গরমে বাড়ছে নানাবিধ সমস্যা ও রোগব্যধি। বিশেষ করে ডাস্ট এলার্জি, হিট স্ট্রোক, সর্দি কাশি, জ্বর, ডি হাইড্রেশন, ইলেকট্রলাইট ইমব্যালেন্স, ক্লান্তি ভাব, বদ হজম, পেট ফাপা, ডায়ারিয়া, আমাশয় ইত্যাদি। তাই বাড়তি সতর্কতা নিয়ে আসতে হবে যেমন পোশাক আশাকে ঠিক তেমনি খাদ্য ব্যাবস্থাপনায়।
গরমে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে কি খাবেন আর কি খাবেন না তা নিয়ে সকলে চিন্তায় ভোগেন। জেনে নিন কি কি খেলে উপকার পাবেন সেরকম কিছু খাবার যা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে এবং সহজপাচ্য যা শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
আমাদের পরিষ্কার ধারণা, থাকতে হবে কোন খাবারগুলো গরমে খাদ্য তালিকা হতে কমিয়ে দিতে হবে অথবা একেবারে বাদ দিতে হবে। মানুষের খাদ্যের সাথে সর্ম্পকিত দীর্ঘ মেয়াদি যে রোগ গুলো রয়েছে তার মধ্যে হার্টে সমস্য, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওজন আধিক্য রয়েছে এসব রোগ হতে নিজেদেরকে এই গরমে সুস্থ্য রাখতে নিম্নোক্ত খাবার গুলো প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সংযুক্ত করতে হবে।
কী খাবেন?
১। বিশুদ্ধ পানি : প্রতিদিন একজন সুস্থ্য স্বাভাবিক মানুষের ২.৫ লিটার হতে ৩ লিটার বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। সে সাথে ঘরের তৈরি বিভিন্ন ফলের জুস (চিনি ছাড়া) ডাবের পানি বেলের শরবত, লেবুর শরবত পান করতে হবে। তবে কিডনি রোগী এবং ফ্লইড রিটেনশন সিনড্রমে যারা ভুগছেন তারা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে পরিমান মত পানি করবেন।
২। চিড়া দই কলা: সাড়া দিনে অন্তত এক বেলা বিশেষ করে সকালে নাস্তার তালিকায় চিড়া দই কলা যেমন শরীরকে ঠান্ডা রাখবে তেমনি শরীরে পুষ্টির চহিদা পুরন করবে বিষেশ করে যারা আই বি এস (ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রম) এ ভুগছেন তাদের জন্য এটি খুবই সাস্থ্যকর খাবার হতে পারে।
৩। সবুজ আপেল: গরমে শরীর সুস্থ রাখতে এ ফল বেশ উপকারী। ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় খুব সহজে হজম হয় যা অন্ত্রের স্বাস্থের জন্য বেশ উপকারী খেতে সবুজ আপেলের জুস বা স্মুদি।
৪। পাকা কলা: গরমে পাকা কলা খাওয়া বেশ উপকারী। কলা রক্তে শরকরা পরিমান নিয়ন্ত্রন করে ও শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রয়ন করে শরীরকে ঠান্ডা রাখে।
৫। আদা: আদা জল বরাবরের মত সবসময়ে উপকারী। গরম জনীত সর্দী কাশিতে আদার চা উপকারী এতে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা গরম জনীত এলার্জী সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৬। পাকা পেঁপে ও ভাঙ্গি: এই দুটো ফল হতে পারে গরমে সস্তিদায়ক ফল কারন এতে রয়েছে এন্টিমাইক্রবিয়াল প্রোপার্টি যা কোস্টকাঠিণ্য, অম্বল, বদ হজম, পেঠ ফাপা দূর করে। সকালে নাস্তার পর অথবা বিকেলের নাস্তার এক বাটি পাকা পেপে ও ভাঙ্গি শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
৭। বিট : গরমে হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এই সবজি এতে রয়েছে এন্টিইনফ্লামেটরি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিস্ট্য যা অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই বিটের সরবত বানিয়ে খান অথবা তরকারীর ঝোল
করেও খেতে পারেন।
৮। মিস্টি আলু ও অ্যাভোকাডো : যাদের পেট ফাপা বা প্রদাহো সমস্যা রয়েছে তারা এই দুটো ফল খেতে পারেন। মিস্টি আলু সেদ্ধ বা গ্রিল করে খাওয়া যেতে পারে সেই সাথে খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন অ্যাভোকাডোর সালাদ
৯। শসা পুদিনা গাজরের সালাদ: যা শরীরে পানির চাহিদা পূরন করে ডি হাইড্রেশন দূর করে শরীরকে ঠান্ডা রাখে।
কী খাবেন না ?
• চা কফি শরীরে পানি শুন্যতা তৈরি করে তাই যতটা সম্ভব চিনি দিয়ে দুধ চা বা দুধ কফি এই গরমে এরিয়ে যেতে হবে।
• অতিরিক্ত চিনি যুক্ত শরবত বা স্মুদি বা রং বেরং এর পানীয় খাওয়া যাবে না।
• বরফ মেসানো অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি সরাসরী না খেয়ে রুম টেম্পারেচারে এনে পান করতে হবে।
• অতিরিক্ত ভাজা পোড়া, বাহিরের পুরি, সিঙ্গারা, সমুচা, তেলে ভাজা খাবার, অতিরিক্ত তেল মসলা যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
• মাংস জাতীয় খাবার বিশেষ করে গরু খাসির মাংস বাদ দিয়ে খাদ্য তালিকায় নিয়ে আসতে হবে কম তেল মসল্লা দিয়ে রান্না করা মাছ এবং সবজির ঝোল তরকারী।
বাড়তি সতর্কতা
যেহেতু আমরা প্রতিনিয়ত কাজের সুবাধে বাসার বাহিরে বের হতে হয় সেহেতু বাড়তি সতর্কতা হিসেবে ব্যাগে ছাতা এবং পানি নিতে হবে।
হাঁটার সময় খুব সকাল অথবা ঠিক বিকেলে নির্ধারন করতে হবে। অতিরিক্ত রোদের তাপে হাঁটা এড়িয়ে চলুন।
বাহিরে এ সময় খোলা সরবত, আখেঁর রস, মাঠা ও লাচ্ছি বেশি পাওয়া যায়। তাই এগুলো অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।
সর্বশেষ আরামদায়ক হালকা রঙের পোশাক বেছে নিন, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন এবং সুস্থ থাকুন।