The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২৪শে অক্টোবর, ২০২৪

চাকরি না পেয়ে কৃষি কাজ করছেন পদার্থবিজ্ঞানে মাস্টার্স করা সুকান্ত

চাকরি না পেয়ে বর্তমানে কৃষি কাজ করছেন পদার্থবিজ্ঞানে মাস্টার্স করা সুকান্ত। কৃষিপ্রধান দেশ হিসাবে কোন ব্যক্তি পেশা হিসাবে কৃষিকে বেছে নিতেই পারে। এখাতে উন্নতি করার আছে সমূহ সম্ভাবনাও। তবে সুকান্ত এ পেশায় নিজের ইচ্ছায় এসেছেন নাকি বাধ্য হয়েছেন!

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার গোপালপুর গ্রামের কৃষক সুভাষ অধিকারীর ছেলে সুকান্ত অধিকারী। পদার্থবিজ্ঞানে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতকোত্তর শেষ করলেও চাকরি না পেয়ে ঘরে বেকার সময় কাটাচ্ছিলেন করোনা সংক্রমণের আগেই। কৃষক বাবার কাছে হাত পেতে ১০-২০ টাকা নিতে হতো তাকে। কিন্তু বাবা জমিতে গাধার মতো খাটছেন এটাও সহ্য হচ্ছিল না সুকান্তের।

তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় সুকান্ত অধিকারী। প্রায় তিন বছর আছে একদিন ভোরে বাবার সঙ্গে কাঁচি নিয়ে জমিতে কাজ করা শুরু করেন। আর এখন নিজের ও বর্গা জমি নিয়ে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছোট থেকেই পড়ালেখায় দুর্দান্ত সুকান্ত পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন। সুকান্ত গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতেও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান। এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিলেন। কালকিনির শশিকর মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসিতে এ প্লাস পান। গোপালগঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশি রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন ঋষি সুনাক

সুকান্ত অধিকারী বলেন, অনেক চেষ্টা করেছি চাকরি-বাকরির জন্য কিন্তু ভাগ্য সহায় হচ্ছিল হয়নি। এর মধ্যে করোনা এসে আঘাত হানায় চোখে মুখে অন্ধকার দেখতে শুরু করি। বাবার কাছ থেকে হাত খরচ নিয়ে চলতে অপমান বোধ হচ্ছিল। বাবর কষ্ট দেখে নিজের কাছেই খারাপ লাগছিল। তাই একদিন সকালে বাবার সঙ্গে জমিতে কাজ শুরু করি। এখন নিজের কিছু ও বর্গা নিয়ে জমি চাষ করছি। একটা চাকরি পেলে বেঁচে যেতাম। কিন্তু কে দেবে চাকরি?

শুকান্তের কাছে একদা প্রাইভেট পড়তো রিকো কবিরাজ নামে এক তরুণ। তিনি বলেন, সুকান্ত দা আমাদের এলাকার সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র ছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো চাকরি পেলেন না। এখন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জমিতে কঠোর পরিশ্রম করছেন।

সুকান্ত অধিকারীর শিক্ষক গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস চন্দ্র বাড়ই  বলেন, “সুকান্ত  আমার অত্যন্ত প্রিয় ছাত্র ছিল। সুকান্ত একটা মেধার  টুকরো। সে যে কেন এভাবে  পড়ে আছে সেটি আমার বোধগম্য নয়। তার জন্য  আমার ভীষণ কষ্ট হয়। তবে সুকান্ত  গোপালপুর গ্রামের অজ পাড়াগাঁয়ে পড়ে থাকার কারণে এমনটি হতে পারে। তার একটা চাকরি  হোক আমি সে প্রার্থনাই করি।”

গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লাল বাহাদুর বলেন, “সুকান্ত অত্যন্ত  মেধাবী ছাত্র ছিল। তার কাছে যারা প্রাইভেট  পড়েছে তারা অনেকে ভালো ভালো চাকরি পেয়েছে। তবে তার অবস্থা  কেন এমন হলো সেটা আমি বলতে পারবো না।”

আরো পড়ুনঃ ই-সিমে আগ্রহ বাড়ছে গ্রাহকদের

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.