রাবি প্রতিনিধি : এবারও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে
পোষ্য কোটায় ভর্তি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানরা। ২০২১-২২ শিক্ষা বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় বিশেষ কোটায় ৬২১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২১৬টি আসনে ভর্তি হবে পোষ্য কোটায়। যেহেতু পূর্ব থেকেই এই কোটা রাখার রীতি হয়ে আসছে তাই হঠাৎ করে বাদ দেওয়া যাবে না বলছে প্রশাসন। এতে হতাশা প্রকাশ করছে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীরা। এমনকি এটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত প্রতিবাদের ঝড় তুলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে , ন্যুনতম পাস নম্বর পেলেই সাধারণত তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায় কিন্তু তাদের থেকে অনেকে ভালো রেজাল্ট করেও সাবজেক্ট পায়না। পোষ্য কোটা রাখার পক্ষে কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
সিলেট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আসা ফারহান সুহেল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে চান্স পেয়েছি। কিন্তু যারা পোষ্য কোটায় ভর্তি হচ্ছে তারা পরীক্ষার আগেই সিট পাওয়ার সম্ভাবনা পেয়েই থাকে। এটা অবিচার করা হচ্ছে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাথে। দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা রাখার কোনো যৌক্তিকতা আমার চোখে পড়ে না। বরং একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর জন্য এটা একটা অভিশাপের মত। ভালো মার্ক পেয়েও একজন মেধাবী শিক্ষার্থী সাবজেক্ট পায়না। সেখানে আরেকজন তার বাবা-মায়ের জন্য সিট পেয়ে যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বকুল হোসেন বলেন, দেশের সিংহভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য কোটার মারপ্যাঁচে ‘পোষ্য কোটা’ দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। ঠিক কোন যুক্তিতে, কোন আইনের বলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চাকরিরত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের এই ‘অনৈতিক’ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তার কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যা নেই। বরং পোষ্য কোটায় আসা এই সব ছেলেমেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাস করে সেখানেই শিক্ষক হচ্ছেন, কর্মকর্তাও হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় একটি গবেষণার জায়গা হলেও যারা পোষ্য কোটায় ভর্তি হয় তারা ঠিকমতো পাশই করতে পারে না। তারা গবেষণা করবে কেমনে।
গুচ্ছ ছয় বিশ্ববিদ্যালয়েই পোষ্য কোটা নেই : কৃষি গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন (১১১৬টি) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নেই ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম. তারেক নূর বলেন, কোটা বিষয়টা আগে থেকেই চলে এসেছে। হঠাৎ করে এটা বাদ দেওয়া যায় না। এখনো অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আছে। কোটামুক্ত কোনো শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করে আমরা কোটায় ভর্তি করায় না। কোটা বাদ দেওয়ার বিষয়ে পরীক্ষা উপকমিটির এখনো পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ভবিষ্যতে কোটায় সিট কমানোর কোনো সিদ্ধান্ত আসতেও পারে।