বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষার ফি আনুপাতিক হারে কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে এলে এখন থেকে ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত অর্থের ৪০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) কেন্দ্রীয় তহবিলে জমা রাখতে হবে না। শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমাতে নতুন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউজিসি। সম্প্রতি উপাচার্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভা সূত্রে জানা গেছে, ভর্তি পরীক্ষার ফি আনুপাতিক হারে কমিয়ে যৌক্তিকভাবে নির্ধারণের শর্তে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা থেকে কমিশনের আগের নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় হিসেবে বাজেটে ৪০ শতাংশ অর্থ অন্তর্ভুক্ত করার শর্তটি রহিত করা হলো।
তবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এ সভা অনুষ্ঠানের আগে ভর্তি-সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে এবং ফি নির্ধারণ করেছে তাদের ক্ষেত্রে আগের নির্দেশনা অনুযায়ী ৪০ শতাংশ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় হিসেবে বাজেটে জমা দেয়ার বিষয়টি বহাল থাকবে।
আগের নিয়ম অনুযায়ী, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত অর্থের ৪০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) কেন্দ্রীয় তহবিলে জমা রাখতে হতো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা থেকে পাওয়ার অর্থগুলো নিজস্ব আয় হিসেবে দেখিয়ে প্রতি অর্থবছরের বাজেট দিয়েছে ইউজিসি।
ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফি জোগাতে হিমশিম খেতে হয় অনেক শিক্ষার্থী ও তার পরিবারকে। তাই শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমাতে আমরা নতুন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরপরও দেখছি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ফি বাড়াচ্ছে, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
কমিশনের পক্ষ থেকে ভর্তি পরীক্ষার ফি কমানোর কথা বলা হলেও উল্টো ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি ছিল ৬৫০ টাকা। আসন্ন ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির আবেদন ফি এক লাফে বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি ছিল ৩৫০ টাকা। ১০০ টাকা বাড়িয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ফি ৪৫০ টাকা করা হয়। অর্থাৎ পরপর তিন শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফি ৬৫০ টাকা বাড়ল।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, যৌক্তিক কারণেই ফি বাড়ানো হয়েছে। গত শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা ব্যবস্থাপনায় অর্থ ঘাটতিতে পড়তে হয়েছিল কর্তৃপক্ষকে। তাই যৌক্তিক উপায়েই ফি বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজনীয়তার নিরিখে আরো বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে তা করা হয়নি।