বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারারদের বিদেশ যাওয়ার পূর্বে ইউজিসির অনুমোদন নিতে হবে।
সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি কার্যালয় স্মারক প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এতে জানানো হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারারদের বিদেশ যাওয়ার পূর্বে ইউজিসির অনুমোদন নিতে হবে।
ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে বিদেশ থেকে ফিরে কাজে যোগ দিয়ে তা লিখিত ভাবে ইউজিসিকে জানাতে হবে। ইতোমধ্যে স্মারকটি সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে পাঠানো হয়েছে।
দেশের পাবলিক ও বেসরকারি—সব বিশ্ববিদ্যালয়েরই উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার নিয়োগ দেন আচার্য বা রাষ্ট্রপতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে আচার্যের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে কারণে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার নিয়োগের আদেশ মন্ত্রণালয়টির মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা হয়।
আচার্য বা রাষ্ট্রপতি সকল বিশ্ববিদ্যালয়েরই উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার নিয়োগ দেন। আচার্যের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারাররা বিদেশ যাওয়ার পূর্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি অফিস আদেশ (জিও) নেন। তবে বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোনো নির্দেশনা নেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারারদের।
ইউজিসির এমন নতুন নির্দেশনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে কথা বলেছেন বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ট্রেজারার । তবে তাদের কেউই নাম উল্লেখ্য করতে রাজি হননি। তারা জানিয়েছেন, বিদেশ গমনে অনুমোদন প্রসঙ্গে আচার্য কতৃক এই নির্দেশনা আসা উচিত। একজন উপাচার্যের মন্তব্য ছিল এমন, ইউজিসি প্রদত্ত নির্দেশনা আমাদের জন্য অসম্মানজনক। কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সব প্রতিষ্ঠানকেই আমরা সম্মান করি। তবে ইউজিসি আচার্যের কার্যালয়ে সুপারিশ পাঠাতে পারত। পরবর্তীতে আচার্য চাইলে এমন নির্দেশনা জারি করতেন।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দেশের কিছু কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বিদেশে অবস্থানরত ও সেখানে পূর্ণকালীন চাকরি করছেন এমন ব্যক্তিকে নামেমাত্র নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যারা অল্প সময়ের জন্য দেশে এসে মন্ত্রণালয় এবং কমিশনে দেখাসাক্ষাৎ করে অথবা সমাবর্তনে যোগ দিয়ে আবার বিদেশে ফিরে যান। এমন বিভিন্ন ঘটনা সামনে আসায় উক্ত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিতে আইনে দেয়া ক্ষমতাবলেই এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ। গণমাধ্যমকে তিনি জানান, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশে অবস্থানরত ও সেখানে পূর্ণকালীন চাকরিরত ব্যক্তিকে এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। কেউ কেউ সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিকও। তাই কমিশন এসব বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এমন নির্দেশনা দিয়েছে। আইন অনুযায়ী উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এমন নির্দেশনার এখতিয়ার কমিশনের রয়েছে।