সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার কেন্দ্র ও সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে পরীক্ষা আরও পিছিয়ে যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বিশেষ করে ঢাকায় না জেলায় জেলায় পরীক্ষা হবে, তা নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, এর আগে দুটি চিঠিতে কেন্দ্র বাছাই প্রক্রিয়া ও পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হলেও চাপ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহল ও দলীয়ভাবে। ফলে ঢাকার পরিবর্তে জেলা পর্যায়ে পরীক্ষা নেওয়া এবং সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়েছে। ফলে সোমবার (২১ মার্চ) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের দফতরে সভা করা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে জেলায় জেলায় পরীক্ষা নেওয়ার বিরোধীতা করছেন চাকরিপ্রার্থীদের বড় একটি অংশ। তারা মনে করছেন, জেলায় পরীক্ষা হলে নিয়োগে দুর্নীতি হবে। এ কারণে ঢাকায় পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহে মধ্যে ফের সভা করে জটিলতা সমাধানের উদ্যোগ নেবে মন্ত্রণালয়। নিয়োগ কমিটির সদস্যদের কয়েক দফায় সভাও হয়েছে। ওই কমিটির মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুব রহমান তুহিন বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বৈঠক ছিল। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রতিমন্ত্রী পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট স্টক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। সবার সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন।’
এর আগে দুই দফায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ও কেন্দ্র নিয়ে চিঠি দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। প্রথমটিতে বলা হয়, আগামী ১ এপ্রিল থেকে রাজধানী ঢাকায় পাঁচ ধাপে পরীক্ষা হবে। পরে আরেক চিঠিতে বলা হয়, ৮ এপ্রিল থেকে চার ধাপে পরীক্ষা হবে।
জানা গেছে, সামনে রমজান মাস এবং আরো কিছু জটিলতার কারণে পরীক্ষার তারিখ আরো পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে। তবে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর সব কিছু নির্ভর করছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, এটি বড় পরিসরে নিয়োগ পরীক্ষা, কেন্দ্র বাছাই প্রক্রিয়া চলছে। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ জানানো হবে।.
অধিদফতরের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত মহাপরিচালক দফতর) মো. মোস্তফা ফারুক খান গণমাধ্যমকে জানান, শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। আগের চিঠি দুটি কেন্দ্র বাছাই প্রক্রিয়ার অংশ। যেসব প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচন করা হয়েছে, সেগুলোয় কতজনের পরীক্ষা নেয়া যাবে, তা ই-মেইলে জানানোর জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ তথ্য পাওয়ার পর টেলিটকের মাধ্যমে কেন্দ্র ও তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে করোনা মহামারীর কারণে এখনো পরীক্ষা হয়নি। পরে শূন্য পদ বাড়িয়ে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।