দুইপক্ষের রেষারেষি ও মারামারির ঘটনায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ১৬ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
গতকাল রোববার রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ১৬ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপরই বহিষ্কৃতরা প্রশ্ন তোলেন, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে কীভাবে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়?
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, আগের ঘটনা এবং গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারা তদন্ত কমিটি মানতে চায় না। তাই, আমরা নিজেরা ভিডিও ফুটেজ দেখে যাদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি তাদের আপাতত বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ছাড়া পুরো ঘটনার মধ্যে যারা জড়িত আছে, ইতোমধ্যে কলেজ প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারা তাদের মতো করে জানাবে। তাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে বলে জানান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
লেখক আরও বলেন, তারা সংবাদ মাধ্যমে যে ধরনের অভিযোগ করেছে, তার একটি প্রমাণও দেখাতে পারেনি। গতকাল রাতে যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে সেখানে কলেজের শিক্ষকদের সামনে ঘটনা ঘটেছে। তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। যেগুলো আমরা সরাসরি পাই, যেটাতে শিওর হতে পারি সেটাতে আর তদন্ত করার দরকার নেই। বহিষ্কারের ক্ষেত্রে সেন্ট্রালের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি সরাসরি যুক্ত হয়েছে, আমরা বহিষ্কার করেছি।
সংগঠনের বিভিন্ন ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিভিন্ন সময় নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হয়েছে ছাত্রলীগ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রথমে শোকজ করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিক তদন্ত শেষে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
পরবর্তীতে অনেকের সাময়িক বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে ঘটনা বড় হলে অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে স্থায়ী বহিষ্কার করার নজির রয়েছে। কিন্তু ইডেন কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।
এখানে প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে ১৬ নেত্রীকে, যারা বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পেছনে দাঁড়িয়ে সভা-সমাবেশে স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বহিষ্কার হওয়া নেত্রীরা প্রশ্ন তুলেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে সমালোচনা।
বহিষ্কারের এ ঘটনায় স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের একাংশ। তাদের অভিযোগ, যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে তারা কেউই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছের অনুসারী নন। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নিজেদের আক্রোশ থেকে তাদের বহিষ্কার করেছেন—দাবি তাদের।
এ বিষয়ে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুস্মিতা বাড়ৈই বলেন, ভিডিও ফুটেজে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিতু আক্তার, তানজিনা, জ্যোতি আসছে, কিন্তু তাদের কেন বহিষ্কার করা হলো না। আমাদের কেন বহিষ্কার করা হলো?
সুস্মিতা বাড়ৈই আরও বলেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক আমাদের পছন্দ করেন না। যার কারণে তারা আমাদের বহিষ্কার করেছেন। পুরো ভিডিওতে রুপা দত্ত ছিলেন। কিন্তু ঢাকা কলেজের জয়েন কনভেনার বাপ্পি হালদারের সঙ্গে যোগাযোগ করার কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। কিছু সংখ্যক করা হয়েছে কিছু সংখ্যককে করা হয়নি। আমরা ২৫ জন স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু ১৪ জনকে কেন বহিষ্কার করা হলো?