১৪ মাস বয়সে বাবাকে হারানোর পর শৈশব থেকে সংসারের ঘানি টেনে চলা শেখ তারেক জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তারেক এ বছর বাগেরহাটের চিতলমারী সরকারি শামসুন্নেছা মেমোরিয়াল মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
চিতলমারী উপজেলার সুরশাইল গ্রামের রুপালি বেগম ও শেখ রুহুল আমিন মুকুলের ছেলে তারেক। তার মা দর্জির কাজ করেন।
তারেকের জীবন-সংগ্রামের মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে মা রুপালি বেগম বলেন, ‘তারেকের বয়স যখন ১৪ মাস, তখন ওর বাবা মারা যায়। তারপর থেকে ওদের দুই ভাই-বোনকে নিয়ে নানা চড়াই-উতরাই পার করে এ পর্যন্ত এসেছি। মেয়ে তমা আক্তারকে এমএ পাস করিয়েছি। সে এখন বেকার। ঘরে বসে আছে। কোনও চাকরি পায়নি। তারেক যখন হাইস্কুলে পড়াশোনা শুরু করে তখন থেকেই লেখাপড়ার চাইতে সংসারের কাজ এবং রোজগারের জন্য ওকে সময় দিতে হতো বেশি। তারপরও পড়াশোনার হাল ছাড়েনি সে।
রুপালি বেগম বলেন, পরের জমিতে ট্রাক্টর চালিয়ে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে রাতে এক থেকে দুই ঘণ্টা বই পড়েছে। ওকে কোনোদিন প্রাইভেট পড়তে দিতে পারিনি। ওর এই সাফল্যে আমি ভীষণ গর্বিত ও আনন্দিত।
শেখ তারেক বলেন, ‘আমার এ সাফল্যের পেছনে মা এবং আমাদের গ্রামের সুজন তালুকদারের অবদান স্মরণীয়। জীবনে তাদের কথা ভুলবো না। আমি ভবিষ্যতে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।’