The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

রোগ প্রতিরোধে শিশুর খাবারে চাই ‘ভিটামিন এ’

শিশুর জীবনে এক থেকে পাঁচ বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় থেকেই শিশুর খাবার গ্রহণ ও বর্জনের বিষয়টি রপ্ত হয়ে যায়। শিশুর প্রতিদিনের খাবারে ভিটানি এ থাকাটা অপরিহার্য। এই ভিটামিন সাধারণত প্রাণী দেহে পাওয়া যায় আর পাওয়া যায় ক্যারোটিন হিসাবে শাক-সবজিতে। বিশেষ করে হলুদ-কমলা সবজি ও ফলের ভেতর ভিটামিন এ আছে। দেহের ক্ষুদ্রান্তে ভিটামিন এ শোষিত হয় চর্বির সঙ্গেই। যেসব রোগে দেহে চর্বি শোষণে বিঘ্ন ঘটে, এতে ভিটামিন এ শোষণ ও বাধাগ্রস্ত হয় এবং শরীরে এর অভাব দেখা যায়। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, নবজাতকের যকৃতে কতখানি এ ভিটামিন সঞ্চিত থাকবে তা নির্ভর করে মায়ের রক্তে কতখানি ভিটামিন এ ছিল তার ওপর।

দেখা যায়, গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ দেওয়ার সময় মায়ের খাদ্যের গুণাগুণ শিশুর বৃদ্ধির হারের ওপর নির্ভরশীল। এ জন্য মা ও শিশুর খাদ্যে রঙিন ফল ও শাক-সবজি এবং দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, ডাল, বাদাম সবই যেন থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

শিশুর দৈনিক ‘ভিটানি এ’র চাহিদা ২৫০০ আইইউ। আমাদের দেশে প্রতি বছরই শিশুদের বিনামূল্যে ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছে। এটা নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। রান্নায় ‘ভিটামিন এ’ নষ্ট হয় না। তবে ফ্রিজে জমিয়ে রাখা মাখনে কিছুটা খাদ্যগুণ নষ্ট হয়। যেসব গরুকে টাটকা সবুজ খাস খাওয়ানো হয় না সেসব গরুর দুধে ‘ভিটামিন এ’র ঘাটতি দেখা যায়। দেহের ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ছাড়াও ‘ভিটামিন এ’র অভাবে তিন ধরনের চক্ষুরোগ হয়ে থাকে। যেমন-রাতকানা, চক্ষু শুষ্কতা ও ক্যারাটোম্যালেসিয়া।

* রাতখানা : এই রোগে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে শিশুরা চোখে কিছুই দেখে না। এটা বোঝা যায় যেখানে রাতের বেলা কোনো আলোর ব্যবস্থা না থাকলে। নিয়মিত কলিজা খাওয়ালে এই অবস্থা দূর হতে পারে। তবে সময় মতো এ অসুখটি নির্ণয় না হলে পর্যাপ্ত ভিটামিন দিয়েও কোনো কাজ হয় না।

* চক্ষু শুষ্কতা : এতে চোখের মণিতে ঘা, চোখে পুঁজ, সজীবতাহীন চোখ এবং চোখের আবরক কণা শুকিয়ে যায়। চোখের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয় এবং চোখের মণি সাদা হয়ে যায়। প্রচুর ভিটামিন এ প্রয়োগে সুফল পাওয়া যায়। গুরুত্ব অনুসারে ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুলের সঙ্গে কডলিভার অয়েল, ঘি, মাখন, গাজর ইত্যাদি দিলে ভালো হয়।

* ক্যারাটোম্যালেসিয়া : দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সের শিশুদের এ রোগ দেখা যায়। এতে চোখের ভেজা ও সজীব ভাব চলে গিয়ে চোখ শুকনো ও বিবর্ণ হয়ে যায়। চোখ ঘোলা দেখায়। এ অবস্থা চলতে থাকলে চোখের মণি অস্বচ্ছ পর্দায় ভরে উটে, শেষ পর্যন্ত দৃষ্টিহীনতা ঘটে।

চোখের রোগ ছাড়াও ‘ভিটামিন এ’র অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে সর্দি-কাশি, ফ্লু লেগেই থাকে। এছাড়া দেহের ত্বক শুকনো ও খসখসে হয়ে যায়। চুল বিবর্ণ হয়ে পড়ে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়।

* ‘ভিটামিন এ’র উৎস : গাজর, ভুট্টা, আপেল, পাকা আম, পাকা পেঁপে, লাল আঙুর, ক্যাপসিকাম, রাঙা আলু, মিষ্টি কুমড়া, লেটুস পাতা, সবুজ শাক-সবজি, টমেটো, সজনেপাতা ইত্যাদি। মাছের মধ্যে মলা ও ঢেলা মাছে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ আছে। এছাড়া মাখন, ডিম, কলিজা, কডলিভার অয়েল, ঘি, দুধ, গরু-খাসির মাংসে ভিটামিন এ রয়েছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.