নাবিদ, কুবিঃ গুচ্ছভুক্ত ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তির মেধাতালিকা প্রকাশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভুলে এক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ভুলের দায় নিতে রাজি হচ্ছেন না কেউই।
কামরুন্নাহার মিতুর জানান, গত ৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘বি’ ইউনিটের প্রথম মেধাতালিকার আট পৃষ্ঠার পিডিএফ ফাইল নিজের নাম দেখতে না পেয়ে দ্বিতীয় মেধাতালিকার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি। দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশের পর সেটি ডাউনলোড করতে গিয়ে প্রথম মেধাতালিকায় নিজের নাম দেখে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কারণ, এরই মধ্যে প্রথম মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া প্রার্থীদের ভর্তির সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে এবং নতুন করে তারা আর ভর্তি হতে পারবেন না।
কামরুন্নাহার মিতুর দাবি, প্রথম মেধাতালিকায় নিজের নাম আসার বিষয়টি জেনে গত ১৭ নভেম্বর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আসেন তিনি। তবে প্রথম মেধাতালিকায় স্থানপ্রাপ্তদের ভর্তির সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় ভর্তি হতে পারেননি। এ বিষয়ে ইউনিট প্রধানের সঙ্গে কথা বলতে গেলে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন ভর্তিচ্ছু। এর আগে তার কথোপকথনও রেকর্ড করা হয়েছে বলে দাবি করেন ওই শিক্ষার্থী।
মিতুর অভিযোগ, অফিসের ভুল হয়নি দাবি করে রবিউল আউয়াল চৌধুরী বলেন, এই পিডিএফ তুমি কিভাবে ডাউনলোড করেছ? কোনো অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ডিন অফিসকে ফাঁসাচ্ছ কিনা?
জানা গেছে, প্রথম মেধাতালিকার ফাইলটিতে পঞ্চম পৃষ্ঠা বাদ দিয়ে বাড়তি একটি খালি পৃষ্ঠা যোগ করা হয়। পরবর্তীতে আগের ফাইলটি মুছে দেওয়া হয় এবং পঞ্চম পৃষ্ঠা যোগ করে খালি পৃষ্ঠাটি বাদ দিয়ে আট পৃষ্ঠার নতুন আরেকটি ফাইল প্রকাশ করা হয়। বাদ পড়া ওই পৃষ্ঠাটিতে মোট ৪২ জন ভর্তিচ্ছুর মেধাতালিকা রয়েছে। তবে প্রথম এবং দ্বিতীয় ফাইল প্রকাশের মাঝে কতক্ষণ সময় অতিবাহিত হয়েছিল সে বিষয়েও মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে।
আইসিটি সেলের ডাটাবেজ প্রোগ্রামার মাসুদুল হাসান জানান, তারা সন্ধ্যা ৬টায় মেধাতালিকাটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন। তবে সংশোধিত তালিকা প্রকাশের মাঝে কতক্ষণ সময় অতিবাহিত হয়ছিল সে বিষয়ে মন্তব্য করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি।
ভর্তি পরীক্ষা কমিটির ‘বি’ ইউনিটের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী বলেন, পিডিএফ ফাইলে অনিচ্ছাকৃতভাবে একটি পৃষ্ঠা বাদ পড়ে গিয়েছিল। তবে মেধাতালিকা প্রকাশের ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই আমরা এটি সংশোধন করে পুনরায় আপলোড করি।
তবে কামরুন্নাহার মিতুর দাবি, মেধাতালিকা প্রকাশের দিন রাত ৮ টায় তিনি পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করেন এবং নিজের নাম দেখতে না পেয়ে দ্বিতীয় মেধাতালিকার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন।
এ বিষয়ে রবিউল আউয়াল চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা মেধাতালিকা দেখবে জিএসটির নির্ধারিত সাইটে। তারা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ করবেন কেন? আপনি এটা কোথায় পেয়েছেন? এ বিষয়ে আইসিটি সেল ভালো বলতে পারবে।
ভর্তিচ্ছুর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ব্যবহারের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে বিষয়গুলোকে ভিত্তিহীন দাবি করে প্রতিবেদকের কল কেটে দেন এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম বলেন, আহ্বায়ক কমিটি মাসুদুল হাসানের কাছে একটি পৃষ্ঠা বাদ দিয়ে ফাইলটি পাঠিয়েছে। সে শুধু ফাইল আপলোড করেছে।
এ বিষয়ে কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
কর্তৃপক্ষের ভুল হলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পুনরায় ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, এ বিষয়ে আমি এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবো না। উপাচার্যদের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
উদ্ভাবনী মেলায় বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির প্রথম স্হান অর্জন