির মালিক হাফিজুর রহমান। সফল এ ব্যবসায়ী আজ তরুণ উদ্যোক্তাদের মডেল।

১৯৫৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি। বাবা মরহুম কোরেশ আলী খান ও মাতা মরহুমা পরিজান নেসার ঘরে জন্ম নেয় ফুটফুটে শিশু হাফিজুর রজমান। রাজশাহীতে জন্ম নিলেও পৈত্রিক নিবাস ছিলো নওগাঁয়। বাবা সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় শৈশব কাটে দেশের বিভিন্ন জেলায়। নওগাঁর থেকে ম্যাট্রিক ও ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজশাহীতে ভর্তি হওয়ার পরই সফল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন হাফিজুর রজমান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে শুরু করেন কর্মজীবন। পুঁজি না থাকায় প্রথমে ব্যবসা করা আর হয়ে ওঠে না। তবুও হাল ছাড়ে দেননি তিনি।

প্রথম কর্মজীবনে হাফিজুর রহমান খান একটি পাঠকলে চাকরি নেন। এই চাকরি ছেড়ে যোগদেন শ্যালো মেশিন ও পাম্প বিক্রয়কারী একটি প্রতিষ্ঠানে। এই চাকরি মাধ্যমে শিখতে থাকেন ব্যবসার নানা বিষয়। ১৯৮৩ সালে শেষের দিকে চাকরি ছেড়ে নেমে পড়েন ব্যবসায়। সেই সময় তার মূলধন ছিল মাত্র ২০ হাজার টাকা। পুঁজি যথেষ্ট না থাকলেও তিনি মেধাকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলেন নিজের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

অংশদারিত্বের ভিত্তিতে তিনজন মিলে শুরু করেন ব্যবসা। এই ব্যবসায় তার ছিলো মেধাশক্তি। এরপর ২০০০ সালে গড়ে তোলেন রানার অটোমোবাইলস। আমন্ত্রণ জানাতে শুরু করেন দেশের সুপ্রতিষ্ঠিত মোটরসাইকেল ব্যবসায়ীদের। তার ব্যবসার পরিকল্পনা ও উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখে এসব ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করেন তার ব্যবসায়। ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে পুরোদমে নেমে পড়েন ব্যবসায়। ব্যবসার শুরুতে চায়না থেকে মোটরসাইকেল আমদানি করে দেশের বাজারে বিক্রি করতেন। এর পাশাপাশি ট্রাক, বাস দেশের বাইরে থেকে এনে বিক্রয় শুরু করেন। যখন রানার অটোমোবাইলস পুরোপুরি সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠে তখন স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন দেশের আবাসন খাতকে নিয়ে। গড়ে তুলনে রিয়েল এস্টেট ও ব্রিকস কোম্পানি। এরপর আরো গড়ে তোলেন কিছু প্রতিষ্ঠান। এভাবে মেধা, বুদ্ধি, পরিশ্রম করে প্রতিষ্ঠা করেন রানার গ্রুপ।

এখন সেই রানার গ্রুপ নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। সফল এ উদ্যোক্তা জানান, অটোমোবাইলস খাতে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বে এসব পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অটোমোবাইলস খাতের পণ্যগুলো বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি আরো দৃঢ় করা সম্ভব। এ শিল্প খাতের পণ্য বিশ্ববাজার দখলে সক্ষম হবে এবং দেশের চেয়ে বিশ্ববাজারে রফতানির সম্ভাবনা দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। তিনি তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, তরুণ উদ্যোক্তারা এ খাত উন্নয়নে এগিয়ে আসলে এই শিল্প আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশে সুনাম বয়ে আনবে।

পিয়ন থেকে ১০০০ কোটি টাকার কোম্পানির মালিক!

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.