সৌন্দর্যবর্ধন ও সততার স্মারক রূপে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নির্মাণ করা হয়েছিল দৃষ্টিনন্দন ‘সততা ফোয়ারা’। প্রায় ২০ রঙের আলোয় ফোয়ারার প্রবাহিত পানির নান্দনিক রূপ বিমোহিত করত শিক্ষার্থীসহ দর্শনার্থীদের; কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ফোয়ারাটি তার জৌলুষ হারিয়েছে। অযত্ন আর অবহেলায় এখন কেবল নিষ্প্রাণ কাঠামো দাঁড়িয়ে আছে। নষ্ট যন্ত্রাংশ দেখে বোঝার উপায় নেই- শেষ কবে ফোয়ারাটি পানি ছিটিয়েছে।
জানা যায়, ২০১৮ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ ফোয়ারাটির উদ্বোধন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল এর নকশা করেন। ফোয়ারাটি নির্মাণে যৌথ অর্থায়ন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, এএনএইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাদ্দেস হানিফ টলিন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সরেজমিনে দেখা যায়, ফোয়ারাটিতে পানির প্রবাহকে আলোকসজ্জ্বিত করতে ওপর-নিচে মিলিয়ে ছোট-বড় বিভিন্ন রঙের ২০টি লাইট বসানো হয়েছে। বেশিরভাগ লাইটই এখন নষ্ট। ট্যাপসহ বেশকিছু যন্ত্রাংশ মরিচা পড়ে ভেঙে গেছে। হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে একটি নিষ্প্রাণ কাঠামো ছাড়া ফোয়ারাটিতে কখনো পানির প্রবাহ চোখে পড়েনি। ক্যাম্পাসের বড়ভাইদের মুখে এ ফোয়ারার সৌন্দর্যের বর্ণনা শুনলেও কখনো নিজের চোখে দেখার সুযোগ হয়নি।
এ বিষয়ে ইবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক পিয়াস বলেন, ক্যাম্পাসের নান্দনিক কয়েকটি স্থাপনার মধ্যে সততা ফোয়ারা অন্যতম। নানা রঙের আলোকসজ্জায় রঙিন পানির প্রবাহ দেখে যে কেউ মুগ্ধ হতেন; কিন্তু বর্তমান প্রশাসনের অবহেলায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটির করুণ দশা। করোনা পরবর্তী দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও প্রশাসন এটি সংস্কারে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এটা বর্তমান প্রশাসনের ব্যর্থতা।
ফোয়ারার সংস্কারের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মুন্সি সহিদ উদ্দিন মো. তারেক রাইজিং ক্যাম্পাসকে বলেন, করোনাকালে দীর্ঘদিন ফোয়ারাটি বন্ধ থাকায় এর দুটি মোটর, লাইটসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। করোনাপরবর্তী ক্যাম্পাসে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা সংস্কারের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছি। এর মধ্যে বেশিরভাগ স্থাপনার সংস্কার হয়েছে। তবে গত অর্থবছরে বাজেট সংকটের কারণে ফোয়ারাটি সংস্কার সম্ভব হয়নি। এবার আমরা প্রশাসনকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। প্রশাসন বাজেট পাস করলে দ্রুত এটি চালু করার চেষ্টা করব।